Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Kolkata Bookfair

সপ্তাহান্তে ভিড়ের পরীক্ষায় পাশ করে গেল বইমেলা

মেলার এত ভিড়ে পুলিশের তৎপরতাও হাসি ফুটিয়েছে নিউ টাউনের দম্পতির মুখে। চার বছরের মূক-বধির একটি শিশু হারিয়ে গিয়েছে বলে পুলিশের কন্ট্রোল রুমে শনিবার জানিয়েছিলেন তাঁরা। সঙ্গে পুলিশের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বাচ্চাটির ছবি পাঠানো হয়। আ

n ভিড়াক্কার: বইমেলায় মানুষের ঢল। রবিবার, সল্টলেকে। ছবি: সুমন বল্লভ

n ভিড়াক্কার: বইমেলায় মানুষের ঢল। রবিবার, সল্টলেকে। ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৩৮
Share: Save:

যাকে বলে শুরুতেই ঝোড়ো ব্যাটিং। ৪৪তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার প্রথম সপ্তাহান্তে ভিড়ের বহর দেখে এমনটাই বলছেন উদ্যোক্তা থেকে পুলিশ। বছর দুয়েক আগে মিলনমেলার মাঠ থেকে বইমেলা দ্বিতীয় বার ঠাঁইনাড়া হওয়ার পরে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কায় ছিলেন পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের কর্তারা। সল্টলেকে কলকাতা বইমেলার তৃতীয় বছরে প্রথম সপ্তাহান্ত শেষে তাঁরা চওড়া হাসি হাসছেন।

বই কারবারিদের হিসেবে, সাধারণত মেলার প্রথম শনিবার সব থেকে বেশি বই বিক্রি হয়। এ বার শনি-রবি দু’দিনই লাফিয়ে লাফিয়ে ভিড়ের বহর বেড়েছে। শনিবার যা ভিড় হয়েছিল, রবিবারের ভিড় ঠিক তার দ্বিগুণ। গিল্ড-সভাপতি ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় এ দিন বিকেলে বলছিলেন, ‘‘মোটামুটি যা আঁচ পাওয়া গিয়েছে, শনিবার তিন লক্ষ লোক হলে, রবিবার সেটা পাঁচ লক্ষ হবে।’’ তবে ভিড়ের জেরে মেলার মাঠে নেট-সংযোগে সমস্যাও অব্যাহত। এর ফলে আবারও মুশকিলে পড়েছেন বইপ্রেমীরা। জনৈক প্রকাশক মারুফ হোসেনের অভিজ্ঞতা, ‘‘বিকেল সাড়ে চারটের পর থেকে ঘণ্টা তিনেক কার্ডে লেনদেন শিকেয় উঠেছিল।’’ তবু এই সমস্যা নিয়েও মেলার বিক্রিতে কম-বেশি খুশি অধিকাংশ বিক্রেতা। সল্টলেকের মাঠ কার্যত সবার মুখেই হাসি ফুটিয়েছে।

থিকথিকে ভিড়ের চোটে মেলার মাঠে দু’চার কদম এগোতেই পায়ে পায়ে ঠোক্কর। সন্ধ্যায় গিল্ডের অফিস থেকে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন পর্যন্ত হাঁটার পাঁচ-সাত মিনিটের রাস্তা যেতেই অন্তত আধ ঘণ্টার ধাক্কা। এই পরিস্থিতিতেই লাতিন আমেরিকার দেশগুলির দোকানে এ দিন মেক্সিকো এবং আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূতকে দেখা যায়। বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের কাছেই এশিয়াটিক সোসাইটির স্টল এ বার বিদ্যাসাগরময়। বিদ্যাসাগরের ২০০তম জন্মবর্ষে তাঁকে ঘিরে প্রদর্শনী। বিদ্যাসাগরের জীবন, লেখালেখি, বাংলা মুদ্রণ এবং বাংলা বইয়ের প্রসারে তাঁর

অবদানের কথা মেলে ধরা হয়েছে। এ দিনই বিকেলে একটি অনুষ্ঠানে এশিয়াটিক সোসাইটির তরফে প্রকাশ করা হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিদ্যাসাগর-চরিতের সাঁওতালি অনুবাদ। সোসাইটি কর্তৃপক্ষের মতে, বিদ্যাসাগর তাঁর শেষ জীবনের অনেকটা সময় জামতাড়ার কর্মাটাঁড়ে সাঁওতাল সমাজের মাঝে কাটালেও তাঁর সম্পর্কে সচেতনতা খুব বেশি ছড়িয়ে পড়েনি। তা ছাড়া, বাঙালি ও সাঁওতাল সমাজের মধ্যে সংস্কৃতির সেতু গড়তেও বিদ্যাসাগর একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র। আর বিদ্যাসাগরের ব্যক্তিত্ব আরও অনেকের মধ্যে মেলে ধরতে রবীন্দ্রনাথের বিদ্যাসাগর-চরিত প্রবন্ধটাই বিশেষ ভাবে উপযোগী। বাড়ো বাস্কের অনুবাদে সেই প্রবন্ধ এ দিন প্রকাশিত হয়েছে। অমিয়কুমার বাগচী, পবিত্র সরকার, সারদাপ্রসাদ কিস্কু, অর্চনা বন্দ্যোপাধ্যায়, মেরুনা মুর্মু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ দিনই গিল্ডকর্তারাও বইমেলায় শিশুদিবস পালন করেছেন। সেখানে বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়ের দু’টি খণ্ড এবং জীবন-চরিত বইগুলি এক মলাটে ছাপিয়ে ৫০০ জন শিশুকে দেওয়া হয়েছে।

মেলার এত ভিড়ে পুলিশের তৎপরতাও হাসি ফুটিয়েছে নিউ টাউনের দম্পতির মুখে। চার বছরের মূক-বধির একটি শিশু হারিয়ে গিয়েছে বলে পুলিশের কন্ট্রোল রুমে শনিবার জানিয়েছিলেন তাঁরা। সঙ্গে পুলিশের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বাচ্চাটির ছবি পাঠানো হয়। আধ ঘণ্টার মধ্যে বাচ্চাটিকে খুঁজে পায় পুলিশ। আপাতত বইমেলায় ভালর দিকেই পাল্লা ঝুঁকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Book fair Kolkata Bookfair 2020
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE