Advertisement
E-Paper

সাফাই ৩ ঘাটে, বাকিতে জঞ্জাল

বাবুঘাটের বাজেকদমতলা ঘাট, জাজেস ঘাট ও নিমতলা ঘাটে শনিবার প্রতিমা বিসর্জনের সঙ্গে সঙ্গেই কাঠামো ও জঞ্জাল তুলে নেওয়া হয়েছে। রবিবার ঘাটগুলিতে দেখা গেল, তিন জায়গাই পরিষ্কার।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০০:১৯
দূষিত: বিসর্জন শেষে ভাসছে কাঠামো। রবিবার দুপুরে, বাগবাজার ঘাটে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

দূষিত: বিসর্জন শেষে ভাসছে কাঠামো। রবিবার দুপুরে, বাগবাজার ঘাটে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

বাবুঘাট, নিমতলা ঘাট বা জাজেস ঘাটে ছবিটা এক। কিন্তু, শহরের অন্যান্য ঘাটে ছবিটা ভিন্ন।

বাবুঘাটের বাজেকদমতলা ঘাট, জাজেস ঘাট ও নিমতলা ঘাটে শনিবার প্রতিমা বিসর্জনের সঙ্গে সঙ্গেই কাঠামো ও জঞ্জাল তুলে নেওয়া হয়েছে। রবিবার ঘাটগুলিতে দেখা গেল, তিন জায়গাই পরিষ্কার। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই ওই সমস্ত ঘাটে বিসর্জন পর্ব সারা হয়েছে। প্রতিমা বিসর্জনের আগে পুজোর উপকরণ (ফুল, বেলপাতা থেকে শুরু করে অন্যান্য সামগ্রী) ঘাটের পাড়ে এক পাশে ফেলার পরে তা সরিয়েও ফেলা হয়েছে।

রবিবার, একাদশীর দিন কলকাতার কিছু ঘাটে কয়েকটি বাড়ির প্রতিমার বিসর্জন হয়। সকাল থেকেই বাজেকদমতলা ঘাট, জাজেস ঘাট ও নিমতলা ঘাটে ছিলেন পুলিশ ও পুরসভার কর্মীরা। ওই ঘাটগুলি বাদ দিয়ে অন্যান্য ঘাটের ছবিটা কিন্তু একেবারেই আলাদা।

লালবাজার সূত্রে খবর, দশমীতে কলকাতার ১৬টি ঘাটে ২১২০টি প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। রবিবার দুপুরে বাগবাজার, কুমোরটুলি, কাশী মিত্র বা আহিরীটোলা ঘাটে দেখা গেল, শনিবার রাতে বিসর্জনের পরেও কাঠামো ডাঁই হয়ে পড়ে আছে। এমনকী, বাগবাজার ঘাটে গঙ্গার পাড়ে ফেলা হয়েছে প্রতিমার সঙ্গে ব্যবহৃত পুজোর উপকরণ। নিমতলা বা বাজেকদমতলা ঘাট পরিচ্ছন্ন থাকলেও গঙ্গা বেয়ে স্রোতে বয়ে যাচ্ছে একের পর এক প্রতিমার কাঠামো।

একাদশীর দুপুরে সুনসান বাবুঘাটে ডিউটি করছিলেন কলকাতা পুরসভার জঞ্জাল বিভাগের এক আধিকারিক। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘গঙ্গা মানে শুধু বাবুঘাট নয়। শহর ও শহরতলির ঘাটগুলিতে বিসর্জন পর্ব কি নিয়ম মেনে হচ্ছে?’’ প্রশাসনের একাংশেরও স্বীকারোক্তি, শহরতলির নানা ঘাটে বিসর্জনের পরে সাফাই নাম-কা-ওয়াস্তেই হয়ে থাকে। তার ফলে গঙ্গায় দূষণও বাড়তে থাকে।

গঙ্গার দূষণ ঠেকাতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, বিসর্জনের পরেই কাঠামো দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে এবং পুজোয় ব্যবহৃত ফুলমালা থেকে শুরু করে নানা উপকরণ গঙ্গায় না ফেলে পাড়ে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রাখতে হবে। ঘাট নিয়মিত পরিষ্কার করতেও বলেছিল হাইকোর্ট। বাজেকদমতলা ও নিমতলা ঘাটে বড় বড় কাঠামো সরাতে রাখা হয় ক্রেন। ময়লা তুলতে রাখা হয় পে-লোডার। গঙ্গার পাড়ে জমে থাকা পুজোর ফুলমালা অন্যত্র সরাতে কলকাতা পুরসভার জঞ্জাল বিভাগের গাড়িও কাজ করেছে। এমনকী, চলতি বছরে নিমতলা ও বাজেকদমতলা ঘাটে একটি করে অতিরিক্ত ক্রেন ও পে-লোডারও রাখা হয়েছে।

কিন্তু পরিবেশকর্মীদের প্রশ্ন, এই ব্যবস্থা রাজ্যের ক’টি ঘাটে থাকে? শুধু কলকাতার দু’-তিনটি ঘাটে নজরদারি চালিয়ে গঙ্গার দূষণ ঠেকানো যে অসম্ভব, তা মেনে নিচ্ছেন পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতার প্রায় ১৯টি ঘাটে বিসর্জন হয়। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকটি ঘাটে নজরদারি চালিয়ে গঙ্গার দূষণ ঠেকানো সম্ভব নয়।’’

পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের অভিযোগ, ‘‘প্রতিমা বিসর্জনের সময়ে গঙ্গাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে রাজ্যের ৪৪টি পুরসভা ও কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছিল আদালত। অথচ, বারো বছর পরে মাত্র তিনটি ঘাট (বাজেকদমতলা ঘাট, জাজেস ঘাট ও নিমতলা ঘাট) ছাড়া বিসর্জন-বিধি কোথাও মানা হচ্ছে না।’’

কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘বাগবাজার, কুমোরটুলি-সহ অন্য ঘাট থেকেও অবিলম্বে কাঠামো তুলে ফেলা হবে। কারণ, সোমবারই ফের ভাসান শুরু হবে।’’

Idol structures Durga Puja Immersion Ganga Water pollution
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy