নিউরো-রিহ্যাবিলিটেশন ব্যবস্থাপনা চালু করল এসএসকেএম হাসপাতাল। ফাইল চিত্র।
স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসার পরে বাড়িতে ছেড়ে দিয়ে ফিজ়িয়োথেরাপির নিদান দেওয়া হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই। তবে, শরীরের একাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত ওই রোগীর ফিজ়িয়োথেরাপি ছাড়াও অন্যান্য চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু, রাজ্য তো বটেই, পূর্বাঞ্চলে আলাদা ভাবে নিউরো-রিহ্যাবিলিটেশন ব্যবস্থাপনা সরকারি স্তরে কোথাও চালু নেই। এ বার তারই ইন্ডোর পরিষেবা চালু করল এসএসকেএম হাসপাতাল। যেখানে স্ট্রোক, দুর্ঘটনায় মস্তিষ্কে বা মেরুদণ্ডে পাওয়া চোট, পারকিনসন্স, মোটর নিউরোন ডিজ়িজ়-সহ বিভিন্ন স্নায়ুরোগের নির্দিষ্ট চিকিৎসার পরবর্তী ধাপ হিসাবে মিলবে রিহ্যাবের সুযোগ। চালু হয়েছে পেডিয়াট্রিক রিহ্যাবও।
বুধবার এসএসকেএমের অ্যানেক্স-২ শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে আপাতত ২০টি শয্যা নিয়ে পুরুষ ও মহিলা বিভাগটি চালু করা হল। আগামী দিনে পুরুষদের জন্য ১৮টি এবং মহিলাদের জন্য ১৭টি করে মোট শয্যা হবে ৩৫টি। এ ছাড়াও, প্রস্থেটিক্স ও অর্থোটিক্স, অর্থাৎ কৃত্রিম অঙ্গ তৈরির ওয়ার্কশপও তৈরি করা হয়েছে। সেখান থেকে
প্রয়োজন মতো কোমরের বেল্ট, ক্রাচ, এমনকি, নকল হাত-পাও মিলবে। থাকছে নির্দিষ্ট অপারেশন থিয়েটারও। এ দিন এক ছাদের তলায় পুরো ব্যবস্থাপনাটির সূচনা করেন এসএসকেএমের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওই হাসপাতালের ফিজ়িক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন (পিএমআর) বিভাগের প্রধান চিকিৎসক রাজেশ প্রামাণিক বলেন, “বেঙ্গালুরুর নিমহ্যান্স, কিছুটা ভেলোর এবং মুম্বইয়ের কোকিলাবেন ছাড়া দেশের তেমন কোথাও আলাদা করে নিউরো রিহ্যাবের ব্যবস্থা নেই। স্বাস্থ্য দফতরের সহযোগিতায় পূর্ব ভারতে সরকারি স্তরে এই প্রথম এমনটা চালু করা গেল।” তিনি আরও জানাচ্ছেন, অনেক শিশুই সেরিব্রাল পলসি, মাস্কুলার ডিসট্রফি-সহ বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত থাকে। যার জেরে তাদের বৌদ্ধিক ও শারীরিক বিকাশ, দুটোই ব্যাহত হয়। ওই শিশুরাও বিভিন্ন থেরাপি ও চিকিৎসার মাধ্যমে রিহ্যাবিলিটেশনের সুযোগ পাবে। স্নায়ু ও শিশুরোগ বিভাগের চিকিৎসকেরাও পিএমআর বিভাগকে সাহায্য করবেন।
সূত্রের খবর, স্ট্রোকে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য এসএসকেএমের অ্যানেক্স রামরিক হাসপাতালে ‘হাইপার অ্যাকিউট স্ট্রোক ইউনিট’ (হাসু) তৈরি হয়েছে। সেখানে স্ট্রোক বা স্নায়ুর সমস্যা সামলে দেওয়ার পরে রোগীদের রিহ্যাবের জন্য পাঠানো হবে শম্ভুনাথের এই কেন্দ্রে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, স্ট্রোকের পরে অনেকেরই কথা আটকে যায়, খেতে পারেন না, প্রস্রাবে নিয়ন্ত্রণ থাকে না। সেই সঙ্গে অন্যান্য সমস্যাও থাকে। যেগুলি শুধু ফিজ়িয়োথেরাপি দিয়ে ঠিক করা সম্ভব নয়। তার জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট থেরাপি বা চিকিৎসা। আবার দীর্ঘদিন সিওপিডি-তে আক্রান্ত, করোনা-পরবর্তী শ্বাসকষ্ট, অল্পে হাঁপিয়ে যাওয়া এবং অন্য যে কোনও কারণে শ্বাসের সমস্যায় ভোগা রোগীদের জন্য পালমোনারি রিহ্যাব চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে। যাতে সুনির্দিষ্ট থেরাপির মাধ্যমে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy