Advertisement
০১ মে ২০২৪
Medical College and Hospital

ডাক্তার নেই কেন, মেডিক্যালে হঠাৎ পরিদর্শনে উঠল প্রশ্ন

দু’জন চিকিৎসকের ডিউটি রয়েছে। সেখানে প্রথম কয়েক ঘণ্টা এক জন থাকলেন। পরের সময়টা অন্য জন। কিন্তু ‘ডিউটি রস্টার’ অনুযায়ী, গোটা সময়টাই দু’জনের থাকার কথা। এর ফলে রোগীদের ভোগান্তি হয়।

A Photograph of Medical College

বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজেই রাতে এক শ্রেণির চিকিৎসকের অনুপস্থিতি নিয়ে অভিযোগ ওঠে। ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:৪৩
Share: Save:

ডিউটির নথি অনুযায়ী, জরুরি বিভাগে দু’জন শল্য চিকিৎসকের থাকার কথা। কিন্তু, এক জন নেই কেন? কোথায় গিয়েছেন তিনি? শুক্রবার রাতে আচমকাই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরিদর্শনে গিয়ে এই প্রশ্ন তুললেন স্বাস্থ্যকর্তারা। বিষয়টি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে সব কিছু নথিভুক্ত করার পাশাপাশি আরও কয়েকটি বিভাগ ঘুরে দেখে বেরিয়ে যান ওই কর্তারা।

বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজেই রাতে এক শ্রেণির চিকিৎসকের অনুপস্থিতি নিয়ে অভিযোগ ওঠে। তা যে অমূলক নয়, তা ধরে ফেললেন খোদ স্বাস্থ্যকর্তারাই। স্বাস্থ্য ভবনের এক আধিকারিক জানান, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ডিউটি ভাগাভাগি করে করার প্রবণতা দেখা যায়। অর্থাৎ, ধরা যাক, দু’জন চিকিৎসকের ডিউটি রয়েছে। সেখানে প্রথম কয়েক ঘণ্টা এক জন থাকলেন। পরের সময়টা অন্য জন। কিন্তু ‘ডিউটি রস্টার’ অনুযায়ী, গোটা সময়টাই দু’জনের থাকার কথা। এর ফলে রোগীদের ভোগান্তি হয়। শনিবার রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, “জেলা ও শহরের প্রতিটি স্তরের হাসপাতালেই এমন আচমকা হানা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে কী কী সমস্যা রয়েছে, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাতে পরে হাসপাতালের সঙ্গে সে বিষয়ে কথা বলা যায়।”

শুক্রবার রাত ৮টা নাগাদ কলকাতা মেডিক্যালের আধিকারিকেরা তখন সকলেই প্রায় বাড়ি চলে গিয়েছেন। আচমকাই জরুরি বিভাগে উপস্থিত স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ সচিব, চিকিৎসক অনিরুদ্ধ নিয়োগী এবং আরও কয়েক জন আধিকারিক। জরুরি বিভাগে তখনও ভিড়। কত ক্ষণ ধরে রোগীরা অপেক্ষা করছেন, ট্রলি ঠিক মতো মিলছে কি না, সে ব্যাপারে খোঁজ নেন কর্তারা। এর পরে জরুরি বিভাগের ভিতরে ঢুকে ‘ডিউটি রস্টার’ খতিয়ে দেখেন। সেখানে যে সমস্ত মেডিক্যাল অফিসার, পিজিটি, পিডিটি-সহ অন্যান্য চিকিৎসক ও নার্সের নাম রয়েছে, তাঁরা সকলে উপস্থিত কি না, মিলিয়ে দেখা হয়। তখনই ধরা পড়ে, শল্য বিভাগের এক জন মেডিক্যাল অফিসার বেপাত্তা।

এর পরে স্ত্রীরোগ এবং প্রসূতিদের জরুরি বিভাগ ও ওয়ার্ডে যান ওই স্বাস্থ্যকর্তারা। কথা বলেন রোগী ও পরিজনদের সঙ্গে। খতিয়ে দেখেন খাবারের মান। ঘণ্টা দু’য়েক পরে বেরিয়ে যান তাঁরা। পরিদর্শনের খবর শুনে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ হাসপাতালে আসতে চাইলে, বারণ করে দেন ওই কর্তারা। তাঁরা নিজেরাই ঘুরে দেখতে চান। কলকাতা মেডিক্যালের এক কর্তার কথায়, “স্বাস্থ্য ভবনের তরফে এখনও কিছু জানায়নি। তবে, এক জনের না থাকার ঘটনাটি শুনেছি। আমরাও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। এমন আচমকা পরিদর্শন খুবই প্রয়োজন।”

স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, “রোগীর পরিজন, স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বাস্থ্য প্রশাসনের পরস্পরের মধ্যে বিরোধ নেই। সকলেরই লক্ষ্য, উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা। সেটা কত কম সমস্যার মধ্যে দিয়ে সঠিক ভাবে দেওয়া যায়, লক্ষ রাখতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Medical College and Hospital Doctors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE