Advertisement
E-Paper

ফের ফানুস রানওয়েতে, ত্রস্ত কর্তারা

পরপর এমন ঘটায় শঙ্কিত বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এ বার উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক ও বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:২০
এ ভাবেই দীপাবলির আকাশ ভরেছিল ফানুসে। —ফাইল চিত্র।

এ ভাবেই দীপাবলির আকাশ ভরেছিল ফানুসে। —ফাইল চিত্র।

গত শনিবার, ২১ অক্টোবরের পরে আবার ফানুসের দেখা মিলল বিমানবন্দরে, বৃহস্পতিবার সকালে। সে দিনও যেমন একটি ফানুস উড়ে এসে নেমেছিল কলকাতা বিমানবন্দরের রানওয়েতে, এ দিনও ঠিক তেমনই ঘটনা ঘটেছে। ফের একটি ফানুস পাওয়া গিয়েছে রানওয়ে থেকে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বুধবার রাতে আশপাশের কোনও অঞ্চলে ওই ফানুসটি ওড়ানো হয়েছিল বলেই ধারণা কর্তৃপক্ষের।

পরপর এমন ঘটায় শঙ্কিত বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এ বার উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক ও বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন। শুক্রবার পাঠানো সেই চিঠিতে শুধু বিমান ও যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বলা হয়নি, সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে, কলকাতা বিমানবন্দর চত্বরে তিনটি তেল সংস্থার ডিপো রয়েছে। কোনও ভাবে সেখানে আগুনের একটি ছোট ফুলকি চলে গেলেও, তা থেকে ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ কাণ্ড। এ ভাবে বিমানবন্দরের আশপাশের এলাকা থেকে যাতে ফানুস ছাড়া না হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে পুলিশকে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এয়ার ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্ট (এটিএম)-এর জেনারেল ম্যানেজার বরুণকুমার সরকারের লেখা এই চিঠিতে বলা হয়েছে, গত এক সপ্তাহে বিমানবন্দরের চৌহদ্দির মধ্যে বেশ কিছু ফানুস দেখা গিয়েছে। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে যে বিমান ওঠা-নামা করে, তাদের কাছে এই ফানুস দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। দু’দিন আগে পাইলটদের অনেকেই এই ফানুস নিয়ে এয়ার ট্র্যাফিক
কন্ট্রোলের (এটিসি) কাছে অভিযোগ করেছেন। বরুণবাবুর কথায়, ‘‘কলকাতায় নামার আগে বিমানবন্দরের ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার দূর থেকে বিমান নেমে আসে দু’হাজার ফুটে। গতি কমিয়ে অনেক পারদর্শিতায় বিমান নামিয়ে আনা হয়। এই সময়ে বা কলকাতা থেকে টেক অফ করার সময়ে কোনও ভাবে সেই ফানুস যদি ইঞ্জিনে ঢুকে যায়, তা হলে বড় সমস্যা হতে পারে।’’

গত রবিবার রানওয়েতে ফানুস উড়ে আসা ঘটনার পরে সিনিয়র প্রশিক্ষক পাইলট জয়দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ফানুসে যে লোহার তার থাকে, তা ইঞ্জিনের ভিতরে ঢুকে গেলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে ইঞ্জিন। তিনি বলেন, বিমান নামা-ওঠার সময়ে আচমকা একটি ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলে নানা ধরনের বিপদ ঘটতে পারে।

এ ছাড়াও, বিমানবন্দরের চৌহদ্দির মধ্যে তিনটি সংস্থার তেলের ডিপো রয়েছে। সেখান থেকে বিমানে জ্বালানি ভরা হয়। বিমানবন্দরের কর্তাদের আশঙ্কা, এমন নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে ছাড়া ফানুস থেকে যদি আগুনের ফুলকি এসে তেলের ডিপোয় পড়ে, তবে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।

কলকাতা বিমানবন্দরে সব বিমানসংস্থাকে নিয়ে গঠিত ‘এয়ারলাইন্স অপারেটিং কমিটি’-র চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন সর্বেশ গুপ্তও জানিয়েছিলেন, নিয়ম মেনেই ফানুস ব্যবহার করা উচিত বিমানবন্দরের আশপাশে থাকা মানুষদের। এই নিয়ম অনুযায়ী, কোনও বিমানবন্দরের ৫ মাইল (প্রায় ৮ কিলোমিটার) ব্যাসার্ধের মধ্যে ওই ফানুস ওড়ানো যাবে না। কলকাতা বিমানবন্দরের ৮ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ ধরলে তার মধ্যে পড়ে বাগুইআটি, কেষ্টপুর, লেকটাউন, বিরাটি, গঙ্গানগর, সল্টলেক, রাজারহাট-সহ এক বিশাল এলাকা। এই অঞ্চলের প্রায় পুরোটাই বিধাননগর পুলিশের আওতাধীন। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক অন্তরা আচার্যর সঙ্গে এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। বিমানবন্দর যেহেতু বিধাননগর কমিশনারেটের অধীনে, বিষয়টি নিয়ে ওই কমিশনারেটের পুলিশকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’’

Sky Lantern
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy