Advertisement
E-Paper

WB municipal election 2022: ভোটের আগের বজ্র আঁটুনি শেষ প্রহরে উধাও কেন

স্কুলের মূল ভবনের কয়েক জন পুলিশকর্মী বন্দুক হাতে আইপিএলের নিলাম দেখছেন। ভোটারদের পথ দেখাতে ব্যস্ত এলাকার কিছু লোক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:১৩
বাগুইপাড়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কংগ্রেস প্রার্থী কাকলি বাগুই ও তৃণমূল প্রার্থী জয়শ্রী বাগুইয়ের মধ্যে বচসা।

বাগুইপাড়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কংগ্রেস প্রার্থী কাকলি বাগুই ও তৃণমূল প্রার্থী জয়শ্রী বাগুইয়ের মধ্যে বচসা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক ও নিজস্ব চিত্র।

সকালের ‘তৎপরতা’ কি উবে গেল বেলা গড়াতেই? বিধাননগরের পুরভোট ঘিরে শনিবার দিনভর পুলিশের ভূমিকা দেখে এই প্রশ্নই তুলেছেন বাসিন্দাদের বড় অংশ। তাঁদের বক্তব্য, সাড়ে চার হাজার পুলিশকর্মীর মাধ্যমে সুষ্ঠু ভোটের স্বপ্ন আদতে সোনার পাথরবাটি হয়েই রইল। বিধাননগরের পুলিশকর্তাদের যদিও দাবি, রাস্তায় যথেষ্ট পুলিশ মোতায়েন ছিল। কোনও রকম গাফিলতি হয়নি।

দিনের শুরুতেই বিধাননগর পুর এলাকায় ঢোকার মুখে বিমানবন্দরের অদূরে দেখা গেল দমদম থানার নাকা-তল্লাশি চলছে। উত্তরে সন্তুষ্ট হলেই ছাড় মিলছে। এই তৎপরতাই চোখে পড়েছিল ভোটের দু’দিন আগে থেকে। কিন্তু শনিবার বেলা গড়াতেই বিধাননগর যেন ‘মুক্তাঞ্চল’। অভিযোগ, রাস্তায় তো বটেই, বুথের দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীদেরও দেখা গিয়েছে দর্শকের ভূমিকায়। বেশি অভিযোগ এসেছে বিধাননগর পুর এলাকার বাগুইআটি, হাতিয়াড়া, দশদ্রোণ, দত্তাবাদ থেকে। দত্তাবাদের একটি স্কুলের বুথে দেখা গেল, স্কুলমাঠের গেটে থাকা পুলিশকর্মী বিশ্রাম নিচ্ছেন। স্কুলের মূল ভবনের কয়েক জন পুলিশকর্মী বন্দুক হাতে আইপিএলের নিলাম দেখছেন। ভোটারদের পথ দেখাতে ব্যস্ত এলাকার কিছু লোক। সকলের পরিচয়পত্র দেখে ঢোকানো হচ্ছে? এক পুলিশকর্মীর উত্তর, ‘‘কিছু বলার থাকলে বাইরে বড়বাবুরা রয়েছেন, গিয়ে বলুন।’’

বাগুইআটির বাগুইপাড়ায় ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগে প্রায় হাতাহাতি শুরু হয় তৃণমূল ও কংগ্রেস প্রার্থীর মধ্যে। নীরব পুলিশ হঠাৎ সক্রিয় হয় ক্যামেরা দেখে। ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের বুথে বহিরাগতের প্রবেশের অভিযোগ ওঠে। তিন প্রার্থী মুখোমুখি হওয়ায় উত্তেজনা তৈরি হয়। পুলিশবাহিনী দ্রুত পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি করলেও ফের তা পূর্বাবস্থায় ফিরে আসে বলে অভিযোগ। এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘ঝামেলা পাকিয়ে বিরোধীদের সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত ছিল।’’ এ দিন গোলমাল পাকানোর অভিযোগে ৪৭ জন গ্রেফতার হন।

এ দিন দিনের শেষে সিপিএম এবং কংগ্রেসের তরফে তৃণমূলের হয়ে ভোট পরিচালনার অভিযোগ তোলা হয়েছে বাগুইআটি থানার বিরুদ্ধে। ৯, ১০ এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী রবীন মণ্ডল, অমরনাথ গুহ ও দেবাশিস নস্করের অভিযোগ, শুক্রবার রাতে আচমকাই বাগুইআটি থানা তাঁদের ডেকে পাঠিয়ে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে। অমরনাথ বলেন, ‘‘আমাকে সারা রাত থানায় বসিয়ে ভোরে ছাড়া হয়। মুচলেকা নেওয়া হয় যে, আমরা কোনও গোলমাল করব না। কথোপকথনের ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা হয়। ভোটের আগের রাতে এক জন প্রার্থীর সঙ্গে পুলিশ এমন ব্যবহার করলে তাঁর কর্মীদের মনোবল কেমন থাকে?’’

আবার কংগ্রেসের উত্তর ২৪ পরগনার সভাপতি তাপস মজুমদার বলেন, ‘‘আমরা বাগুইআটি থানার বিরুদ্ধে আদালতে যাব। আমাদের একাধিক প্রার্থীকে বাগুইআটি থানার পুলিশ এসে বুথ থেকে বার করে দিয়েছে। ভোটের দু’দিন আগে রাতে আমাদের এজেন্টকে টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগে থানায় নিয়ে গিয়ে হেনস্থা করা হয়।’’

এ দিন বিধাননগরে নিজের বাড়ি থেকে নজরদারি চালানোর দাবি করা রাজ্য পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বাড়ির কন্ট্রোল রুম থেকে নজর রাখছি। কিন্তু বিধাননগরের বহু বুথেরই সিসি ক্যামেরার ফিড আমার কাছে পৌঁছচ্ছে না।’’ যদিও বিধাননগরের ডেপুটি কমিশনার (সদর) সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, ‘‘কোথাও কোনও সমস্যা নেই। পুলিশ যথেষ্ট ভাল কাজ করেছে। বিশেষ নজরদারি বাহিনী মোতায়েন ছিল। গাফিলতির প্রশ্নই নেই।’’

WB Municipal Election Bidhannagar police Congress TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy