Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কাঁটা তুলতে দিদির ভরসা বৌদি,অন্য জন অন্তরালেই

অন্তরাল ভেঙে এক বৌদি আবার রাজনীতির ময়দানে। সেই ময়দান ছেড়ে আর এক বৌদি আপাতত অন্তরালে। বিধানসভা উপনির্বাচনে কলকাতার চৌরঙ্গি এ বার দুই বৌদির আসা-যাওয়ার সাক্ষী। তৃণমূল প্রার্থী তথা লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী নয়না প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে ফিরছেন উপনির্বাচনের পথ ধরে। আর যে বৌদির সরে যাওয়ায় এই উপনির্বাচন, সেই শিখা মিত্র এ বার ভোটের প্রচারেও নেই।

সঞ্জয় সিংহ
শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৪ ০২:২১
Share: Save:

অন্তরাল ভেঙে এক বৌদি আবার রাজনীতির ময়দানে। সেই ময়দান ছেড়ে আর এক বৌদি আপাতত অন্তরালে।

বিধানসভা উপনির্বাচনে কলকাতার চৌরঙ্গি এ বার দুই বৌদির আসা-যাওয়ার সাক্ষী। তৃণমূল প্রার্থী তথা লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী নয়না প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে ফিরছেন উপনির্বাচনের পথ ধরে। আর যে বৌদির সরে যাওয়ায় এই উপনির্বাচন, সেই শিখা মিত্র এ বার ভোটের প্রচারেও নেই।

তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ সোমেন মিত্রের স্ত্রী শিখাদেবী ছিলেন চৌরঙ্গির বিধায়ক। দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করায় শিখাদেবীকে তৃণমূল নেতৃত্ব সাসপেন্ড করেছিলেন। সোমেনবাবু দল ছেড়ে কংগ্রেসে ফিরেছেন। লোকসভা ভোটে সোমেনবাবু হেরেছেন সুদীপবাবুর কাছে। আর তার পরে শিখাদেবী দল তো ছাড়েনই, বিধায়ক পদেও ইস্তফা দেন। তাই এই অকাল ভোট।

প্রায় আট বছর বাদে সংসদীয় রাজনীতিতে ফিরছেন নয়না। যে বৌবাজার থেকে শিখাদেবী প্রথম বিধায়ক হয়েছিলেন, অভিনেত্রী নয়নাও সেখান থেকে প্রথম বিধানসভায় গিয়েছিলেন। এ বারের লোকসভা ভোটের আগে সুদীপবাবুর প্রচারের প্রথম পর্বে নয়নাকে দেখা যায়নি। প্রচণ্ড গরমে চরকি পাক খেয়ে ঘরে ফেরা স্বামীর পরিচর্যাতেই তিনি ব্যস্ত থাকতেন। পরে অবশ্য সুদীপের সঙ্গে প্রচারে নয়না ছিলেন। এ বার উপনির্বাচনে গিন্নির সঙ্গে প্রচারে বেরিয়েছেন কর্তা।

নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়

শিখা মিত্র

শিখাদেবীকে কংগ্রেস তো বটেই, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পর্যন্ত চৌরঙ্গির উপনির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি রাজি হননি। কেন হননি, তার কারণ জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি যদি দাঁড়াতাম, তা হলে অনেক রক্তক্ষয় হতো। অনেক মায়ের কোল খালি হত। কারণ আমার প্রধান প্রতিপক্ষ দল (তৃণমূল) প্রতিহিংসাপরায়ণ।” তৃণমূল প্রার্থী নয়না অবশ্য শিখাদেবীর এই বক্তব্যকে কোনও গুরুত্ব দেননি। তাঁর কথায়, “যিনি লড়াইতেই নেই, তাঁর কথার কী উত্তর দেব?”

প্রার্থী না হলেও প্রচারে কেন যাচ্ছেন না তা নিয়ে শিখাদেবীর জবাব, “রাজনীতি থেকে আমি এখন শত হস্ত দূরে। কারণ মানুষ ঠকানোর রাজনীতি আমি করতে পারব না।” চৌরঙ্গিতে কংগ্রেস প্রার্থী সন্তোষ পাঠক অবশ্য বলেছেন, “প্রচারে বৌদি নেই। কিন্তু দাদা থাকবেন।” আজ, রবিবারই চৌরঙ্গির ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে সোমেনবাবুর নেতৃত্বে পদযাত্রার কর্মসূচি আছে বলে সন্তোষ জানিয়েছেন। তবে শিখাদেবীর প্রচারে না থাকাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি প্রার্থী রীতেশ তিওয়ারি। প্রচারে তিনি বলছেন, “শিখাদেবী মাঝপথে পদত্যাগ করায় এই ভোট হচ্ছে। এর জন্য অযথা সরকারি টাকা খরচ হচ্ছে।” রীতেশের স্ত্রী হেমা অবশ্য প্রচারে নেই। কেন নেই? হাসতে হাসতে রীতেশ বলেন, “হেমা এক্কেবারে গৃহবধূ। ও প্রচারে এলে দু’টো বাচ্চা কে সামলাবে?”

শিখাদেবী ময়দানে না থাকায় তিনি বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন কি? প্রায় ফুৎকারে প্রশ্ন উড়িয়ে নয়নার জবাব, “আমার দলের নাম তৃণমূল। সরকার মা-মাটি-মানুষের। আমি শক্তপোক্ত জমির উপর দাঁড়িয়ে লড়াই করছি।”

এখন দেখার চৌরঙ্গিতে এ বারও ‘বৌদি-আধিপত্য’ বজায় থাকে কি না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE