Advertisement
E-Paper

প্রেসিডেন্সিতে সরস্বতী পুজো ঘিরে বিতণ্ডা! টিএমসিপির চ্যালেঞ্জ, ‘কেউ আটকাতে পারবে না’

প্রেসিডেন্সির দীর্ঘ ইতিহাসে এ যাবৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চত্বরে কখনও সরস্বতী পুজো হয়নি। কারণ হিসাবে কর্তৃপক্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ধর্মনিরপেক্ষতার কথাই বলে এসেছে বরাবর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:৫৭
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজোর অনুমতি চেয়ে গত বৃহস্পতিবার আবেদন করেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজোর অনুমতি চেয়ে গত বৃহস্পতিবার আবেদন করেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। ফাইল চিত্র।

সরস্বতী পুজোর চার দিন আগে পুজো নিয়ে বিতণ্ডায় জড়াল প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষাঙ্গনে পুজো নিয়ে কর্তৃপক্ষের আপত্তির মধ্যেই তৃণমূল ছাত্রপরিষদ জানিয়ে দিল, প্রেসিডেন্সিতে সরস্বতী পুজো তারা করবেই। তাদের হুঁশিয়ারি, ‘‘পুজো কেউ আটকাতে পারবে না।’’ অন্য দিকে, প্রেসিডেন্সিরই ছাত্রছাত্রীদের একাংশের বক্তব্য, তৃণমূল শিক্ষা প্রাঙ্গণে অযথা রাজনীতি এবং ধর্মকে ঢোকানোর চেষ্টা করছে, যা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

প্রেসিডেন্সির দীর্ঘ ইতিহাসে এ যাবৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চত্বরে কখনও সরস্বতী পুজো হয়নি। কারণ হিসাবে কর্তৃপক্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ধর্মনিরপেক্ষতার কথাই বলা হয়েছে বরাবর। কিন্তু প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ প্রশ্ন তুলেছে কর্তৃপক্ষের সেই যুক্তি নিয়েই। তাদের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটির সঠিক সাংবিধানিক অর্থ জানেন না। কারণ, তা জানলে তাঁরা এই যুক্তিতে দেখিয়ে পুজোয় বাধা দিতেন না। একটি ফেসবুক পোস্টে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ লিখেছে, ‘‘সংবিধানে বলা আছে, ধর্মনিরপেক্ষতা একটি অত্যন্ত ইতিবাচক বিষয়। ধর্মনিরপেক্ষ তাকেই বলা হয়, যেখানে প্রত্যেক ধর্মের মানুষ নিজের মতো আচার-অনুষ্ঠান-উৎসব পালন করতে পারবেন। ...কোথাও বলা নেই (ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ) কোনও মানুষ তাঁর নিজস্ব ধর্মীয় আচরণ পালন করতে পারবে না।’’

গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সরস্বতী পুজো করার অনুমতি চেয়ে প্রেসিডেন্সির ডিন অব স্টুডেন্টসের কাছে আর্জি পেশ করেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। চিঠিতে তারা জানিয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তারা এ বছর সরস্বতী পুজো করতে চায়। তার জন্য ২৫ থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণ ব্যবহারের অনুমতি চায় ছাত্র পরিষদ। চিঠিতে কী ভাবে গোটা বিষয়টি আয়োজন করা হবে তা-ও বিশদে বলা ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেই অনুমতি দেননি। তা নিয়েই ক্ষুব্ধ তৃণমূলে ছাত্র সংগঠন কর্তৃপক্ষকে পাল্টা প্রশ্ন করেছে, ‘‘ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষাঙ্গনের ধোঁয়াশা তৈরি করে কি আসলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাম ছাত্র সংগঠনের চাপের কাছে নতিস্বীকার করছেন?’’

এ ব্যাপারে বাম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর প্রসঙ্গ তুলে টিএমসিপির যুক্তি, ‘‘তারাপীঠে পুজো দিতে গিয়েছিলেন বলে তাঁকে সিপিএম দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।’’ দু’টি বিষয়কে জুড়ে টিএমসিপির মন্তব্য, ‘‘বাম একনায়কতন্ত্রের অত্যাচারকে আসলে কর্তৃপক্ষ ভয় পাচ্ছেন। এ রকম ভয় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু ছাত্রছাত্রীও অযথা পায়। তাদের প্রত্যেকের উদ্দেশে বলছি, ওদের দিন চলে গিয়েছে, আর ফিরবে না। ... প্রেসিডেন্সিতে সরস্বতী পুজো বহু প্রাক্তনীও চান। কিন্তু ওঁদের জন্য কেউ মুখ ফুটে বলতে পারেন না। তাঁদের প্রত্যেকের প্রতিনিধি হয়ে আমরা প্রেসিডেন্সির সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা জোর গলায় বলছি, টিএমসিপি সরস্বতী পুজো করে দেখাবে।’’

যদিও প্রেসিডেন্সির তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী বরিষন রায়ের কথায়, ‘‘তৃণমূল যা করছে, সেই একই কাজ করে বিজেপিও। তৃণমূল একটি রাজনৈতিক দল, তারা প্রেসিডেন্সিতে ধর্মকে টেনে এনে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্ম বা রাজনীতি কোনওটারই স্থান নেই। তা হলে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের তফাত কোথায় আর। আমরা জানি না পুজো হবে কি না। যদি হয়ও তবে আমাদের মতো অনেক ছাত্রছাত্রীই সেখানে যাবে না।’’

saraswati puja Presidency University
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy