Advertisement
E-Paper

নাম সুজেট জর্ডন: পার্ক স্ট্রিটের নিগৃহীতা নয়

এই রায় নিয়ে বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা নতুন করে জ্ঞাপন করার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজন পুলিশি তদন্তের প্রতি, তদন্তকারী দলের প্রধান দময়ন্তী সেনের প্রতি আস্থা জানানো।

শাশ্বতী ঘোষ

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৯:৪৩

সুজেট জর্ডনের ধর্ষণকারীদের তিন জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত-সহ আরও এক জন এখনও পলাতক। কাল হবে শাস্তির ঘোষণা। পার্কস্ট্রিটের নির্যাতিতা বলে পরিচিত হতে বড় আপত্তি ছিল তাঁর। পরিচয়হীন, শুধু স্থাননামে ‘নিগৃহীতা’ বলে কোনও লেবেল এঁটে বসুক চাননি তিনি। তাই একটি টিভি শোতে বলেছিলেন আলো জ্বালিয়ে দিতে, তিনি কেন মুখ লুকিয়ে থাকবেন? তাঁর তো কোনও লজ্জা নেই, লজ্জা হবে তো যারা নিগ্রহ করেছে তাদের। শুধু প্রশ্ন তোলার সাহস দেখানো নয়, নিগৃহীতা মেয়েদের পাশেও থেকেছিলেন, গিয়েছিলেন কামদুনিতে, হেঁটেছিলেন নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে মিছিলে।

কামদুনি-কাটোয়া-পার্কস্ট্রিট। নিগ্রহের তালিকায় পর পর স্থাননাম। মেয়েরা নিগৃহীতা হয়েছেন, বিচার করে রায়ের আগে রায় দিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। কাটোয়ার ঘটনায় আদালতের রায়ে যখন তিন জন অভিযুক্ত বেকসুর খালাস পেয়ে গেল, কামদুনি আর পার্কস্ট্রিটের বিচারক বদল হল, তখন আমরা এক বুক আশঙ্কা নিয়ে তাকিয়েছিলাম মানবাধিকার দিবস পার্কস্ট্রিটের ঘটনায় কী রায় নিয়ে আসে। বিশেষত সংবাদমাধ্যমে আসছিল যে, পলাতক মূল অভিযুক্ত সমস্ত সহায়তা পাচ্ছে এই শহর থেকেই। তাই এই রায় আমাদের আশ্বস্ত করেছে, আরও এক বার বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা ফিরে এল, বিশেষত সলমন খানের মতো লোকেরা যখন হত‌্যা করার অভিযোগ থেকে এই বিচারব্যবস্থার সাহায্যেই শাস্তির হাত থেকে বেঁচে যায়, তখন এই অনাস্থা আরও গভীর হয়।

এই রায় নিয়ে বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা নতুন করে জ্ঞাপন করার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজন পুলিশি তদন্তের প্রতি, তদন্তকারী দলের প্রধান দময়ন্তী সেনের প্রতি আস্থা জানানো। অভিযুক্তরা যে নতুন, হঠাৎ ঝোঁকের মাথায় দল বেঁধে অপরাধ করে ফেলা গোষ্ঠীর নয়, তা বোঝা যায় তাদের কর্ম পদ্ধতি দেখে। নিজেদের নাম গোপন করে, যাদের উপর রাগ রয়েছে এমন মানুষের পরিচয় দিয়ে যেচে আলাপ করে দল বেঁধে ধর্ষণ করার মধ্যে স্পষ্ট পূর্ব পরিকল্পনা রয়েছে। তাই আশঙ্কা হয়, নাইট ক্লাব সার্কিটে তারা হয়ত এ রকম অপরাধ আগেও করেছে, ধরা পড়েনি। অন্তত এই ঘটনায় যে এরা ধরা পড়ল, তাতে কী বাকি শিকার-খোঁজা সম্ভাব্য অন্য অপরাধীদের কাছে কোনও বার্তা যাবে?

আর শেষে, আমরা কী কিছু শিখব এই পুরো ঘটনা থেকে? মূল অভিযুক্তের ও অন্য অপরাধীটির এতগুলো বছর ধরে লুকিয়ে থাকার রসদ পেতে কোনও অসুবিধা হয়নি। কিন্তু আমরা— নাগরিক সমাজ, প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা কী করে বেঁচে যাওয়া নিগৃহীত নারী-পুরুষকে সহায়তা দিতে পারি, তা নিয়ে কী ভাবে ভাবতে পারি? আরও একটু সহায়তা পেলে, আর্থিক বা অন্য পরিচিতি থাকলে কী সুজেট একটু আগে একটু ভাল চিকিৎসার সুযোগ পেতে পারতেন? তাহলে কী এই রায় দেখার জন্য আশায় বুক বেঁধে আজও বেঁচে থাকতেন?

she is sujet jordon Rape
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy