Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Death Due To Road Accident

রাতে বেপরোয়া লরির ধাক্কায় ফের মৃত্যু, প্রশ্নে পথের নিরাপত্তা

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার রাতে মঞ্জু তাঁর স্বামী দেবপ্রসাদ বসুর সঙ্গে স্কুটারে চেপে নিমন্ত্রণ বাড়ি থেকে ফিরছিলেন। কাঁকুড়গাছির কাছে স্কুটারটিকে ধাক্কা মারে একটি লরি।

An image of Death

মঞ্জু বসু —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:০২
Share: Save:

রাতের শহরে ফের বেপরোয়া লরির ধাক্কায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটল। রবিবার রাতে কাঁকুড়গাছি মোড়ের কাছে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনায় নিমন্ত্রণ বাড়ি থেকে ফেরার পথে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। তাঁর স্বামী গুরুতর জখম হয়ে ই এম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম মঞ্জু বসু (৫৮)। তিনি বেলেঘাটার গগন সরকার রোডের বাসিন্দা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার রাতে মঞ্জু তাঁর স্বামী দেবপ্রসাদ বসুর সঙ্গে স্কুটারে চেপে নিমন্ত্রণ বাড়ি থেকে ফিরছিলেন। কাঁকুড়গাছির কাছে স্কুটারটিকে ধাক্কা মারে একটি লরি। তার জেরে ওই দম্পতি রাস্তায় ছিটকে পড়েন। সেই সময়ে লরিটির চাকায় পিষ্ট হন মঞ্জু। গুরুতর ভাবে জখম হন দেবপ্রসাদও। তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয় ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে মঞ্জুকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পরে দেবপ্রসাদকে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ লরিটি আটক করলেও সেটির চালক পলাতক।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার ভোরে রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিট ও বিবেকানন্দ রোডের সংযোগস্থলে সিমেন্ট বোঝাই একটি লরির ধাক্কায় মারা গিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের পশ্চিম বন্দর থানার কনস্টেবল অভিজিৎ চক্রবর্তী। রাতের ডিউটি সেরে ভোরে তিনি স্কুটার চালিয়ে বারাসতে নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন। তখনই ওই দুর্ঘটনা ঘটে।

সোমবারের ঘটনার পরে মঞ্জুর ছেলে দেবজ্যোতি জানান, তাঁরা পুলিশের থেকে জেনেছেন যে, তাঁর বাবা স্কুটার নিয়ে যেখানে দাঁড়িয়েছিলেন, তার পাশেই ছিল লরিটি। সিগন্যাল সবুজ হতেই সেটি দেবপ্রসাদের স্কুটারে ধাক্কা মারে। তার জেরেই রাস্তায় ছিটকে পড়েন ওই দম্পতি। দেবজ্যোতির কথায়, ‘‘লরির একটি চাকার নীচে মা পড়ে যান। অন্য চাকায় পিষ্ট হয় বাবার হাত। শুনলাম, পুলিশ লরিটাকে ধরেছে।’’ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রবিবার রাতেই ইএসআই হাসপাতালে ছোটেন দেবজ্যোতি। তিনি জানান, বাগবাজারে তাঁর কাকার মেয়ের বৌভাতের অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন তাঁর বাবা-মা। তাঁদের দু’জনের মাথাতেই হেলমেট ছিল। সোমবার বিকেলে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মঞ্জুর দেহের ময়না তদন্ত হয়।

দেবজ্যোতির কথায়, ‘‘আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না। কেমন যেন ঘোরের মধ্যে রয়েছি। রাতে ইএসআই হাসপাতালে গিয়ে দেখি, বাবাকে একটি শয্যায় রাখা হয়েছে। উল্টো দিকের শয্যায় দেখি, মা শুয়ে আছেন। বাবা আমাকে বললেন মায়ের দিকে দেখতে। আমি কাছে গিয়ে বুঝতে পারি, মা আর নেই।’’

মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে বেপরোয়া লরির ধাক্কায় পর পর দু’টি প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটল কলকাতা শহরে। ফলে রাতে বা ভোরের দিকে শহরের রাস্তায় লরি এবং ট্রাকের দাপাদাপি নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অভিযোগ, রাতে বা ভোরের দিকে শহরের রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে চলে লরি ও ট্রাক। অনেক ক্ষেত্রে সিগন্যালও মানতে চান না বেপরোয়া লরি বা ট্রাকচালকেরা। ওই সময়ে রাস্তায় পুলিশের নজরদারিও বিশেষ থাকে না বলেই দাবি। ফলে রাতে বা ভোরের দিকেই বেপরোয়া লরি বা ট্রাকের ধাক্কায় একাধিক প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Road Accident Death Truck accident Rroad Safety
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE