ফাইল চিত্র।
কিছুতেই সারছে না রোগ! ফের কোর্স ফি-তে ছাড়ের নামে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠল আশুতোষ কলেজে। এ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে ওই কলেজের একটি ফোরামের তরফে। যদিও চিঠিতে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে প্রেরকের নাম দেওয়া হয়নি।
গত বছরের মে মাসেও একই অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রী ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দফতরে বেনামী চিঠি গিয়েছিল। তখনও প্রেরক পরিচয় গোপন রেখেছিলেন। সে সময়ে ওই চিঠি নিয়ে মন্তব্য না করলেও শিক্ষামন্ত্রী কলেজকে সতর্ক করেছিলেন। তার পরেও ছাড় নিয়ে দুর্নীতি বন্ধ হয়নি বলে পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ। পার্থবাবুর বক্তব্য, ‘‘নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে অবশ্যই ধরব। সে আশুতোষ হোক বা অন্য কলেজ। এ জিনিস চলতে
দেওয়া যায় না।’’ আগের বার তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করলেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। সে প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন সমস্যা মেটেনি, দেখছি।’’
ক্যাম্পাস সূত্রের খবর, আশুতোষ কলেজে মাইক্রোবায়োলজি, সাংবাদিকতা, কম্পিউটার সায়েন্স এবং ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (বিবিএ) কোর্স করানো হয়, যার গোটা খরচই দিতে হয় পড়ুয়াদের। কলেজ সূত্রে খবর, কোনও পড়ুয়া আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ ঠিক করেন, তাঁকে কত শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। মাইক্রোবায়োলজি, বিবিএ, কম্পিউটার সায়েন্স ও সাংবাদিকতা পড়ার বছরে খরচ যথাক্রমে ৩৩৫১০ টাকা, ৪০০১০ টাকা, ২৭৫১০ টাকা এবং ২১৫১০ টাকা। ওই কোর্সের পড়ুয়াদেরই ছাড় দেওয়ার নামে ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিরা আর্থিক দুর্নীতি করছেন বলে অভিযোগ।
সাংবাদিকতার তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর দাবি, দ্বিতীয় বর্ষে ভর্তি শুরুর মুখে ছাত্র সংসদের এক সদস্য তাঁকে জানান, ১৫ হাজার টাকা এবং ‘ফিজ বুক’ দিলে তিনি বাকি টাকা মকুব করিয়ে দেবেন। সেই মতো টাকা ও ‘ফিজ বুক’ দেন ওই ছাত্রী। অভিযোগ, ‘ফিজ বুক’ ফিরে পেয়ে তিনি দেখেন, মাত্র ৬৫১০ টাকা জমা করা হয়েছে তাঁর নামে। বাকি ১৫ হাজার টাকা কলেজ ‘ছাড়’ দিয়েছে। অথচ, তাঁর থেকে ওই ছাত্র নিয়েছিলেন ১৫ হাজারই। এর পরে বাকি টাকা
ফেরত চাইতে গেলে তাঁকে কলেজে ঢুকতে না দেওয়ার ও পড়াশোনা শেষ করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
ওই ছাত্রীর অভিযোগ, ‘‘১৫ হাজার টাকা থেকে প্রায় সাড়ে আট হাজার টাকা ওই দাদা নিয়েছেন। কাউকে জানালে পড়াশোনা শেষ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ইউনিয়নের দাদারা। বলা হয়, আগে শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছে অনেকেই। কিছু লাভ হয়নি। ভয়ে তাই বলিনি।’’ অধ্যক্ষ দীপক কর বলেন, ‘‘আমি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব (সহ-উপাচার্য, শিক্ষা) নিয়েছি। তাই কিছু বলতে পারব না।’’ কলেজের সহ-অধ্যক্ষ অপূর্ব রায় বলেন, ‘‘আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেননি। ছাত্রেরা সরাসরি আসছেন না কেন?’’
কম্পিউটার সায়েন্সের এক ছাত্র জানান, তাঁর সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছিল। তাঁর দাবি, বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানাতে গেলে তাঁকে বলা হয়,
নিজে না গিয়ে তিনি ছাত্র সংসদের মাধ্যমে ‘ছাড়’ করিয়েছেন কেন! ক্যাম্পাস সূত্রের খবর, ছাত্র সংসদের মাধ্যমে ছাড়ের আবেদন না করলে পড়ুয়াদের কাগজ জমা নেন না কর্তৃপক্ষ। সেই সুযোগেই চলে দুর্নীতি। কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক পৌলমী সামন্ত বলেন, ‘‘কোনও পড়ুয়া ছাড় চাইলে তাঁর নথি দেখে তবেই তা দেওয়া হয়। এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy