রোগীর মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর চালানোর ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, তালতলা থানা এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ সাদাব আনসারি (৩৫) সোমবার সকালে কোমরে ব্যথা নিয়ে মধ্য কলকাতার লেনিন সরণির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর পরিবারের দাবি, তখন সাদাব হেঁটেই হাসপাতালে ঢুকেছিলেন। অথচ, সে দিনই গভীর রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার প্রবল অবনতি ঘটে। মঙ্গলবার সকালে সাদাব মারা যান। এর পরেই মৃতের পরিবার হাসপাতালে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। হাসপাতালের কর্মীদের মারধর করা হয়। গন্ডগোল থামাতে গিয়ে এক পুলিশকর্মী জখম হন। পরিস্থিতি সামলাতে একাধিক থানা থেকে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
মৃতের বোন নুসরত বলেন, ‘‘দাদা সোমবার ট্রেনে রাঁচী থেকে ফেরেন। কোমরে ব্যথার পাশাপাশি কয়েক দিন ধরে প্রস্রাব হচ্ছিল না ওঁর। সোমবার সকালে ট্রেন থেকে নেমে সোজা তালতলার জি ডি হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন।’’ মৃতের আত্মীয় শরিক আনসারির অভিযোগ, ‘‘সোমবার সকালে দিব্যি হেঁটেই হাসপাতালে ঢুকেছিলেন সাদাব। অথচ, সে দিনই গভীর রাতে আমাদের ফোনে জানানো হয়, রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক। তাঁকে আইসিইউ-তে পাঠাতে তখনই দশ হাজার টাকা লাগবে। আমরা তখন সবে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরেছি। ওদের বলেছিলাম, আগে রোগীর চিকিৎসা ঠিকঠাক করুন। টাকা নিশ্চয়ই মিটিয়ে দেব। কিন্তু তা সত্ত্বেও হাসপাতালের তরফে অত রাতে টাকা দিতে আমাদের চাপ দেওয়া হয়।’’
এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ সাদাব মারা গেলে পরিবারের লোকেরা হাসপাতালে চড়াও হন বলে অভিযোগ। কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রথমে প্রবেশপথের দরজার কাচ ভাঙচুর করা হয়। চেয়ার-টেবিল ফেলে দেওয়া হয়। বিশাল পুলিশবাহিনী পৌঁছলে তাদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন রোগীর পরিজনেরা। তাঁদের দাবি, হাসপাতালের গাফিলতির জেরেই সাদাব মারা গিয়েছেন। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। মৃতের পরিজনদের অভিযোগ প্রসঙ্গে জি ডি হাসপাতালের চিফ জেনারেল ম্যানেজার জাভেদ আহমেদ খান বলেন, ‘‘ওই রোগীর মৃত্যু কী ভাবে হল, সে বিষয়ে আমরা তদন্ত করে দেখব।’’ ওই হাসপাতালটি মুচিপাড়া থানার অন্তর্গত। মুচিপাড়া থানা এই ঘটনায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত হাসপাতালের তরফে লিখিত অভিযোগ পায়নি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)