Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Belgharia Expressway

রাতের আঁধারে ডুবেছে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে, চলছে ঝুঁকির যাত্রাও

উত্তর শহরতলির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এই বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত এক বছর ধরে ওই রাস্তা অন্ধকারে ডুবে রয়েছে।

An image of Belgharia Expressway

আলোহীন: এ ভাবেই অন্ধকারে ডুবেছে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ। সোমবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:৪২
Share: Save:

অন্ধকারে ভরসা গাড়ির হেডলাইট।

বেশ কয়েক মাস ধরে রাতের বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে এ ভাবেই চলছে যানবাহন। কারণ, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের একটি বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবে রয়েছে অন্ধকারে। তার মধ্যেই বেশি গতিতে চলাচল করছে গাড়ি। সেই অন্ধকারে কার্যত প্রাণ হাতে নিয়ে রাস্তায় কাজ করছেন ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা। বিপদের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে চলতে হচ্ছে মোটরবাইক বা সাইকেল আরোহীদেরও। অভিযোগ, বার বার বলা সত্ত্বেও এই পরিস্থিতির কোনও রকম বদল হচ্ছে না।

উত্তর শহরতলির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এই বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত এক বছর ধরে ওই রাস্তা অন্ধকারে ডুবে রয়েছে। বিশেষত, বিধাননগর কমিশনারেটের বিমানবন্দর থানার অধীন এলাকাটি। সন্ধ্যা হলেই
ঘুটঘুটে অন্ধকারে বেপরোয়া গতিতে ছুটে যায় গাড়ি। রাত বাড়লে অন্ধকারেই শুরু হয় ট্রাকের দাপাদাপি। বাইকচালকেরা জানান, বড় গাড়ির হেডলাইট দেখে রাস্তায় চলতে হয়। এমতাবস্থায় যে কোনও সময়ে সেখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন
তাঁরা।

বিমানবন্দর থানার অধীন যে জায়গাটি রয়েছে, সেটি শহর ও শহরতলির ভিতরে
চলাচলের সংযোগস্থল। সেখানে একটি রাস্তা কলকাতার বাইরে থেকে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে বারাসতের দিকে যাচ্ছে। সেখান থেকেই একটি উড়ালপুল উঠে গিয়ে বিমানবন্দরের আড়াই নম্বর গেটের কাছে নামছে। সেটি কলকাতা শহরে ঢোকার রাস্তা। ওই জায়গা দিয়েই আবার একটি রাস্তা বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে দক্ষিণেশ্বরের দিকে চলে যাচ্ছে। অতি ব্যস্ত ওই তিন রাস্তার মোড়ে ঘন অন্ধকারে যান চলাচল সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ।

ওই রাস্তাটি ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এনএইচএআই)-এর অধীনে। কিন্তু রাস্তা ও আলোর দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে পূর্ত দফতর। বিমানবন্দর ট্র্যাফিক গার্ডের দাবি, রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করতে বলে তারা একাধিক বার চিঠি দিয়েছে এনএইচএআই-কে। চিঠি দেওয়া হয়েছে পূর্ত দফতরকেও। কিন্তু পরিস্থিতির বদল হয়নি। যদিও পূর্ত দফতরের তরফে দাবি, ওই জায়গায় আগে একটি হাইমাস্ট আলো ছিল। সেটি রাস্তা তৈরির কাজের জন্য সরাতে হয়েছে।

গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে ওই রাস্তায় রয়েছে একাধিক পথ-বিভাজিকা। ফলে
অন্ধকারে খেয়াল করতে না পারলে তাতে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন বাইকচালকেরা। কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মীর কথায়, ‘‘অনেক সময়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় গাড়ির হেডলাইটের আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যায়। তারই মধ্যে বিপদ মাথায় করে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে হয়।’’

যদিও পূর্ত দফতর ও স্থানীয় উত্তর দমদম পুরসভা সূত্রের খবর, ওই এলাকায় লরির জন্য একটি রাস্তা তৈরি করতে গিয়েই সমগ্র জটিলতা তৈরি হয়েছে। তার আগে সেখানে একটি উদ্যান ছিল, ছিল হাইমাস্ট আলোও। কিন্তু রাস্তা তৈরির কাজের জন্য বিদ্যুতের কেব্‌ল উপড়ে গিয়েছে। তার জেরেই ওই এলাকা গত দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে অন্ধকারে রয়ে
গিয়েছে। পূর্ত দফতর অবশ্য জানিয়েছে, পার্কের ওই জায়গা দিয়ে পুলিশের পরিকল্পনা মতো লরির জন্য রাস্তা বার করতে হয়েছে। না-হলে বাঁকড়ার কাছে লরি পার্কিং করাতে গিয়ে যশোর রোডে যানজট তৈরি হচ্ছিল। এ বার ওই জায়গায় ফের হাইমাস্ট বসিয়ে এলাকাটি আলোকিত করার দায়িত্ব স্থানীয় পুরসভার।

পুর কর্তৃপক্ষ জানান, দুর্গাপুজো ও কালীপুজোর কারণে ওই কাজে তাঁরা হাত দিতে পারেননি। সমস্যা সমাধানে তাঁরাও তৎপর। কর্তৃপক্ষের দাবি, এ নিয়ে তাঁরা পূর্ত দফতরের সঙ্গে যোগাযোগেও রয়েছেন। পুরসভাও জানাচ্ছে, উদ্যানটি ভেঙে রাস্তা তৈরির কাজের সময়ে কেব্‌ল উপড়ে যাওয়া ঘিরেই এই বিপত্তি। ওই জায়গায় আলো ফেরানোর কাজ তাঁরাই করবেন বলে জানিয়েছেন উত্তর দমদম পুর কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Belgharia Expressway High Risk No Light
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE