Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
SSKM

শ্বাসনালিতে আটকে বাদাম, প্রৌঢ়ের সহায় এসএসকেএম

পরিজনেরা জানিয়েছেন, তখন বেঙ্গালুরুর অন্য একটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ওই প্রৌঢ়কে ভর্তি করা হয়। কিছু দিন চিকিৎসার পরে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। তখন থেকেই ট্রাকিয়োস্টোমি করা ছিল।

এসএসকেএম হাসপাতাল।

এসএসকেএম হাসপাতাল। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:১১
Share: Save:

স্ট্রোকে দ্বিতীয় বার আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে প্রৌঢ়ের ট্রাকিয়োস্টোমি করাই ছিল। কয়েক দিন আগে বাদাম দেওয়া চকলেট খাওয়ার পর থেকেই শুরু হল দমকা কাশি। সঙ্গে শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল তাঁর। বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরীক্ষায় দেখা যায়, ফুসফুসের একেবারে কাছে আটকে রয়েছে আস্ত একটা বাদাম। প্রৌঢ়কে সেখান থেকে স্থানান্তর করে দেওয়া হয় অন্যত্র। শেষে বাদাম বার করে ওই প্রৌঢ়কে প্রাণে বাঁচাল এসএসকেএম।

সিঙ্গুরের বাসিন্দা, পেশায় কাঠমিস্ত্রি বিকাশ শীট সিসিইউতে থাকলেও এখন স্থিতিশীল রয়েছেন বলেই জানাচ্ছেন পিজির নাক-কান-গলা (ইএনটি) বিভাগের চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, শনিবার দুপুরে বিকাশকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। দেখা যায়, তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৫ শতাংশ। তীব্র কাশির সঙ্গে হাঁফাচ্ছেন ৬৩ বছরের প্রৌঢ়। গলায় ফুটো করে নল ঢোকানো (ট্রাকিয়োস্টোমি) থাকায় প্রবল কষ্ট পাচ্ছেন তিনি। পরিজনেরা চিকিৎসকদের জানান, ২০২১ সালে প্রথম স্ট্রোক হয় ওই প্রৌঢ়ের। তখন শরীরের বাঁ দিক পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়। পরীক্ষায় দেখা যায়, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পাশাপাশি শিরাতেও ব্লক রয়েছে। বেঙ্গালুরুতে নিয়ে গিয়ে শুরু হয় বিকাশের চিকিৎসা। সেখানে অস্ত্রোপচার করে জমাট রক্ত বার করার পাশাপাশি শিরাতে স্টেন্ট বসানো হয়। কিন্তু গত ডিসেম্বরে বেঙ্গালুরুতে থাকার সময়েই ফের স্ট্রোক হয় ওই প্রৌঢ়ের।

পরিজনেরা জানিয়েছেন, তখন বেঙ্গালুরুর অন্য একটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ওই প্রৌঢ়কে ভর্তি করা হয়। কিছু দিন চিকিৎসার পরে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। তখন থেকেই ট্রাকিয়োস্টোমি করা ছিল। দিন সাতেক আগে চকলেট খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন বৃদ্ধ। সেই মত তাঁকে চকলেট দেওয়া হয়। কিন্তু সেটি খাওয়ার পর থেকেই বিপত্তি শুরু হয়। ক্রমশ সমস্যা বাড়তে থাকায় বাড়ির লোকজনের সন্দেহ হয়, গলায় বাদাম আটকে নেই তো! সেই মতো শনিবার প্রৌঢ়কে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে গেলে সেখানে ফাইবার অপটিক ব্রঙ্কোস্কোপি করা হয়। তাতে দেখা যায়, প্রৌঢ়ের বাঁ দিকের ফুসফুসের ব্রঙ্কাসে (এই বায়ুনালির মাধ্যমে ফুসফুসে বাতাস পৌঁছয়) বাদাম আটকে রয়েছে। সেখান থেকে রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলে পরিজনেরা পিজিতে নিয়ে আসেন তাঁকে। পিজি-র ইএনটি-র বরিষ্ঠ শিক্ষক-চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘রিপোর্ট ও রোগীর শারীরিক অবস্থা দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নিই, তড়িঘড়ি বাদামটি বার করতে হবে। তা না-হলে প্রাণ সংশয় হতে পারে।’’ সেই মতো শিক্ষক-চিকিৎসক অরিন্দম দাস, চিরঞ্জীব দাস, রেসিডেন্ট মেডিক্যাল অফিসার সন্দীপন নস্কর, জিষ্ণু হোড়, কামরান আহমেদ, সাবরিনা এবং অ্যানাস্থেটিস্ট সুমন হালদারের দল ওই বৃদ্ধকে অজ্ঞান করে ব্রঙ্কোস্কোপির মাধ্যমে বাদামটিকে বার করেন। অরিন্দম জানান, বাদামটি ব্রঙ্কাসের মুখ প্রায় পুরো আটকে রেখেছিল। তাই শ্বাস নিতে সমস্যা ও কাশিও হচ্ছিল। অস্ত্রোপচারের পরে পর্যবেক্ষণের জন্য ওই প্রৌঢ়কে সিসিইউতে রাখা হলেও ভেন্টিলেশনে দিতে হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

SSKM PG Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE