ভিড়ের চাপ বাড়লেই জেটিঘাটে, বিশেষত জেটির গ্যাংওয়েতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। তাই এ বার স্মার্ট গেটের সাহায্যে যাত্রী নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে কলকাতা সংলগ্ন হুগলি নদীর ৪৪টি জেটিতে। ওই সব জেটির নিরাপত্তার ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের ১৬ দফা দাওয়াইয়ের অন্যতম এই স্মার্ট গেট। ষোড়শ সুপারিশের উপচারেই জেটিগুলিকে নয়া সাজ পরাচ্ছে পরিবহণ দফতর।
ওই দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এর আগে দুর্ঘটনা আটকাতে জেটিগুলির জন্য একটি ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ বা এসওপি তৈরি করা হয়েছিল। প্রতিটি জেটিকে এসওপি তৈরির জন্য ১০ লক্ষ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। সেই টাকা খরচের সবিস্তার হিসেব দিলে বাকি পাঁচ লক্ষ টাকাও দেওয়া হবে। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই এসওপি-র সঙ্গেই কলকাতা পুলিশের দেওয়া সুরক্ষা সংক্রান্ত দাওয়াইয়েরও ব্যবস্থা করা হবে।’’ ওই ৪৪টি জেটি রয়েছে কলকাতা রিভার ট্রাফিক পুলিশের অধীনে।
দাওয়াইগুলো ঠিক কী রকম?
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, জেটিগুলিতে স্মার্ট কার্ড এবং কম্পিউটারাইজড টিকিট ব্যবস্থা চালু করার পরামর্শ দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। সেই জন্য প্রতিটি জেটিতে কম্পিউটারাইজড টিকিট কাউন্টার এবং ভেন্ডিং মেশিন চালু করতে হবে। স্মার্ট গেটে যাত্রী-গণনার ব্যবস্থা থাকা চাই, যাতে কোনও সময়েই স্মার্ট গেট দিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী গ্যাংওয়েতে ঢুকতে না-পারে। রাখতে হবে গ্যাংওয়েতে ঢোকা-বেরোনোর পৃথক রাস্তাও। স্মার্ট কার্ড দিয়ে প্রবেশ ও প্রস্থানের জন্য চারটি করে মোট আটটি গেট রাখতে হবে। পুলিশের বক্তব্য, গ্যাংওয়েতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা সব চেয়ে বেশি বলে যাত্রীদের অপেক্ষার জন্য গ্যাংওয়ের আগেই অন্তত ৫০ ফুট জায়গা রাখতে হবে। সেখানে রাখতে হবে ছাউনি, পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য শৌচাগার, পানীয় জলের ব্যবস্থা ইত্যাদি।
নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রতিটি জেটিতে অন্তত আটটি ক্যামেরা লাগাতে হবে। বেশি রাত পর্যন্ত জলপথ পরিবহণ ব্যবস্থা চালু রাখতে জেটিতে প্রচুর পরিমাণে আলোর ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। নদীর পাড় থেকে ৫০ মিটার পর্যন্ত এলাকা যাতে দেখা যায়, সেই অনুযায়ী আলোর ব্যবস্থাও রাখা উচিত বলে মনে করছেন পুলিশকর্তারা। জেটি অনেক সময়েই ভিজে থাকে। তাই গ্যাংওয়ে এমন করতে হবে, যেখানে যাত্রীরা পা পিছলে পড়ে না-যান। পন্টুনের মুখ ছাড়া বাকি তিন দিক ঘিরে রাখতে হবে। জেটিতে রাখতে হবে ঘোষণার উপযুক্ত ব্যবস্থা, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র এবং ‘লাইফ সেভিং’ বা জীবনদায়ী সরঞ্জাম। জেটির মুখেই রাখতে হবে ডিসপ্লে বোর্ড। তাতে জোয়ার-ভাটা থেকে যাত্রিবাহী নৌকা ছাড়ার সূচি— সবই থাকবে। রাখতে হবে বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy