Advertisement
E-Paper

একটা ছবি মিলেছে, কপালে হাত দিচ্ছেন নির্যাতিতার মা! আঘাত কী ভাবে, তদন্তে কি কিছু খুঁজে পেল লালবাজার?

গত শনিবার নবান্ন অভিযান ঘিরে হট্টগোলের মাঝে তাঁকে মারধরের অভিযোগ করেন নির্যাতিতার মা। তিনি জানান, তাঁর কপালে এবং পিঠে চোট লেগেছে। আঙুল তোলেন পুলিশের দিকেই। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভিডিয়ো ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখছে পুলিশ।

সারমিন বেগম

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৫ ২১:২৮
শনিবার দুপুরে নবান্ন অভিযানে জখম হন নির্যাতিতার মা। ছবিতে দেখা যাচ্ছে তাঁর কপালের ডান দিক ফুুলে গিয়েছে।

শনিবার দুপুরে নবান্ন অভিযানে জখম হন নির্যাতিতার মা। ছবিতে দেখা যাচ্ছে তাঁর কপালের ডান দিক ফুুলে গিয়েছে। —ফাইল চিত্র।

গত শনিবার নবান্ন অভিযানের সময় কী ভাবে আহত হন আরজি কর-কাণ্ডে নিহত চিকিৎসকের মা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ইতিমধ্যে বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখতে শুরু করেছে লালবাজার। এ ছাড়া পুলিশের নিজস্ব যা যা ফুটেজ রয়েছে এবং অন্য সূত্র থেকে পাওয়া ফুটেজও বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে। লালবাজার সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট ভাবে কোথায় তাঁর আঘাত লেগেছে, প্রাথমিক ভাবে সেই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

লালবাজারের ওই সূত্রের দাবি, একটি ফুটেজের একটি অংশে দেখা যাচ্ছে নির্যাতিতার মা কপালের ডান দিকে হাত দিচ্ছেন। কিন্তু ওই জায়গার ফুটেজে কোনও পুলিশকর্মীকে দেখা যাচ্ছে না। নির্যাতিতার মা গত শনিবার সংবাদমাধ্যমের সামনে অভিযোগ করেছিলেন, ‘অনেক পুলিশ মিলে’ তাঁকে মেরেছেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি বিচার চেয়েছি বলে আজ আমাকে মেরেছে। হাতের শাঁখাটা ভেঙে দিয়েছে। কপালে মেরেছে। সারা হাত কেটে দিয়েছে। অনেক পুলিশ মিলে আমাকে মেরেছে। রাস্তায় ফেলে মেরেছে’’ তবে এখনও পর্যন্ত খতিয়ে দেখা ফুটেজগুলিতে তেমন কোনও দৃশ্য দেখা যায়নি বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। যদিও ফুটেজ বিশ্লেষণের একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ওই সূত্র জানাচ্ছে, এখনও আরও ফুটেজ বিশ্লেষণ করা বাকি আছে। সব ফুটেজ খতিয়ে দেখার পরেই এ বিষয়ে সম্পূর্ণ ভাবে বলা সম্ভব হবে বলে জানাচ্ছে লালবাজারের ওই সূত্র।

গত শনিবার (৯ অগস্ট) আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার এক বছরের মাথায় নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। ওই কর্মসূচিতে বিজেপির নেতা-কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে হট্টগোলের মাঝে নির্যাতিতার মাকে মারধরের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। মহিলা জানান, তাঁর কপালে এবং পিঠে চোট লেগেছে। পুলিশের দিকেই আঙুল তোলেন তিনি। অন্য দিকে শনিবার ওই কর্মসূচিতে জখম হন বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মীও।

শনিবার ওই মারধরের অভিযোগের পরে দেখা যায়, নির্যাতিতার মায়ের কপালে ডান দিকের একটি অংশ ফুলে গিয়েছে। নবান্ন অভিযানের কর্মসূচি থেকেই তাঁকে বাইপাসের ধারে এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সে দিন হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রাখার পরে রবিবার ছেড়ে দেওয়া হয় নির্যাতিতার মাকে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তত ক্ষণে কপালের চোট লাগা জায়গায় ফোলা ভাব কমে এসেছিল। এরই মধ্যে রবিবারই কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা জানিয়ে দেন, নির্যাতিতার মা জখম হয়েছেন বলে যে অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে, তার তদন্ত হবে।

পুলিশ কমিশনার আশ্বস্ত করেন, যদি মহিলার গায়ে হাত তোলা হয়ে থাকে, তবে সেই কাজ কারা করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হবে। রবিবার তিনি বলেন, ‘‘আমরা সব দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত করছি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হচ্ছে। সব কিছু না-দেখে এখনই আমাদের পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ পুলিশ কমিশনারের আরও সংযোজন, ‘‘ওঁর নিশ্চয়ই ‘ইনজুরি’ (চোট) হয়েছে। সেটা দুঃখজনক। তবে সেটা কেন হল, কী ভাবে হল, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ ওই তদন্ত প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবেই ইতিমধ্যে বিভিন্ন ভিডিয়ো ফুটেজ খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে লালবাজার।

গত শনিবার নবান্ন অভিযানের সময় জওহরলাল নেহরু রোডের উড়ালপুলের র‌্যাম্পে পুলিশ মোতায়েন ছিল, যাতে মিছিল উড়ালপুলে উঠতে না পারে। উড়ালপুলের ডান পাশের রাস্তা ধরে মিছিল এগোতে থাকে। পার্ক স্ট্রিট মোড়ের কয়েকশো মিটার আগেই বড় ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা আটকে দিয়েছিল পুলিশ। জনা দশেক বিজেপি কর্মী মিছিলের আগে ছুটে গিয়ে প্রথমে ব্যারিকেডে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। পিছনের মিছিল ব্যারিকেড পর্যন্ত পৌঁছলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হবে বুঝে পুলিশও তৎপরতা বাড়াতে শুরু করে। এই হট্টগোলের মাঝে তাঁকে মারধরের অভিযোগ করেন নির্যাতিতার মা। তিনি জানান, তাঁর কপালে এবং পিঠে চোট লেগেছে।

পরে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘ওঁর ইনজুরিটা যথেষ্ট সিরিয়াস (গুরুতর)। সিটি স্ক্যান হয়েছে। এমআরআই হয়েছে। অভয়ার (আরজি করের নির্যাতিতা) বাবাও আমাদের মতো অল্পবিস্তর লাঠি খেয়েছেন। কিন্তু মায়ের শাঁখা-পলা ভেঙেছে।’’

RG Kar Protest Nabanna Abhijan Kolkata Police Lalbazar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy