সন্ত্রাসের অভিযোগ নিয়ে উলটপুরাণ দেখল কলকাতা! ৭২ ঘণ্টা আগে তিনটি পুর-নিগম, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এবং কয়েকটি পঞ্চায়েত আসনের ভোটের দিন বিধাননগর এলাকায় ব্যাপক ভোট-জালিয়াতি, মানুষকে সন্ত্রস্ত করে ভোটদানে বাধা এবং ১৯ জন সাংবাদিককে নিগ্রহে অভিযুক্ত হয়েছে শাসক তৃণমূল। তৃণমূলের তিন বিধায়ক সুজিত বসু, অর্জুন সিংহ ও পরেশ পালের নাম জড়িয়েছে সন্ত্রাস-নিগ্রহে। কয়েক জন পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে। এই সব অভিযোগের সপক্ষে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের ভিডিও ক্যামেরার ফুটেজও পাওয়া যাচ্ছে। ৭২ ঘণ্টা পরে মঙ্গলবার সেই তৃণমূলই বিরোধীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে মিছিল করল কলকাতার রাজপথে! যা দেখে তাজ্জব বনে গিয়েছেন শহরের আম নাগরিক থেকে শুরু করে বিরোধী দলগুলির নেতারা! সকলের মুখে একটাই কথা— ‘‘চোরের মায়ের বড় গলা!’’
শনিবার ভোট শেষ হওয়া মাত্র তা বাতিল করে নতুন করে ভোটগ্রহণের দাবিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে অবস্থান করে বামফ্রন্ট এবং বিজেপি। কংগ্রেসও একই দাবিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে। পর দিন রবিবার ওই তিন বিরোধী পক্ষকেই ডেকে কমিশনার জানান, নির্ধারিত দিনে অর্থাৎ বুধবার ভোট গণনা হবে না। অনির্দিষ্ট কালের জন্য গণনা স্থগিত রেখে ভোট সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগের তদন্ত করা হবে। কমিশনারের এই সিদ্ধান্তকে বিরোধীরা সাধুবাদ জানালেও প্রত্যাশিত ভাবেই তাঁর উপর খড়্গহস্ত হয় তৃণমূল। বুধবারেই গণনার দাবিতে সোমবার কমিশনের দফতরের সামনে অবস্থানে বসেন শাসক দলের মন্ত্রী, কাউন্সিলর, বিধায়ক এবং অন্যান্য নেতারা। চাপে পড়ে কমিশনার জানান, শুক্রবার ভোট গণনা করা হবে। তাতেও তৃণমূল নিরস্ত হয়নি। এ দিন তারা কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা মিছিল করে। যার সামনের সারিতে ছিলেন ফিরহাদ (ববি) হাকিম, শোভন চট্টোপাধ্যায়, অর্জুন প্রমুখ। ধর্মতলায় মিছিল শেষ হলে ডোরিনা ক্রসিংয়ের একটি লেন বন্ধ করে সভা করে শাসক দল। সেখান থেকে বিরোধী এবং সংবাদমাধ্যমকে তোপ দাগা হয়।