Advertisement
E-Paper

কিছু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে না তো? প্রশ্ন সোনিকার বাবা-মায়ের

সোনিকার সিংহ চৌহানের মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে ১৫টি দিন। কী ভাবে সে দিন ওই দুর্ঘটনা ঘটেছিল? তা নিয়ে এখনও ধন্দে তদন্তকারীরা। ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কে তাঁরা ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক বার জেরা করেছেন। কিন্তু, কোনও কিছুই স্পষ্ট হয়নি। সোশ্যাল মিডিয়াও সরব হয়েছে ‘জাস্টিস ফর সোনিকা’ এবং ‘ভয়েস ফর বিক্রম’-এ। কিন্তু, এ সবে শান্ত হচ্ছে না সোনিকার বাবা-মায়ের মন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৭ ১৬:৪৭
সোনিকা। ছবি সংগৃহীত।

সোনিকা। ছবি সংগৃহীত।

সোনিকা সিংহ চৌহানের মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে ১৫টি দিন। কী ভাবে সে দিন ওই দুর্ঘটনা ঘটেছিল? তা নিয়ে এখনও ধন্দে তদন্তকারীরা। ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কে তাঁরা ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক বার জেরা করেছেন। তবে, কোনও কিছুই স্পষ্ট হয়নি। সোশ্যাল মিডিয়াও সরব হয়েছে ‘জাস্টিস ফর সোনিকা’ এবং ‘ভয়েস ফর বিক্রম’-এ। কিন্তু, এ সবে শান্ত হচ্ছে না সোনিকার বাবা-মায়ের মন।

অনেক কিছু নিয়েই সংশয় রয়েছে তাঁদের মনে। মেয়ের মৃত্যুর পাশাপাশি রয়েছে তদন্তকারীদের ভূমিকা নিয়েও অজস্র প্রশ্ন। গত ১৫ দিনে তদন্তের যা গতিপ্রকৃতি, তাতে কোনও ভাবেই সন্তুষ্ট নন তাঁরা। তাঁদের মতে, তদন্ত যে ভাবে এগোচ্ছে তাতে কোথাও একটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে মনে হচ্ছে। কোথাও যদি কোনও দোষ না থেকে থাকে কারও, তবে কেন এটা মনে হচ্ছে? প্রশ্ন তাঁদের। কোন কোন প্রশ্ন আপাতত ভাবাচ্ছে চৌহান পরিবারকে? কোন কোন জায়গায় ফাঁক থেকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সোনিকার বাবা-মা? ওই পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানাচ্ছে, প্রাথমিক ভাবে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করতে চান চৌহান দম্পতি।

১. ভোররাতে ঘটা দুর্ঘটনায় সোনিকার মৃত্যু হয়। কিন্তু, সেই দুর্ঘটনার প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর সকাল পৌনে ৯টা নাগাদ কেন তাঁর বাবা-মাকে খবরটা দেওয়া হয়েছিল? কেন দেরি করেছিল পুলিশ মেয়ের মৃত্যুর খবর জানাতে?

২. সোনিকার সঙ্গে থাকা তাঁর ফোন এবং ওয়ালেট প্রথমে বিক্রমের বন্ধুদের হাতে তুলে দেয় পুলিশ। কেন সোনিকার পরিবারের হাতে ওগুলো দেওয়া হয়নি? পুলিশ ওই জিনিসগুলো আটক করেনি। এমনকী, তারা বিক্রমের বন্ধুদেরকে ওই ফোন আনলক করতেও বলে। পরে সোনিকার সেই ফোন তাঁর পরিবারের হাতে আসে বিক্রমের বন্ধুদের মাধ্যমেই।

৩. ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার’ টেস্ট করা হয়েছিল কি? চালক আদৌ মদ্যপ ছিল কি না তা জানতে, এত বড় একটা দুর্ঘটনার পর কেন বিক্রমের রক্ত এবং মুত্র পরীক্ষা করানো হল না?

৪. এই ঘটনার তদন্তে সোনিকার মোবাইল ফোন, তাঁর রক্তমাথা জামাকাপড়, তাঁর আইডেন্টিটি কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ পুলিশ কী ভাবে সে দিন সিল না করা অবস্থায় হাসপাতালেই চৌহান পরিবারের হাতে তুলে দিল? এবং ঘটনার ১১ দিন পর সেই পুলিশই সোনিকার বাড়িতে এসে তাঁর বাবা-মায়ের কাছ থেকে সেগুলো বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যায় তদন্তের স্বার্থে! এত দেরি হল কেন? কেন দুর্ঘটনার দিনই পুলিশ সেগুলো বাজেয়াপ্ত করেনি?

আরও খবর
বিক্রম-সোনিকা আমার বন্ধু, তবু আজ মুখ খুলছি

৫. এই ঘটনার অন্য একটি বড় প্রমাণ দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি। সেটিকে কী ভাবে এত গুরুত্বহীন অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে থানা চত্বরে? খোলা জায়গায়, সকলের নাগালের মধ্যে এবং যে কেউ তাতে হাত দিচ্ছে! কী ভাবে এটা সম্ভব?

৬. মদ খেয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন বিক্রম। সোনিকার পরিবারের লিখিত এই অভিযোগের পরেও কেন পুলিশ বিক্রমের বিরুদ্ধে ৩০৪ বা ৩০৪(২) ধারায় মামলা করল না? থানার অফিসার ইনচার্জ প্রথম থেকেই এই ঘটনায় অন্য রকম আচরণ করছেন কেন?

৭. কেন ঘটনাস্থল অর্থাত্ লেক মলের ওই এলাকার ভিডিও ফুটেজ এখনও সংগ্রহ করল না পুলিশ?

৮. দুর্ঘটনার প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর কেন গাড়িটির ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হল? আগে কেন হল না?

৯. বিক্রমকে যখন টালিগঞ্জ থানার পুলিশ জেরা করছিল, সেই সময় তাঁর বাবাকে ওই থানার ভিতরেই ক্যারাম খেলতে দেখা গিয়েছে। সেই ছবি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশও পেয়েছে। এতে কি প্রমাণ হয় না, ওই ভদ্রলোক আসলে দেখাতে চেয়েছেন পুলিশের সঙ্গে তাঁদের দহরম মহরমের কথা?

১০. কেন ঘটনার প্রায় ৮ দিন পর প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান রেকর্ড করল পুলিশ?

এই সমস্থ গাফিলতির দায় কে বা কারা নেবেন? অনেক কিছুর মতো এ সবের জবাব পাননি, সদ্য সন্তানহারা চৌহান দম্পতি।

Bikram Chatterjee Sonika Singh Chauhan Car accident Kolkata Police Celebrities
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy