Advertisement
২৯ মার্চ ২০২৩
Kolkata International Book Fair

‘চলছে লাকি ড্র, কুপনে নাম এবং ফোন নম্বর লিখুন’, প্রতারণার নতুন ফাঁদ বইমেলাতেও

গত রবিবার থেকে বুধবারের মধ্যে এমন অন্তত ৪০টি অভিযোগ পৌঁছেছে কলকাতা পুলিশ ও বিধাননগর কমিশনারেটের কাছে। খোয়া গিয়েছে সাড়ে আট লক্ষ টাকা।

A Photograph of Kolkata International book Fair

বইমেলা চত্বর থেকে নাম, ফোন নম্বর নিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হচ্ছে। ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:১২
Share: Save:

চলছে লাকি ড্র। দারুণ সব উপহার রয়েছে! — বইমেলার প্রবেশপথের মুখে পথ আটকে কথাগুলো বলছেন কেউ না কেউ। জানানো হচ্ছে, ইমেল আইডি বললে খুব ভাল হয়। নয়তো নাম, ফোন নম্বর দিলেই হবে। কুপনে সে সব লিখে বলা হবে, অপেক্ষা করুন। উপহার জিতলে জানানো হবে ফোনে বা ইমেলে। আগ্রহী হলে তো কথাই নেই, না হলেও অনেকেই দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন। কারণ, যিনি পথ আটকে কথাগুলো বলছেন, শুধু তাঁর উপরে মায়া হচ্ছে বলে! ভাবছেন, সকাল থেকে দাঁড়িয়ে একই কথা লোক ধরে ধরে বলে যেতে হচ্ছে। নাম আর নম্বরটা দিয়েই দিই!

Advertisement

কিন্তু সাবধান! এ ভাবে নাম, ফোন নম্বর বা ইমেল আইডি-র মতো ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে দিলে বড় বিপদে পড়তে হতে পারে। শপিং মল, বাজার এলাকা বা মেলা চত্বর থেকে জোগাড় করা সাধারণ মানুষের এই সব তথ্যই এর পরে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে জামতাড়া-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা প্রতারকদের কাছে। ওই সব তথ্য ব্যবহার করেই হাতিয়ে নেওয়া হতে পারে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকাকড়ি অথবা নিজের অজানতেই ঘাড়ে চাপতে পারে মোটা টাকার ঋণের বোঝা। নয়তো করা হতে পারে ব্যক্তিগত তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ‘ব্ল্যাকমেল’।

এই নিয়ে এ বার দ্রুত প্রচারে নামতে চলেছে পুলিশ। কারণ, বইমেলা চত্বর থেকে এ ভাবেই নাম, ফোন নম্বর নিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হচ্ছে বলে খবর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার থেকে বুধবারের মধ্যে এমন অন্তত ৪০টি অভিযোগ পৌঁছেছে কলকাতা পুলিশ ও বিধাননগর কমিশনারেটের কাছে। খোয়া গিয়েছে সাড়ে আট লক্ষ টাকা। ফোন করে কাউকে বলা হয়েছে, বইয়ে দারুণ ছাড় রয়েছে। একটি নির্দিষ্ট কিউআর কোড স্ক্যান করলেই হবে। প্রকাশনা সংস্থার লোকজনকে কিছু বলারও প্রয়োজন নেই। বইয়ের দাম জেনে নিয়ে আগে থেকে পাঠানো কিউআর কোডটি স্ক্যান করলেই ওটিপি পাওয়া যাবে ফোনে। তা নির্দিষ্ট জায়গায় বসিয়ে দিলেই হবে।

এক দম্পতিকে আবার ফোন করে জানানো হয়, ভ্রমণ সংস্থার লটারিতে পুরস্কার জিতেছেন তাঁরা। ফোনে জানানো ঠিকানায় যেতেই তাঁদের হাতে মাঝারি মাপের একটি উপহারের প্যাকেট তুলে দেওয়া হয়। বলা হয়, এটা নিছকই নিয়মরক্ষা। আসলে তাঁরা পাচ্ছেন বিশেষ বেড়ানোর প্যাকেজ! পাঁচতারা বন্দোবস্ত। আলাদা খরচ লাগবে না। সবই ওই প্যাকেজে। ৭০ হাজার টাকার ওই প্যাকেজ নেওয়ার পর থেকে ভ্রমণ তো দূর, সংস্থার কাউকেই দেখতে পাননি তাঁরা।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, দেশ জুড়ে ব্যক্তিগত তথ্য লেনদেনের এমনই কারবার চলছে। সংগ্রহ করা ফোন নম্বর তথ্যভান্ডার হিসাবে বিক্রি হচ্ছে। শুধু মোবাইল নম্বরই নয়, টাকা দিতে পারলে মিলছে কারও ইমেল আইডি, আধার বা ভোটার কার্ডের নম্বরও। তা হলে উপায়? পুলিশের দাবি, প্রতারকদের ধরার চেষ্টা চলছে। মানুষকেও ফোন নম্বর-সহ ব্যক্তিগত তথ্য বিলোনো বন্ধ করতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.