Advertisement
E-Paper

লড়াই না ছাড়ার জেদেই সুবিচার পেলেন ওঁরা

অগ্রিম টাকা দিয়েও পরিষেবা বা জিনিস না পাওয়ায় হামেশাই মামলা হয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে। কিন্তু সিংহভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মামলাকারীকে ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে গড়িমসি করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থা।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৯ ০১:০৯

অগ্রিম টাকা দিয়েও পরিষেবা বা জিনিস না পাওয়ায় হামেশাই মামলা হয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে। কিন্তু সিংহভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মামলাকারীকে ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে গড়িমসি করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থা। অথচ সেই ‘অপরাধে’ তাদের শাস্তিও হয় না। পরিচিত এই ছবিটা এ বার কিছুটা হলেও বদলাচ্ছে। যার মূলে রয়েছে শহরের বেশ কয়েক জন বাসিন্দার হার না-মানা মানসিকতা। এঁরা অগ্রিম টাকা দিয়েও ফ্ল্যাট না পেয়ে সংশ্লিষ্ট প্রোমোটারের বিরুদ্ধে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। দীর্ঘ কয়েক বছর আইনি লড়াই চালিয়ে আপাতত কিছুটা স্বস্তিতে তাঁরা। ক্ষতিপূরণ না দেওয়ায় আদালত দুই প্রোমোটারকে জেলে পাঠিয়েছে। আর অভিযোগকারীকে মোটা টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে শর্ত সাপেক্ষে জামিন পেয়েছেন অন্য দু’জন প্রোমোটার।

যেমন বাগুইআটির বাসিন্দা কাঞ্চনকুমার রায় ও পুষ্পা মিত্রচৌধুরী নিজেদের জমিতে ফ্ল্যাট তৈরি করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন স্থানীয় প্রোমোটার জয়ন্তকুমার সিংহের সঙ্গে। কিন্তু অভিযোগ, ফ্ল্যাট তৈরি হয়ে গেলেও সেখানে কাঞ্চনবাবু ও পুষ্পাদেবী জায়গা পাননি। বাধ্য হয়ে তাঁরা যান ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে। আদালত প্রোমোটারকে নির্দিষ্ট সময়ে ক্ষতিপূরণের টাকা ও ফ্ল্যাট ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিলেও তা কানে তোলেননি তিনি। এমনকি,

আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত হলেও দীর্ঘ দিন ফেরার ছিলেন জয়ন্ত। শেষমেশ গত ডিসেম্বর থেকে তিনি দমদম জেলে বন্দি।

একই ভাবে ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন গরফার সুজয় সাঁপুই, চারু মার্কেটের সৌরভ সরকার এবং বিধাননগরের শান্তিরঞ্জন রায়। কেউ অভিযোগ করেছিলেন, অগ্রিম বহু লক্ষ টাকা নিয়েও ফ্ল্যাট দেননি প্রোমোটার। কারও বিরুদ্ধে আবার নির্দিষ্ট সময়ে ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রি না করানোর অভিযোগ উঠেছিল। সুজয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ক্রেতা সুরক্ষা আদালত অভিযুক্ত প্রোমোটার সুশান্ত ঘোষকে অগ্রিম ২২ লক্ষ ২০ টাকা-সহ ক্ষতিপূরণ বাবদ আরও পাঁচ লক্ষ দশ হাজার টাকা ফেরতের নির্দেশ দেয়। কিন্তু তিনি টাকা ফেরত দেননি। দীর্ঘ দিন ফেরার থাকার পরে সুশান্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত জুন থেকে জেলে রয়েছেন তিনি।

চারু মার্কেটের বাসিন্দা, অভিযোগকারী সৌরভ সরকারের ক্ষেত্রে তাঁকে নগদ ১০ লক্ষ টাকা ও আদালতে পাঁচ লক্ষ টাকার বন্ডের বিনিময়ে শর্তসাপেক্ষে জামিন পান অভিযুক্ত প্রোমোটার। আদালত তাঁকে আগামী ২৬ এপ্রিল হাজিরার নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছে, অভিযোগকারীকে বকেয়া ১৫ লক্ষ টাকা শীঘ্রই মিটিয়ে দিতে হবে।

বিধাননগরের শান্তিরঞ্জনবাবুর ক্ষেত্রেও তাঁকে মোটা টাকা মিটিয়ে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন অভিযুক্ত প্রোমোটার। তাঁকেও নিয়মিত আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

সুবিচার পেয়ে কাঞ্চনবাবু-সুজয়বাবুরা একযোগে এখন বলছেন, ‘‘ফ্ল্যাট বা টাকা ফেরত না পেলেও প্রতারকের যে শাস্তি হয়েছে, এতেই আমরা স্বস্তিতে। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে অনেক বাধা এলেও হাল ছাড়িনি। সকলকে সেই কথাই বলতে চাই।’’

Fraud Consumer Forum Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy