E-Paper

কলকাতা আবার ‘নিরাপদতম’, প্রশ্ন

রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালে কলকাতায় ১২২১৩টি ধর্তব্যে আনার মতো অপরাধ নথিভুক্ত হয়েছিল। ২০২৩ সালে তা কমে হয়েছিল ১১৮৪৩টি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৫ ০৭:৫১
পর পর চার বার ‘নিরাপদতম’ শহরের তকমা পেল কলকাতা।

পর পর চার বার ‘নিরাপদতম’ শহরের তকমা পেল কলকাতা। —ফাইল চিত্র।

পর পর চার বার ‘নিরাপদতম’ শহরের তকমা পেল কলকাতা। সম্প্রতি প্রকাশিত ২০২৩ সালের ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো’ (এনসিআরবি) রিপোর্ট অনুযায়ী, সমীক্ষার আওতায় থাকা দেশের ১৯টি মেট্রোপলিটন শহরের মধ্যে কলকাতায় ওই বছরে ধর্তব্যে আনার মতো অপরাধের (কগনিজ়েবল ক্রাইম) মাত্রা (রেট) ছিল প্রতি এক লক্ষ লোকের মধ্যে ৮৩.৯। ২০২২ সালে এই মাত্রা ছিল প্রতি লক্ষে ৮৬.৫। ২০২১ সালে এই মাত্রা ছিল ১০৩.৫। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালে কলকাতায় ১২২১৩টি ধর্তব্যে আনার মতো অপরাধ নথিভুক্ত হয়েছিল। ২০২৩ সালে তা কমে হয়েছিল ১১৮৪৩টি।

ধর্তব্যে আনার মতো অপরাধের ক্ষেত্রে কলকাতার পরেই রয়েছে হায়দরাবাদ (প্রতি এক লক্ষ লোকে ৩৩২.৩ ) এবং পুনে (প্রতি এক লক্ষে ৩৩৭.১)। কোচিতে এই মাত্রা ৩,১৯২.৪, দিল্লিতে ২১০৫.৩। সুরাতে ১৩৭৭.১। এর ভিত্তিতেই কলকাতাকে ধরা হচ্ছে নিরাপদতম শহর। এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার মন্তব্য, ‘‘সারা বছর নজরদারি এবং অপরাধ ঘটলেই কড়া হাতে মামলা রুজু করে পদক্ষেপ করার কারণেই কলকাতা নিরাপদতম শহর হয়েছে আবারও।’’ যদিও তা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরওশুরু হয়েছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালে কলকাতায় মহিলাদের বিরুদ্ধে ১৮৯০টি অপরাধ নথিভুক্ত হয়েছিল। সেখানে ২০২৩ সালে নথিভুক্ত হয়েছে ১৭৪৬টি। মহিলাদের উপর নথিভুক্ত অপরাধের মাত্রা প্রতি এক লক্ষ লোকের মধ্যে ২৫.৭। কলকাতার আগে রয়েছে চেন্নাই (প্রতি এক লক্ষ লোকে ১৭.৩) এবং কোয়মবত্তূর (প্রতি এক লক্ষ লোকে ২২.৭)। গত বছর আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভিতরে চিকিৎসক পড়ুয়াকে খুন ধর্ষণের ঘটনা এবং চলতি বছরে শিক্ষাঙ্গন এবং নানা জায়গায় মহিলাদের বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে কলকাতার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে স্বাভাবিক ভাবেই। এই পরিস্থিতিতে ২০২৩ সালের অপরাধ সংক্রান্ত নথির ভিত্তিতে তৈরি হওয়া এনসিআরবি রিপোর্ট প্রকাশিত হল।

তবে এই রিপোর্টই বলছে, নিরাপদ কলকাতায় খুনের ঘটনা বেড়েছিল ২০২৩ সালে। ২০২২ সালে যেখানে শহরে ৩৪ জন খুন হয়েছিলেন বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে ২০২৩ সালে খুনের ঘটনা ঘটেছে ৪৩টি। এ ছাড়াও অনিচ্ছাকৃত খুন (ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারা) এবং পণ-মৃত্যু (৩০৪বি ধারা)-র ঘটনা ঘটেছে যথাক্রমে আটটি এবং ছ’টি। খুনের চেষ্টার ঘটনা ১৩০টি ও অপরাধমূলক হত্যার চেষ্টা (৩০৮ ধারা) সাতটি।

শিশুদের উপরে হওয়া অপরাধ কম দেখা গেলেও অপ্রাপ্তবয়স্কদের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার সংখ্যা চিন্তা বাড়াচ্ছে। রিপোর্ট বলছে, কলকাতায় ২০২২ সালে যেখানে অপ্রাপ্তবয়স্কের অপরাধ সংগঠিত করার ন’টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছিল, ২০২৩ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৫টি। ২০২২ সালে যেখানে প্রবীণদের বিরুদ্ধে অপরাধের দু’টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছিল, ২০২৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ছ’টি।

তবে বাহিনীর অন্দরেই আলোচনা চলছে, বহু ক্ষেত্রেই অভিযোগ পুলিশ পর্যন্ত পৌঁছয় না। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে বলে বহু ঘটনার রিপোর্ট জমাও দেওয়া হয় না।

বাস্তব পরিস্থিতি তা হলে কী? জল্পনা বাড়াচ্ছে এনসিআরবি-র নতুন রিপোর্ট।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

National Crime Records Bureau Safest City

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy