Advertisement
১৬ মে ২০২৪
SSC

SSC: চারশো দিনে পড়ল ধর্না, তবু অনড় এসএসসি প্রার্থীরা

তিনি বলেন, “শিক্ষকের অভাবে সরকারি ও সরকার-পোষিত স্কুলগুলি ধুঁকছে। অনেক স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: তীব্র গরমে আন্দোলনকারীদের ভরসা হাতপাখা। সোমবার, ধর্মতলায়, গান্ধী মূর্তির নীচে। নিজস্ব চিত্র

দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: তীব্র গরমে আন্দোলনকারীদের ভরসা হাতপাখা। সোমবার, ধর্মতলায়, গান্ধী মূর্তির নীচে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৫৯
Share: Save:

৪০০ দিন ছুঁয়ে ফেলল আন্দোলন। তবে, দাবি পূরণ না হলে এই আন্দোলন ৫০০ দিন, এমনকি তারও বেশি সময় ধরে চলবে। সোমবার ধর্না মঞ্চে এমনটাই জানিয়ে দিলেন এসএসসি-র নবম থেকে দ্বাদশের মেধা তালিকাভুক্ত চাকরিপ্রার্থীরা। আন্দোলনকারীরা জানালেন, দ্রুত নিয়োগের দাবিতে তিন দফায় তাঁদের এই আন্দোলন মঙ্গলবার ৪০০ দিন পূর্ণ করল। প্রথম দফায় আন্দোলন হয়েছিল ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত, টানা ২৯ দিন। দ্বিতীয় দফায় ২০২১ সালে সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কের পাঁচ নম্বর গেটের কাছে ১৮৭ দিন এবং তৃতীয় দফায় ধর্মতলার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে আজ, মঙ্গলবার ১৮৪ দিন পূর্ণ হচ্ছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, তিন দফা মিলিয়ে তাঁদের আন্দোলন ৪০০ দিনে পৌঁছল, যা নজিরবিহীন। দিল্লির সাম্প্রতিক কৃষক আন্দোলনও এত দিন ধরে চলেনি।

প্রখর রোদের মধ্যেই বিক্ষোভকারীরা আন্দোলন চালাচ্ছেন গান্ধী মূর্তির সামনে। তাঁদেরই এক জন পলাশ মণ্ডল এসএসসি-র মেধা তালিকায় থাকা ইংরেজির শিক্ষক পদের প্রার্থী। তিনি বলেন, “শিক্ষকের অভাবে সরকারি ও সরকার-পোষিত স্কুলগুলি ধুঁকছে। অনেক স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অথচ, আমরা যোগ্য প্রার্থী হয়েও রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। আন্দোলন করছি। মুখ্যমন্ত্রী ২০১৯ সালে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে আমাদের নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই কমিটি আমাদের কোনও কথাই শোনেনি। বরং সেখানেও অনিয়ম হয়েছে।”

আন্দোলনকারীরা জানালেন, গরমের মধ্যে লাগাতার এই আন্দোলন যাঁরা করছেন, তাঁদের জন্য জলের ব্যবস্থাটুকুও নেই। শৌচালয় অনেক দূরে। আন্দোলনকারী তরুণীদের মধ্যে খুশি সাহা, প্রথমা মিত্র ও তনয়া বিশ্বাসেরা জানালেন, প্রার্থীদের অনেকেরই ছোট ছোট ছেলেমেয়ে রয়েছে। তাদের ফেলেই সারা দিন ধরে আন্দোলন করছেন তাঁরা। তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটছে।

এই আন্দোলনের অন্যতম মুখ সোমা দাস রক্তের ক্যানসারে আক্রান্ত। ইতিমধ্যেই মুম্বইয়ে গিয়ে ১২টি কেমোথেরাপি নিয়ে এসেছেন তিনি। এখন কিছুটা সুস্থ থাকায় আন্দোলনে শামিল হয়েছেন। এ দিন ধর্না মঞ্চ থেকে সোমা গিয়েছিলেন হাই কোর্টে। তিনি বলেন, “শরীর দুর্বল। এর মধ্যে এতটা গরম থাকায় মাঝে মাঝেই অসুস্থ বোধ করছি। তখন একটু ছায়া খুঁজে নিয়ে বিশ্রাম নিতে হচ্ছে। তবে আন্দোলন কোনও ভাবেই বন্ধ হবে না।”

সোমার ক্যানসারের খবর সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে জানার পরে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে হাই কোর্টে নিজের এজলাসে ডাকেন। সেখানে বিচারপতি জানান, স্কুলে বা অন্য কোথাও যাতে তাঁকে নিয়োগ করা হয়, সেটা হাই কোর্ট দেখবে। তখন সোমা জানিয়ে দেন, শুধু তিনি নন, বিক্ষোভকারীদের সকলেই নানা অসুবিধার মধ্যে রয়েছেন। তাই সকলের চাকরি না হলে তিনি চাকরি নিতে অপারগ।

টানা আন্দোলন চললেও নিয়োগ যে কবে হবে, তার উত্তর নেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) কাছেও। এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, “ওঁদের প্রতিনিধিদল আমাদের সঙ্গে অনেক বার দেখা করেছে। বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। আদালতের নির্দেশের দিকেই আমরা তাকিয়ে আছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

SSC ssc candidate Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE