Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
বেলগাছিয়া ও টালিগঞ্জ

ট্রাম ডিপোর জমি ছাড়ছে রাজ্য সরকার

একে আবাসন শিল্পে মন্দা। তার উপরে জমি আঁকাবাঁকা। স্বভাবতই মন্দার বাজারে এমন জমিতে মন উঠছে না বিনিয়োগকারীদের। ফলে, তৃতীয় বারেও পরিবহণ দফতরের বেলগাছিয়া ডিপোর জমি দীর্ঘমেয়াদি লিজচুক্তির ভিত্তিতে ছেড়ে দেওয়ার আবেদনে সাড়া মিলল না। শুধু বেলগাছিয়া ডিপোই নয়, সাড়া মেলেনি টালিগঞ্জে ট্রামডিপোর জমির ক্ষেত্রেও। বেলগাছিয়ার ক্ষেত্রে দু’টি এবং টালিগঞ্জের ক্ষেত্রে তিনটি সংস্থা জমি নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে।

অত্রি মিত্র
শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৫ ০৩:২৫
Share: Save:

একে আবাসন শিল্পে মন্দা। তার উপরে জমি আঁকাবাঁকা। স্বভাবতই মন্দার বাজারে এমন জমিতে মন উঠছে না বিনিয়োগকারীদের। ফলে, তৃতীয় বারেও পরিবহণ দফতরের বেলগাছিয়া ডিপোর জমি দীর্ঘমেয়াদি লিজচুক্তির ভিত্তিতে ছেড়ে দেওয়ার আবেদনে সাড়া মিলল না। শুধু বেলগাছিয়া ডিপোই নয়, সাড়া মেলেনি টালিগঞ্জে ট্রামডিপোর জমির ক্ষেত্রেও। বেলগাছিয়ার ক্ষেত্রে দু’টি এবং টালিগঞ্জের ক্ষেত্রে তিনটি সংস্থা জমি নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে। তার মধ্যে টালিগঞ্জের ক্ষেত্রে দু’টি সংস্থার আবেদনের ক্ষেত্রেই পদ্ধতিগত ত্রুটি ছিল। কিন্তু পরপর তিন বার সাড়া না মেলায় আপাতত যে ক’টি আবেদন মিলেছে, তার ভিত্তিতেই জমি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

সাধারণত, যে কোনও সরকারি টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অন্তত তিনটি আগ্রহী সংস্থা থাকলে তবেই তা গ্রাহ্য করা হয়। না হলে ওই প্রক্রিয়া বাতিল হয়ে যায়। সম্প্রতি ই-টেন্ডার প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পরে রাজ্য অর্থ দফতরই প্রথম বারের পরে ওই নিয়ম শিথিল করার পক্ষে সবুজ সঙ্কেত দেয়। পরিবহণ কর্তারা জানাচ্ছেন, ওই নিয়মেই বেলগাছিয়া এবং টালিগঞ্জ ডিপোর ক্ষেত্রে অর্থ দফতরের কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত নেওয়া হয়েছে। সবুজ সঙ্কেত দেওয়ায় যে ক’টি সংস্থা আগ্রহ দেখিয়েছে, তার ভিত্তিতেই ‘ফিনান্সিয়াল বিড’ খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। টালিগঞ্জের ক্ষেত্রে একটি সংস্থা প্রথমে ‘ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি’ জমা দেয়নি এবং অন্য একটি সংস্থার তা দেওয়ার ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে। দু’টি ক্ষেত্রেই অর্থ দফতর বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে সংস্থাগুলির আবেদন গ্রাহ্য করার নির্দেশ দিয়েছে।

কী কারণে এমন নির্দেশ?

পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রধান কারণ এই মুহূর্তে সারা দেশে আবাসন শিল্পে মন্দা। যার ফলে এত বড় জমি একসঙ্গে কোনও সংস্থাই নিতে চাইছে না। তার উপরে বেলগাছিয়া ডিপোর ক্ষেত্রে বাড়তি সমস্যা হল, আঁকাবাঁকা জমি। যেখানে আবাসন করতে গেলে অনেক জমিই সংস্থাকে ছাড়তে হবে।’’ ওই কর্তার মতে, ‘‘সরকারের টানাটানির সংসার। নিগমগুলিতে পেনশন থেকে শুরু করে বেতন বকেয়া। এই অবস্থায় নতুন করে ফের নিলাম প্রক্রিয়ায় আর যেতে চাইছে না সরকার। কারণ ওই প্রক্রিয়াতেও খরচ আছে। তাই যে সব সংস্থা আবেদন জানিয়েছে, তার ভিত্তিতেই জমি ছেড়ে দেওয়া হবে।’’

২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে সিটিসি-র ছ’টি ডিপোর উদ্বৃত্ত জমি দীর্ঘমেয়াদি লিজচুক্তির ভিত্তিতে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিজ্ঞাপন দেয় রাজ্য সরকার। তার মধ্যে টালিগঞ্জ ও বেলগাছিয়া ডিপোর জন্য আগ্রহ দেখিয়েছিল একটি ও দু’টি সংস্থা। পরিবহণ দফতরের ধারণা, সাড়া না মেলার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় ছিল লিজচুক্তিতে জমি দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি শর্ত। কর্পোরেট সংস্থাগুলির চাপে এর পরে লিজচুক্তি শিথিল করে পরিবহণ দফতর। শর্ত শিথিেলর পরে টালিগঞ্জ, বেলগাছিয়া ডিপোর দ্বিতীয় ‘বিড’ প্রক্রিয়ায় আগ্রহী সংস্থার সংখ্যা বাড়ে। ওই প্রক্রিয়া চলার মধ্যেই বাড়ির উচ্চতা এবং পরিসর অনুযায়ী জমি ছাড়ার ঊর্ধ্বসীমা কমানোর জন্য আইন সংশোধন করে কলকাতা পুরসভা। ফলে ফের আইনি জটিলতায় পড়ে আটকে যায় ওই দু’টি ডিপোর জমি লিজে ছাড়ার প্রক্রিয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE