এ যেন দুর্ঘটনার ‘হ্যাটট্রিক’ বিধাননগরে!
মঙ্গলবার নিউ টাউনের বিশ্ব বাংলা সরণিতে বাসের চাকার তলায় পড়ে এক তরুণীর হাত কাটা গিয়েছিল। বুধবার পাঁচ নম্বর সেক্টরে রাস্তায় পড়ে যাওয়ার সময়ে বাসের ধাক্কায় এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। এর পরে বৃহস্পতিবার ওই পাঁচ নম্বর সেক্টরেই স্কুটারের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গার্ডওয়ালে ধাক্কা মারায় মৃত্যু হল এক তরুণের। এর আগেও নিউ টাউন এবং ভিআইপি রোডে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনায় কয়েক জন মারা গিয়েছিলেন।
নাকা তল্লাশি, ট্র্যাফিক পুলিশের নজরদারি, লাগাতার সচেতনতার প্রচার এবং ট্র্যাফিক আইন ভঙ্গে মামলা রুজু করা হলেও দুর্ঘটনা যেন থামছে না বিধাননগরে। বৃহস্পতিবার রাত সওয়া ১০টা নাগাদ বিশ্ব বাংলা সরণির উইপ্রো মোড়ের কাছে নবদিগন্ত উড়ালপুল ধরে স্কুটার চালিয়ে যাচ্ছিলেন ট্যাংরা থানা এলাকার বাসিন্দা নেহাল বর্মা (২৬)। নিউ টাউনের দিক থেকে ই এম বাইপাসের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। উড়ালপুল থেকে নামার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পথ-বিভাজিকায় ধাক্কা মারেন নেহাল। ছিটকে পড়েন রাস্তায়। দ্রুত ছুটে আসেন কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, কোনও কাজ শেষ করে বাড়ির দিকে ফিরছিলেন ওই তরুণ। মাথায় আঘাত লাগে তাঁর। যদিও তিনি হেলমেট পরে ছিলেন কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ, ঘটনাস্থল থেকে হেলমেট মেলেনি। নেহালের স্কুটারটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, স্কুটারের গতি খুব বেশি ছিল। সেই বিষয়টিও যাচাই করা হচ্ছে। স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, নয়াপট্টি থেকে বাইপাস পর্যন্ত একাধিক সিগন্যাল থাকলেও অধিকাংশ যানবাহনই তীব্র বেগে যাতায়াত করে। সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরের চার মাথার মোড়ে, বিশেষত কলেজ মোড়ে দিনভর জনসমাগম বেশি থাকে। অথচ, সেখানে পরিসর কম। যাত্রীদের রাস্তার উপরেই বাসের অপেক্ষা করতে হয়। মোড়ের মাথায় বাসগুলি যাত্রী তোলা-নামানোর কাজ করে। আবার বিশ্ব বাংলা সরণি কিংবা ভিআইপি রোডেও গাড়ি এত জোরে চলে যে, বিপদের আশঙ্কা থাকে।
বিধাননগর ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের দাবি, বছরভর গাড়িচালক ও পথচারীদের সচেতন করার কাজ চলে। নিয়ম ভাঙলে পদক্ষেপও করা হচ্ছে। কিন্তু তার পরেও দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে একাংশের অসাবধানতা, গাফিলতি দেখা যাচ্ছে। এক পুলিশকর্তা জানান, কেন পর পর দুর্ঘটনা, কারণ বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)