E-Paper

শব্দদূষণ রোধের কমিটিতে ‘বিশেষজ্ঞ’ নিয়োগ রাজ্যের

শব্দদূষণ নিয়ে পরিবেশ আদালতে মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত জানাচ্ছেন, শুধুমাত্র প্রশাসনিক কমিটি গঠন করে শব্দদূষণ রোধ করা সম্ভব নয়। তেমনটা হলে তা অনেক আগেই করা যেত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:৩৮
A picture showing noise pollution

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে খামতি থাকছে , সে প্রশ্ন ওঠায় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে সেই কমিটির পুনর্গঠন করা হয়েছে। প্রতীকী ছবি।

বছর তিনেক আগে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে রাজ্য সরকার এক উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছিল। তবে সেই কমিটিতে কোনও ‘বিশেষজ্ঞ’ ছিলেন না। সেখানে মূলত শীর্ষ পদের প্রশাসনিক ও পুলিশ আধিকারিক ছিলেন। কিন্তু তাতে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে খামতি থাকছে কি না, সে প্রশ্ন ওঠায় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে সেই কমিটির পুনর্গঠন করা হয়েছে। চলতি মাসে পুনর্গঠিত ওই কমিটিতে এক জন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হয়েছে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ‘সিনিয়র সায়েন্টিস্ট’কে বিশেষজ্ঞ হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১৯ সালের নভেম্বরে শব্দদূষণ সংক্রান্ত এক মামলায় পরিবেশ আদালত দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের ব্যর্থতা নিয়ে রীতিমতো উষ্মা প্রকাশ করে জানিয়েছিল, দূষণ রোধে রাজ্য সরকার ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ শুধুই মৌখিক আশ্বাস দিয়ে চলেছে। নিজেদের আইনি ক্ষমতা কাজে লাগাতে পুরোপুরি ব্যর্থ। তারই প্রেক্ষিতে রাজ্যকে এক উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেই কমিটিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব, পরিবেশ দফতরের প্রধান সচিব, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতরের সচিব, পরিবহণ দফতরের প্রধান সচিব, পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলের পাশাপাশি রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্য-সচিব আহ্বায়ক হিসাবে ছিলেন। অথচ, শব্দদূষণ নিয়ে দৈনন্দিন কাজ করছেন, এমন কোনও বিশেষজ্ঞ সেই কমিটিতে ছিলেন না।

শব্দদূষণ নিয়ে পরিবেশ আদালতে মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত জানাচ্ছেন, শুধুমাত্র প্রশাসনিক কমিটি গঠন করে শব্দদূষণ রোধ করা সম্ভব নয়। তেমনটা হলে তা অনেক আগেই করা যেত। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য দরকার। তাঁর কথায়, ‘‘শব্দের বিষয়ে বোঝেন, জানেন, এমন কারও কমিটিতে থাকা প্রয়োজন। দূষণ রোধে কী করণীয়, সে সম্পর্কে সেই ব্যক্তিই ঠিক পরামর্শ দিতে পারবেন।’’

যদিও প্রশাসনের একাংশের তরফে জানানো হয়েছে, কমিটিতে বিশেষজ্ঞের উপস্থিতির থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ, পরিবেশ আদালত ইতিমধ্যেই যা নির্দেশ দিয়েছে, সেগুলির বাস্তবায়ন। কিন্তুসেখানেই খামতি থেকে যাচ্ছে। পরিবেশ দফতরের এক কর্তা জানাচ্ছেন, ২০১৭ সালে শব্দদূষণ সংক্রান্ত মামলায় জুলাই, অগস্ট, অক্টোবর ও নভেম্বরে লাগাতার দূষণ নিয়ন্ত্রণের ‌নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু তা বাস্তবায়নে খামতি থাকায় আদালত ক্ষোভ প্রকাশও করেছিল। ওই কর্তার কথায়, ‘‘যে নির্দেশগুলি ইতিমধ্যেই রয়েছে, সেগুলি বাস্তবায়িত হলেই শব্দদূষণ রোধ করা সম্ভব।’’

তা হলে সেটা করা যাচ্ছে না কেন?

এক পরিবেশবিজ্ঞানীর বক্তব্য, ‘‘আসলে নিচুতলার পুলিশকর্মীদের একাংশের মধ্যে দূষণনিয়ন্ত্রণের কাজে যথেষ্ট গাফিলতি থেকে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তাঁদের ‘গয়ংগচ্ছ মনোভাব’ অনেকটাই দায়ী। অথচ, শব্দদূষণ রোধে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও পুলিশের মধ্যে সমন্বয় সব থেকে বেশি প্রয়োজন।’’ এ দিকে, কলকাতা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘এই সংক্রান্ত কোনওঅভিযোগ এলেই যথাযথ পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

noise pollution noise West Bengal Pollution Control Board

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy