Advertisement
E-Paper

খাল পেরিয়ে পড়া, সেতু তৈরিতে পাশে শহরের স্কুল

অবশেষে পড়ুয়াদের এই দুর্দশার সমাধান হতে চলেছে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের রামমোহন মিশন হাই স্কুলের হাত ধরে।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২১ ০৮:১১
ভরসা: সেই খালের উপরে তৈরি হয়েছে সেতু।

ভরসা: সেই খালের উপরে তৈরি হয়েছে সেতু। নিজস্ব চিত্র।

মাতলা নদীতে গিয়ে মিশেছে চওড়া খালটা। সেই খালের ধারেই দক্ষিণ বুধোখালি প্রাথমিক স্কুল এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুল। সারা বছরই দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ওই স্কুলে পৌঁছতে খাল পেরোতে হয় অন্য পারের পড়ুয়াদের। জল ভেঙে, কোনও রকমে বইখাতা বাঁচিয়ে স্কুলে আসে তারা। ভোগান্তি আরও বাড়ে বর্ষাকালে। খালের জল বেড়ে যাওয়ায় প্রায় তিন কিলোমিটার ঘুরে স্কুলে পৌঁছনো ছাড়া উপায় থাকে না তখন।

অবশেষে পড়ুয়াদের এই দুর্দশার সমাধান হতে চলেছে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের রামমোহন মিশন হাই স্কুলের হাত ধরে। এই স্কুলের সহায়তায় খালের উপরে একটি কাঠের সেতু তৈরির কাজ প্রায় শেষের মুখে। আগামী সোমবার নতুন সেতুর উদ্বোধন করবে দক্ষিণ বুধোখালির ছাত্ররাই।

রামমোহন মিশন হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুজয় বিশ্বাস জানান, গত ২৩ জানুয়ারি তাঁরা দক্ষিণ বুধোখালির প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে গিয়েছিলেন পড়ুয়াদের সাহায্য করার জন্য। তিনি বলেন, ‘‘করোনার জন্য দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ। তার মধ্যে গ্রামের পড়ুয়ারা কী ভাবে পড়াশোনা করছে তা দেখতে গিয়েছিলাম। তখনই ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পড়ুয়ারা জানান, স্কুল যখন খোলা থাকে তখন খালের উল্টো দিকের গ্রামের পড়ুয়াদের খুব কষ্ট করে স্কুলে পৌঁছতে হয়। বর্ষাকালে আবার খাল পেরোনোও যায় না। তখন তিন কিলোমিটার ঘুরে স্কুলে যেতে হয়।’’ সুজয়বাবু জানান, এই ভোগান্তির কথা শুনে তাঁরা ঠিক করেন, খালের উপরে একটি কাঠের সেতু তাঁরা বানিয়ে দেবেন। স্কুলের তহবিল থেকেই দেওয়া হবে খরচ।

সেই মতো শুরু হয়ে যায় কাজ। কাঠের সেতু তৈরির তত্ত্বাবধানে আছেন দক্ষিণ বুধোখালি প্রাথমিক স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র সনৎ প্রামাণিক। সনৎবাবু বলেন, ‘‘আমাদের এখানে জৈষ্ঠ্য মাস থেকে শুরু হয়ে প্রায় সাত মাস বর্ষা থাকে। ওই সাত মাস খালের জল এতটাই বেশি থাকে যে প্রায় ১২০ ফুট চওড়া খাল পেরোনো যায় না। তিন কিলোমিটার ঘুরে আসতে হয়। গরম কালেও খালের জল প্রায় হাঁটু সমান থাকে। বাচ্চাদের খাল পেরিয়ে যেতে খুবই অসুবিধা হয়। এ ভাবেই তারা এত দিন যাতায়াত করছে। রামমোহন মিশন হাই স্কুলের উদ্যোগে গ্রামের বাসিন্দারাই কাঠের এই সেতু তৈরি করছি। কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে।’’

ওই প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ভোলানাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘স্কুলের পড়ুয়াদের এই সমস্যার কথা পঞ্চায়েত প্রধানকে বলেছি। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জেলা স্কুল পরিদর্শককেও বলেছি। ওঁদের উদ্যোগে কাঠের অস্থায়ী সেতু তৈরিও হয়েছিল। কিন্তু পরে সেই সেতু ভেঙে যায়। এখন স্কুল বন্ধ ঠিকই। কিন্তু স্কুল খুললে আবার পড়ুয়াদের স্কুলে আসতে অসুবিধা হবে। খালের ও-পার থেকে বহু পড়ুয়া স্কুলে আসে। এই সেতুটা তৈরি হলে কয়েকশো পড়ুয়া উপকৃত হবে।’’

রামমোহন মিশন হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানাচ্ছেন, এ ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরাই প্রথম নন। অন্য অনেক স্কুলও এই ধরনের সমাজসেবামূলক কাজ করে থাকে। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘গ্রামের অনেক স্কুলের পড়ুয়াদের নানা রকম সমস্যা রয়েছে। তাদের পাশে দাঁড়ানোটা আমাদের সামাজিক কর্তব্যবোধের মধ্যেই পড়ে। এই ধরনের কাজ আরও বেশি হওয়া উচিত।’’

Rammohan Mission High School
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy