ভিআইপি রোডের উপরে বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হল মোটরবাইক আরোহী দুই সিভিক পুলিশের। মৃতদের নাম সায়নদীপ সেনগুপ্ত (২৫) ও সৈকত দাস (২৫)। দু’জনেই বিধাননগর কমিশনারেটের সিভিক পুলিশ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তবে দু’জনের কারও মাথায় হেলমেট ছিল না বলেই জানিয়েছে বাগুইআটি থানার পুলিশ।
বিধাননগর পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাত ৮টা নাগাদ হজ হাউসের সামনে ওই ঘটনা ঘটে। ঘাতক বাসটিকে রাত পর্যন্ত ধরা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, নবদিগন্ত থেকে বারাসতগামী একটি বাস মোটরবাইকে ধাক্কা মেরেছে। সেটির সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ। তবে পুলিশ কর্তারা জানাচ্ছেন, বাসটি ধাক্কা মারার পরে সায়ন ও সৈকত রাস্তার উপরেই পড়ে যান। পিছনের কোনও গাড়ি দু’জনকেই চাপা দিয়েছে।
বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ জানায়, বছর তিনেক ধরে সায়ন ও সৈকত সিভিক পুলিশ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দমদমের বাসিন্দা সায়ন গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করতেন। বাগুইআটির বাসিন্দা সৈকত ছিলেন ট্রাফিক বিভাগে।
বিধাননগর পুলিশের এডিসিপি জয় টুডু জানান, এ দিন সন্ধ্যার পরে মোটরবাইকে চেপে দু’জনে বিমানবন্দরমুখী রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় একটি বাস দু’জনকে ধাক্কা মেরে পালায়। সায়ন ও সৈকত রাস্তায় পড়ে গাড়ির চাকায় পিষ্ট হন। জয়বাবুর কথায়, ‘‘ঘটনাস্থল থেকে যা জানা গিয়েছে বাসের ধাক্কায় রাস্তায় পড়ে যাওয়ার পরে তাঁরা অন্য গাড়ির চাকায় পিষ্ট হন।’’ সৈকত ঘটনাস্থলেই মারা যান। সায়নকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
আচমকা এই ঘটনায় শোকগ্রস্ত বিধাননগরের পুলিশ মহলও। বাগুইআটি থানার পুলিশ জানাচ্ছে, দু’জনে ডিউটি সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে দুর্ঘটনা ঘটে। তাঁদের গায়ে সিভিক পুলিশের পোশাক ছিল না। তবে মোটরবাইকে পুলিশের স্টিকার লাগানো ছিল, যা থেকে সায়ন ও সৈকত পুলিশের কর্মী বলে পরে বোঝা যায়। ওই ঘটনার পরে বেশ কিছুক্ষণ কৈখালি এলাকায় ভিআইপি রোডের উপরে যানজট তৈরি হয়।
মোটরবাইক আরোহীদের নিরাপত্তার জন্য হেলমেট ব্যবহারের জন্য বারবার অনুরোধ করে পুলিশ। কলকাতা পুলিশ, জেলা পুলিশ সকলেই এর জন্য নানা কর্মসূচি নেয়। এমনকী, হেলমেট ছাড়া বাইক চালালে জরিমানারও ব্যবস্থা আছে। তা সত্ত্বেও পুলিশেরই একাংশের মধ্যে এখনও হেলমেট নিয়ে সচেতনতা তৈরি হয়নি দুই সিভিক পুলিশের মৃত্যুর পরে তা ফের প্রমাণিত।
যদিও এক ট্রাফিক পুলিশের কর্তার কথায়, ‘‘ওই দুই সিভিক পুলিশ হেলমেট নেননি ঠিকই, তবে দু’জনেই চাকার তলায় পিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন।’’