Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কেন নাক গলাচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী? উঠছে প্রশ্ন

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী কেন নাক গলাচ্ছেন, এ বার সেই প্রশ্নই উঠতে শুরু করে দিল। বুধবারের ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী শুধুমাত্র উপাচার্যের কাছেই রিপোর্ট চেয়ে পাঠাননি, দফায় দফায় বৈঠক করেছেন বিভিন্ন মহলের সঙ্গে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৫ ১৫:০৬
Share: Save:

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী কেন নাক গলাচ্ছেন, এ বার সেই প্রশ্নই উঠতে শুরু করে দিল। বুধবারের ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী শুধুমাত্র উপাচার্যের কাছেই রিপোর্ট চেয়ে পাঠাননি, দফায় দফায় বৈঠক করেছেন বিভিন্ন মহলের সঙ্গে। স্বশাসিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন ঘটনায় হস্তক্ষেপ করার অধিকার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কে দিল? কোনও আইনেই যখন এই অধিকার নেই, তখন তাঁর এই ভূমিকা আরও এক ‘দাদাগিরি’ ছাড়া আর কিছুই নয়, এমনটাই অভিমত শিক্ষামহলের।

তবে শুধু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাই নয়। এর আগেও বহু ক্ষেত্রে এই অনধিকার হস্তক্ষেপ করেছেন তিনি। সেই ট্র্যাডিশন চলল আজও। শুক্রবার কুটার সদস্যদের সঙ্গে একটি বৈঠকও ডাকেন তিনি। এমনকি শিক্ষামন্ত্রীকে রিপোর্ট দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠছে উপাচার্যের ভূমিকা নিয়েও। যদিও এ দিন উপাচার্য সুরঞ্জনবাবু দাবি করেন, আচার্য কলকাতার বাইরে থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাই তিনি শিক্ষামন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট দিয়েছেন।

শুক্রবারও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিগ্রহের প্রতিবাদে অবস্থান থেকে অনড় রইল শিক্ষক সংগঠন কুটা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পাশে পেলেও অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা। এ দিনই শিক্ষামন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার জন্য কুটা এবং অভিযুক্ত ছাত্রদের বিকাশ ভবনে ডেকে পাঠিয়েছেন। বেলা দেড়টা নাগাদ দিব্যেন্দু পাল-সহ কুটার চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বিকাশ ভবনে গিয়ে পৌঁছয়। এর আধ ঘণ্টা পরে ১১ জন ছাত্রকে নিয়ে মূল অভিযুক্ত সৌরভও সেখানে পৌঁছয়। শিক্ষামন্ত্রী ডেকেছেন তাই তাঁকে সম্মান দিতেই তাঁরা এসেছেন বলে কুটার তরফে জানানো হয়েছে।

এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সৌরভ প্রতি দিনের মতো খোশ মেজাজেই রয়েছে। তাকে ঘিরে রয়েছে ছাত্র সংসদের অন্যান্য সদস্যেরাও। সে উপাচার্যের ঘরে ঢোকার চেষ্টাও করে। কিন্তু শেষমেষ সুরঞ্জনবাবু তার সঙ্গে দেখা করেননি। এর পরেই সে দলবল নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে বিকাশ ভবন রওনা দেয়। অন্য দিকে ওয়েবকুপার রাজ্য সভাপতি কৃষ্ণকলি বসু এ দিনও বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তাঁর দাবি, ‘‘অবস্থান মঞ্চ ঘিরে রয়েছে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।’’

বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ইতিমধ্যেই একটি প্রতিবাদ মঞ্চ গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে আমন্ত্রিত হয়েছেন প্রাক্তন সাংসদ তথা লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। প্রতিবাদে সামিল হতে এসে হাজির হয়েছে এবিভিপি সমর্থকেরাও। এ দিনও উপাচার্য বলেন, ‘‘ঘটনা একেবারেই অনভিপ্রেত। আমি একেবারেই চুপ করে নেই। অভ্যন্তরীন রিপোর্ট দিয়েছি শিক্ষামন্ত্রীকে। আচার্য বাইরে থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।’’ এমনকি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর আর কাজ করার ইচ্ছা নেই বলেও এ দিন জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, ঘটনার রিপোর্ট জমা দিতে গিয়ে তিনি এই বিষয়টিও শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE