Advertisement
E-Paper

বোর্ড পরীক্ষার আগে করোনার ভ্রুকুটি, চিন্তায় শিক্ষামহল

করোনা পরিস্থিতিতে দশম শ্রেণির আইসিএসই এবং দ্বাদশ শ্রেণির আইএসসি পরীক্ষার বেশ কিছু নিয়ম পাল্টেছে আগেই।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২১ ০৫:৪৩
এখনও মাস্ক না পরেই স্কুলের পথে!

এখনও মাস্ক না পরেই স্কুলের পথে! বিশ্বনাথ বণিক

করোনা পরিস্থিতিতে দশম শ্রেণির আইসিএসই এবং দ্বাদশ শ্রেণির আইএসসি পরীক্ষার বেশ কিছু নিয়ম পাল্টেছে আগেই। বৃহস্পতিবার ‘কাউন্সিল ফর দি ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগজামিনেশন’ (সিআইএসসিই)-এর সচিব জেরি অ্যারাথুন জানান, নতুন নিয়মে লিখিত ও প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নিতে গিয়ে কোনও অসুবিধা হলে তা কাউন্সিলকে সরাসরি জানাতে হবে। স্কুলের শিক্ষকদের পরীক্ষা নিতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্যই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফল বেরোনোর পরেই বিভিন্ন বোর্ডের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা শুরু হবে। কিন্তু এর মধ্যেই করোনার প্রকোপ ফের বাড়তে শুরু করায় পরীক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা আশঙ্কায় রয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, স্কুলগুলিকে নিয়মিত ভাবে জীবাণুমুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত কয়েক মাস ধরে সাধারণ মানুষের একটি বড় অংশের মধ্যে বিধি মানায় অনীহা দেখা যাচ্ছে। রাস্তাঘাটে মাস্ক না পরার প্রবণতা চোখে পড়ছে। করোনা সংক্রমণ নিয়ে এই উদাসীনতায় রীতিমতো চিন্তিত চলতি বছরের রাজ্য বোর্ড, আইসিএসই এবং সিবিএসই বোর্ডের পরীক্ষার্থীরা। চিন্তায় রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। তাঁদের আর্জি, লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থীর কথা ভেবে অন্তত করোনা নিয়ে সতর্ক হোন সাধারণ মানুষ। মাস্ক পরার মতো করোনা-বিধি মেনে চলা হোক।

রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরোবে ২ মে। ৪ মে থেকে শুরু হয়ে যাবে আইসিএসই বোর্ডের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা। সিবিএসই বোর্ডের পরীক্ষাও শুরু ৪ মে থেকে। আর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে জুন মাসে। প্রতিটি পরীক্ষাই হবে অফলাইনে, অর্থাৎ পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। অভিভাবকেরা জানাচ্ছেন, এমনিতেই পরীক্ষা পিছিয়ে মে, জুন মাসে হচ্ছে। তাঁদের প্রশ্ন, এর পরে করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেলে ফের পরীক্ষার সূচি পাল্টে যাবে না তো?

গত বছরে করোনার জন্য উচ্চ মাধ্যমিকে কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা হয়নি। গত বছরের কয়েক জন পরীক্ষার্থীর মতে, মাঝপথে পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা মোটেই ভাল নয়। প্রসেনজিৎ মজুমদার নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘ছোট ছোট পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে মানুষ কি একটু সচেতন হবেন না? রাজনৈতিক সভায় মানুষ কেন মাস্ক পরে থাকছেন না? সভায় এত জমায়েতই বা কেন? ভোট যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমন বোর্ডের পরীক্ষাও যে গুরুত্বপূর্ণ, সেটা বোঝা দরকার। ফের সংক্রমণ বাড়লে পরীক্ষা যদি পিছিয়ে যায়, তা হলে পরীক্ষার্থীদের খুব ক্ষতি হয়ে যাবে।’’

এ নিয়ে চিন্তিত শিক্ষকমহলও। শ্রী শিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘করোনা-বিধি উড়িয়ে যে ভাবে মানুষ ঘুরছেন, তাতে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। কিছু বিধিনিষেধ ফের আরোপ করা দরকার। গণ পরিবহণে কত জন উঠবেন, তা নিয়ে নিয়ম হওয়া দরকার। কত মানুষের জমায়েত হতে পারে, তারও একটা নির্দিষ্ট সংখ্যা থাকা দরকার। মানুষের কাছে আমাদের আর্জি, পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে বিধি মেনে চলুন।’’ মডার্ন হাইস্কুলের ডিরেক্টর দেবী কর বলেন, ‘‘স্কুলে পড়ুয়া ও শিক্ষকেরা করোনা-বিধি মানছেন। কিন্তু পড়ুয়ারা তো গণ পরিবহণে চাপছে। সেখানে যদি মানুষ সচেতন না হন, তা হলে সেখান থেকে পরীক্ষার্থীদের বিপদ হতে পারে। কোনও ভাবে করোনায় আক্রান্ত হলে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটবে। তাই সামগ্রিক ভাবে সবাইকেই সচেতন হতে আবেদন করছি।’’

সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া সিংহ মহাপাত্রের মতে, ‘‘মনে রাখতে হবে গত বছর এই সময় থেকেই করোনা বাড়তে শুরু করেছিল। মে, জুন মাসে তা আরও বাড়ে। এ বার কিন্তু মে, জুন মাসেই বোর্ডের পরীক্ষা। এক দিকে সংক্রমণ বাড়ছে। এর মধ্যেও মানুষ যে ভাবে মাস্ক ছাড়া ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাতে যে আবার মে, জুন মাসে পরিস্থিতি ঘোরালো হবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়? তাই আগাম সতর্কতা খুব প্রয়োজন।’’

Education CBSC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy