E-Paper

মর্গ থেকে দেহ উধাওয়ে দেখা হচ্ছে পুলিশের ভূমিকাও

বাড়িওয়ালাকে অ্যাসিড ছুড়ে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ১১ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ছিলেন হাওড়ার আমতার বাসিন্দা বাবলু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:১০
এসএসকেএমের মর্গ থেকে উধাও দেহ।

এসএসকেএমের মর্গ থেকে উধাও দেহ। —ফাইল চিত্র।

হাসপাতালের মর্গ থেকে এক সাজাপ্রাপ্ত বন্দির দেহ উধাও হওয়ার ঘটনায় পুলিশকর্মীদের ভূমিকাও এখন তদন্তকারীদের আতশকাচের নীচে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই মর্গে দেহ শনাক্ত করার ক্ষেত্রে হাসপাতালের ফাঁড়ির পুলিশকর্মীদের ভূমিকা থাকে। সেই কারণে এই ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত বন্দি বাবলু পোল্লের দেহ উধাওয়ের ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা ঠিক কী ছিল, সেটাও খতিয়ে দেখতে চান তদন্তকারীরা। তাই এসএসকেএম হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির যে সমস্ত কর্মী ঘটনার দিন ডিউটিতে ছিলেন, তাঁদের নামের তালিকা চেয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক তদন্তে হাসপাতালের মর্গের কর্মীদের গাফিলতিই সামনে এসেছে ওই দেহ উধাওয়ের ঘটনায়। সেই সঙ্গে পুলিশেরও কোনও রকম গাফিলতি ছিল কি না, সেটাই এখন খতিয়ে দেখা হবে বলে সূত্রের খবর।

প্রাথমিক গাফিলতির বিষয়টি সামনে আসার পরেই পুলিশের তদন্তকারীরা ওই মর্গের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক এবং কর্মীদের একাংশের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ ছাড়া, আরও যাঁরা ওই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, তাঁদের বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়েছে। এসএসকেএমের জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার ও মর্গের দায়িত্বে থাকা কর্মী-সহ বেশ কয়েক জনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, বাবলু পোল্লের চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি ও হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও হাসপাতাল এবং জেলের কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে। তবে, শনিবার বিকেল পর্যন্ত সেই নথি বা তথ্য পুলিশের কাছে জমা পড়েনি বলেই একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে।

বাড়িওয়ালাকে অ্যাসিড ছুড়ে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ১১ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ছিলেন হাওড়ার আমতার বাসিন্দা বাবলু। জেলের মধ্যে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে গত ২০ অক্টোবর এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁর দেহের স্থান হয় ওই হাসপাতালের মর্গে। এর পরে ২৩ অক্টোবর এসএসকেএমে বাবলুর দেহের ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের সুরতহাল করার সময়ে জানা যায়, দেহ মর্গে নেই। তাঁর পরিবারের তরফে ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে।

তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, মর্গ থেকেই অন্য এক জনের দেহের সঙ্গে বদল ঘটে গিয়েছে বাবলুর দেহের। এবং ওই মৃতের পরিবারের সদস্যেরা বাবলুর দেহ শনাক্ত করে নিয়ে গিয়ে দাহও করে দিয়েছেন। তবে, পুলিশি তদন্তে খুশি নন বাবলুর পরিবারের সদস্যেরা। তাঁরা বাবলু পোল্লের দেহের খোঁজ চেয়ে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শনিবার ওই পরিবারের আইনজীবী নবজ্যোতি রায় বলেন, ‘‘পুলিশ এখনও কিছুই করেনি। বাবলু পোল্লের দেহ কোথায় এবং কী অবস্থায় রয়েছে, তা আমরা জানতে চাই। তাঁর দেহের নিখোঁজ হওয়ার পিছনে প্রেসিডেন্সি জেল এবং হাসপাতালের ভূমিকা কী ছিল, তা তদন্ত করে দেখুক পুলিশ।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

SSKM PG Hospital

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy