সকালই বলে দেয়, দিনটা কেমন যাবে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কাজের দিনেই এই প্রবাদ ফলে গেল উত্তর ও মধ্য কলকাতায় পথে বেরোনো মানুষদের জন্য।
ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) বিরোধিতায় এ দিন দুপুরে রেড রোড থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছিল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। মিছিলে যে হেতু পা মেলাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তার জন্য সকাল থেকেই গিরিশ পার্ক থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের একটি দিক বন্ধ রাখা হয়। ফলে, একই লেন দিয়ে উভয় দিকের যান চলাচল করায় তীব্র যানজটে হিমশিম খেতে হয় সাধারণ মানুষকে। সকালের ব্যস্ত সময়ে গিরিশ পার্ক থেকে ধর্মতলা পৌঁছতে এক ঘণ্টা লেগে যায়। এ দিন যানজট থেকে রেহাই পেতে অনেকেই বাস থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করেন।
দুপুর আড়াইটে নাগাদ রেড রোড থেকে তৃণমূলের মিছিল শুরু হতে উত্তর ও মধ্য কলকাতা কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায়। মেয়ো রোড, ধর্মতলা সংলগ্ন সমস্ত রাস্তা, লেনিন সরণি, এস এন ব্যানার্জি রোড,চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, কলেজ স্ট্রিট, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, এম জি রোড থেকে শুরু করে উত্তর ও মধ্য কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক হতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়।এ দিন মিছিল বেরোতেই ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিংয়ের চারপাশ গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে ফেলে পুলিশ। ফলে মৌলালি থেকে এস এন ব্যানার্জি রোড হয়ে ধর্মতলার দিকে আসার রাস্তায় গাড়ি চলাচল পুরোপুরি থমকে যায়। মিছিলের জন্য চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের দু’পাশের রাস্তা বাঁশ দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছিল। তার জেরে ধর্মতলা থেকে হাওড়াগামী যান চলাচলও মিছিল শুরু হতে স্তব্ধ হয়ে যায়।
সকালের মতো বিকেলেও বহু মানুষ যানজটের কবলে পড়ে বাস থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করেন। নদিয়ার বাসিন্দা রমেশ চক্রবর্তী শিয়ালদহে ট্রেন ধরার জন্য হেঁটেই রওনা হন। মিছিলের জন্য শ্যামবাজার থেকে বহু গাড়িকে এ পি সি রোডের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে ওই রাস্তাতেও গাড়ির চাপ বেড়ে গিয়ে যানজট দেখা দেয়। যানজট এড়াতে এ দিন অনেকে মেট্রোয় যাতায়াতের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু দুপুর তিনটের পরে ময়দান স্টেশনে সমস্যার জন্য পুরো পথে বেশ কিছু ক্ষণ মেট্রো পরিষেবা মেলেনি। তার জেরে ভোগান্তি আরও বাড়ে।
এ দিন আড়াইটে নাগাদ মিছিল শুরু হয়ে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পৌঁছতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লেগে যায়। মিছিল সেখানেপৌঁছনোর পরে শুরু হয় সভা। পুরো সময়েই উত্তর ও মধ্য কলকাতায় যান চলাচল ছিল বিপর্যস্ত। শ্যামবাজার থেকে ধর্মতলাগামী যান চলাচল পুরো বন্ধ থাকায় ঘুরপথে আসতে দীর্ঘক্ষণ সময় লাগে। যানজটের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে পার্ক সার্কাস চার নম্বর সেতু পর্যন্ত। তবে যানজটে একাধিক অ্যাম্বুল্যান্স আটকে গেলে পুলিশকে সেগুলির জন্য রাস্তা করে দিতে দেখা গিয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)