Advertisement
E-Paper

পুলিশের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে চাকরি হারানো শিক্ষকদের একাংশ, রুজু মামলা

আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, শাসকদলের সমর্থকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করে পুলিশ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয় হয়ে উঠেছে। দুই শিক্ষক নেতা ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল এবং সুদীপ কোনারকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৫ ১২:৩৮
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়।

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়। — ফাইল চিত্র।

পুলিশের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন বিকাশ ভবনের সামনে আন্দোলনকারী চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। সোমবার ওই শিক্ষকদের মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে আদালত। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানান, আগামী বুধবার মামলার শুনানি হতে পারে।

বিক্ষোভকারী শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে তাঁদের মারধর করেছেন তৃণমূল সমর্থকেরা। তাঁদের বক্তব্য, শাসকদলের সমর্থকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করে পুলিশ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয় হয়ে উঠেছে। দুই শিক্ষক নেতা ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল এবং সুদীপ কোনারকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। তাঁদের অভিযুক্ত হিসাবে নোটিস পাঠিয়েছে পুলিশ। বিধাননগর থানায় তলব করা হয়েছে কয়েক জন আন্দোলনকারী শিক্ষককে। শিক্ষকদের একাংশকে মামলা দায়ের করতে অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট।

বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করছেন চাকরিহারা শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাঁরা চাকরি হারিয়েছেন। ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যোগ দিয়েছিলেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার এই আন্দোলনস্থলে ধস্তাধস্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়। আন্দোলনকারীদের উপর লাঠি চালানোর অভিযোগ ওঠে পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে। এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার পরে সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘‘পুলিশ প্রথম থেকেই সংযত ছিল। সাত ঘণ্টা পুলিশ আন্দোলনকারীদের কিছু বলেনি। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার অধিকার সকলের রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা নষ্ট হলে পুলিশকে পদক্ষেপ করতেই হয়। তবে পুলিশ অনেক ধৈর্য ধরেছিল।’’

আন্দোলনকারী ১৭ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয় বিধাননগর উত্তর থানায়। তাঁদের তলব করে থানায় হাজিরা দিতে বলা হয়। সোমবার ছ’জন আন্দোলনকারীকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে থানায়। কাউকে কাউকে বুধবার থানায় হাজির দিতে বলা হয়েছে। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, ভাঙচুর, সরকারি কর্মীদের কাজে বাধাদান-সহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। তাঁদের নোটিস পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, এই অভিযোগ নিয়ে আন্দোলনকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। থানায় উপস্থিত না হলে বিএনএসের ৩৫(৬) ধারায় তাঁদের গ্রেফতার করা হতে পারে বলেও জানায় পুলিশ। আন্দোলনকারী এবং শিক্ষকদের সংঘাতের প্রসঙ্গে সোমবার দিল্লি যাওয়ার আগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আন্দোলন করার অধিকার সকলের রয়েছে। কিন্তু সেই আন্দোলন হিংসাত্মক হলে তার সারমর্ম হারিয়ে যায়।’’ তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে, কোনও আন্দোলনকেই তিনি ছোট করতে চান না। আন্দোলন রাজনীতির রঙে রাঙানো হোক, তা-ও চান না। তাঁর কথায়, ‘‘আন্দোলনকারীদের কাছে আমার আর্জি, আন্দোলন যেন হিংস্র না হয়।’’ গান্ধীজির অহিংসার কথাও তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ১০০ দিনের কাজের টাকা চেয়ে দিল্লি গিয়েছিলেন। সেখানে মহিলাদের হেনস্থা করা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও হিংসার পথ নেননি তিনি। কলকাতা ফিরে রাজভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। তিনি বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।


অন্য দিকে, সপ্তাহের প্রথম দিন, সোমবার যাতে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি না হয়, তার জন্য বিকাশ ভবনের সব ফটকে পুলিশি প্রহরা বৃদ্ধি করা হয়েছে। মূল ফটক বন্ধ। পাশের ছোট ফটক দিয়ে পরিচয়পত্র দেখিয়ে দফতরে প্রবেশ করেন কর্মীরা। ভিজ়িটরদেরও আসার কারণ এবং বৈধ কাগজ দেখিয়ে ঢুকতে হচ্ছে। শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জের প্রতিবাদে সোমবার রাজ্য জুড়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে এআইডিএসও। সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান করছেন সমর্থকেরা। তাঁদের অভিযোগ, কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারীদের উপর হামলা চালিয়েছেন তৃণমূল সমর্থকেরা।

Calcutta High Court police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy