Advertisement
E-Paper

ফের বেলাগাম গতি, রাতের বাইপাসে মৃত্যু ব্যবসায়ীর

ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের বিভিন্ন জায়গায় বসেছে স্পিড মিটার। গাড়ির সর্বোচ্চ গতি কত হবে, তা-ও লেখা আছে বাইপাসের বিভিন্ন জায়গায়। ট্র্যাফিক পুলিশের দাবি, দিনভর বাইপাসে টহলদারিও চলে। ওই রাস্তায় বেঁধে দেওয়া গতির থেকে জোরে গাড়ি চললেই চালককে ধরে জরিমানা করে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:২০
সুমন্ত চৌধুরী

সুমন্ত চৌধুরী

ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের বিভিন্ন জায়গায় বসেছে স্পিড মিটার। গাড়ির সর্বোচ্চ গতি কত হবে, তা-ও লেখা আছে বাইপাসের বিভিন্ন জায়গায়। ট্র্যাফিক পুলিশের দাবি, দিনভর বাইপাসে টহলদারিও চলে। ওই রাস্তায় বেঁধে দেওয়া গতির থেকে জোরে গাড়ি চললেই চালককে ধরে জরিমানা করে পুলিশ। তবু বাইপাসের গতি যে এখনও লাগামছাড়া, তা ফের প্রমাণিত হল রবিবার রাতে। পুলিশ জানিয়েছে, রাত বারোটা নাগাদ বাইপাসের পাটুলি মোড় থেকে ঘোষপাড়া পেরিয়ে বাঘা যতীন উড়ালপুলের ঠিক আগে একটি গাড়ি প্রচণ্ড জোরে ডিভাইডারের রেলিংয়ে ধাক্কা মারে। ধাক্কার অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে, গাড়িটি রেলিংয়ে ধাক্কা মেরে প্রায় ছ’ফুট উঠে গিয়ে পাশে একটি গাছে গিয়ে ফের ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই গাড়ির চালক সুমন্ত চৌধুরীর (৪৮) মৃত্যু হয়েছে। সুমন্তবাবুর বাড়ি সার্ভে পার্ক থানা এলাকার সন্তোষপুরের সাউথ পার্কে। পুলিশের অনুমান, তাঁর গাড়ির গতি ছিল ঘণ্টায় একশো কিলোমিটারের বেশি।

পুলিশ ও সুমন্তবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি পাটুলিতে এক বন্ধুর বাড়ি থেকে ফিরছিলেন। গাড়িতে একাই ছিলেন তিনি। ঘোষপাড়ার কয়েক জন বাসিন্দা জানান, বাঘা যতীন উড়ালপুলের কাছে জোরে একটি শব্দে তাঁরা চমকে ওঠেন। তাঁরা সেখানে গিয়ে দেখেন, ডিভাইভারে ধাক্কা মেরে একটি লাল রঙের গাড়ি দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে। গাড়ির চালকের আসনে রক্তাক্ত অবস্থায় আটকে ছিলেন সুমন্তবাবু। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরাই পাটুলি থানায় খবর দেন। কিন্তু গাড়িটি দুমড়ে যাওয়ায় জখম সুমন্তবাবুকে বার করে আনতে সমস্যা হয়।

শেষে বিপর্যয় মোকাবিলার বাহিনী গ্যাস কাটার দিয়ে গাড়ির দরজা কেটে সুমন্তবাবুকে বার করলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ওই ব্যক্তিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। এক পুলিশকর্তার কথায়, গাড়িটির ফরেন্সিক পরীক্ষা হলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। তবে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, গাড়িটি যখন ওই ডিভাইডারে ধাক্কা মারে, তার গতিবেগ একশো কিলোমিটারের আশপাশে ছিল। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, যেই গাছে ধাক্কা মেরেছিল গাড়িটি, তার ছালবাকল উড়ে গিয়েছে। গাছের ডালের সঙ্গে পড়ে রয়েছে কাচের টুকরো।

দুমড়ে-মুচড়ে: রবিবার রাতে বাইপাসের দুর্ঘটনায় এমনই অবস্থা হয়েছে সুমন্তবাবুর গাড়িটির। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

কিন্তু কেন গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বাইপাসে? ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘রাস্তায় স্পিড মিটার ক্যামেরা লাগানোর পরে আগের থেকে দুর্ঘটনা অনেকটাই কমেছে। এই রাস্তায় আরও সিসি ক্যামেরা ও স্পিড মিটার লাগানো হবে।’’

আরও পড়ুন: বাড়ির পথে গুলি, খুন বিজেপি কর্মী

আরও পড়ুন: ‘ছেলেকে নিয়ে মরতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ঘুম থেকে উঠে দেখি, মরিনি’

এ দিন সন্তোষপুর সাউথ পার্কে গিয়ে দেখা গেল, সুমন্তবাবুদের বাড়িতে ভিড় করেছেন পড়শিরা। ইন্টিরিয়র ডিজাইনিংয়ের ব্যবসা ছিল সুমন্তবাবুর। বাড়ির দোতলাতেই তাঁর অফিস। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী, মেয়ে ও বাবা রয়েছেন। মেয়ে আরশি দশম শ্রেণির পড়ুয়া। সুমন্তবাবুর এক বন্ধু বাপ্পা সরকার বলেন, ‘‘কাল রাতে পাটুলি থানা থেকে সুমন্তর স্ত্রী সুতপার কাছে ফোন আসে। আমরা জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাই।’’ বাপ্পাবাবুদের দাবি, তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন, সুমন্তবাবুর গাড়ির সামনে হঠাৎ উল্টো দিক থেকে একটি অটো চলে এসেছিল। ওই অটোটি বাঁচাতে গিয়েই সুমন্তবাবুর গাড়ি রেলিংয়ে ধাক্কা মারে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটির তদন্ত চলছে।

Car Accident Reckless Driving Safe Drive Save Life EM Bypass Baghajatin Flyover Businessman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy