Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
COVID-19

থার্মাল স্ক্যানারে পরীক্ষা বন্ধ কেন, প্রশ্ন রেলযাত্রীদের

 বিধি-ভঙ্গ: শিয়ালদহ স্টেশনের প্রবেশপথে কোনও কোনও জায়গায় ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেক্টর

বিধি-ভঙ্গ: শিয়ালদহ স্টেশনের প্রবেশপথে কোনও কোনও জায়গায় ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেক্টর সুমন বল্লভ

চন্দন বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২১ ০৫:৪৭
Share: Save:

কোভিডের কারণে দীর্ঘ সময় লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকার পরে এ রাজ্যে গত নভেম্বরেই চাকা গড়িয়েছে। ট্রেন পরিষেবা শুরুর আগে সংক্রমণ রুখতে বেশ কিছু বিধির কথা ঘোষণা করেছিলেন রেল কর্তৃপক্ষ। নির্দিষ্ট করা হয়েছিল শহরতলির প্রায় প্রতিটি রেল স্টেশনের প্রবেশপথ। সেখানে ব্যবস্থা করা হয়েছিল থার্মাল স্ক্যানারের। প্রতিদিন
ছোট-বড় সব স্টেশনে নিয়ম করে যাত্রীদের দাঁড় করিয়ে স্ক্যানারের সাহায্যে দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হত।

ছিল মাস্ক পরে ট্রেনে যাতায়াতের কড়াকড়ি। কিন্তু এক মাস যেতে না যেতেই বন্ধও হয়ে যায় সে সব। যাত্রীদের অভিযোগ, এখন লোকাল ট্রেনের যাত্রা কোভিড পূর্ববর্তী সময়ের মতোই যেন স্বাভাবিক।

এ দিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে এ রাজ্যেও। আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত হারে বাড়ছে। তা সত্ত্বেও কেন প্রতিটি রেল স্টেশনে আবার থার্মাল স্ক্যানারের সাহায্যে যাত্রীদের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে না, কেন মাস্ক নিয়ে কড়া হচ্ছেন না রেল কর্তৃপক্ষ? প্রশ্ন তুলেছেন রেলযাত্রীদের অনেকেই।

রেলের আধিকারিকদের দাবি, “বড় স্টেশনে এখনও এই ব্যবস্থা চালু রয়েছে।” যদিও বড় স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করা যাত্রীরাই মানছেন না সেই দাবি।

শহরতলির যাত্রীদের কাছে অন্যতম ‘লাইফলাইন’ লোকাল ট্রেন। শিয়ালদহ ও হাওড়া শাখায় প্রতিদিন কয়েক লক্ষ যাত্রী লোকাল ট্রেন ব্যবহার করেন। বর্তমান করোনা
পরিস্থিতিতে রেলের ঢিলেঢালা মনোভাবের জন্য আতঙ্কিত এক শ্রেণির যাত্রী।

তাঁদের অভিযোগ, প্রতিদিন কার্যত বিনা বাধায় শহরতলির স্টেশনে পৌঁছন তাঁরা। যাত্রী মাস্ক না পরলে তাঁকে কোনও বাধা পেরোতে হয় না বলেই অভিযোগ। ফলে মানুষের মধ্যে বিনা মাস্কে লোকাল ট্রেনে সফর করার প্রবণতাও বাড়ছে। যা থেকে উঠে আসছে যাত্রীদের পাশাপাশি রেলকর্তাদের গাফিলতির চিত্রও।

লোকাল ট্রেনের নিত্যযাত্রীদের দাবি, প্রতিটি স্টেশনে নির্দিষ্ট প্রবেশপথ থাকুক। যেখান দিয়ে থার্মাল স্ক্যানারের মাধ্যমে যাত্রীদের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করানোর পরেই সফরের ছাড়পত্র মিলবে। এ ভাবে সংক্রমণ কিছুটা আটকানো যাবে বলে তাঁদের মত।

বারাসতের বাসিন্দা অলকেশ চৌধুরী বলেন, “নভেম্বরে যখন লোকাল চালু হল, তখন স্টেশনে ঢোকার আগে প্রত্যেক যাত্রীর দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতেন রেলকর্মীরা। বর্তমানে সেই ব্যবস্থাই বন্ধ। তার মধ্যে বাড়ছে সংক্রমণ। ফলে রেলযাত্রীদের মধ্যে তা দ্রুত ছড়ানোর আশঙ্কা থাকছে। রেলের উচিত ফের সেই ব্যবস্থা চালু করা।”

একই দাবি সোনারপুরের বাসিন্দা গোপাল হালদারের। তাঁর মতে, “অবশ্যই জরুরি ভিত্তিতে যাত্রীদের স্টেশনে ঢোকার আগে থার্মাল স্ক্যানারের মাধ্যমে দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থা ফের শুরু করা উচিত। এ ছাড়া ট্রেন চালু রেখে সংক্রমণ আটকানোর পথ অন্তত আমার জানা নেই।”

কিন্তু এত রেলযাত্রীকে কি আদৌ থার্মাল স্ক্যানারে পরীক্ষা করা সম্ভব? যাত্রীদেরই প্রশ্ন, নভেম্বরের গোড়ায় এই ব্যবস্থা চালু থাকলে বর্তমানে তা সম্ভব নয় কেন?

এই প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, “শিয়ালদহ, হাওড়া, কলকাতা স্টেশনে থার্মাল স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থা বর্তমানে চালু রয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই শহর ও শহরতলির ছোট-বড় সব স্টেশনেই ফের এই ব্যবস্থা চালু করা হবে।” পাশাপাশি তিনি যাত্রীদের মাস্ক পরে লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করার বিষয়েও সতর্ক থাকতে বলছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE