Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Kolkata Bus

মামলার জটে আটকে ব্যাটারিচালিত বাস, ভাঁড়ার ভরাতে বিকল্প পথে ভরসা নিগমের

পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, মূলত কলকাতা এবং শহরতলির মধ্যে চালানোর কথা ভেবেই গত বছর ১১০০টি ব্যাটারিচালিত বাস কেনার জন্য কেন্দ্রের একটি সংস্থার মাধ্যমে বরাত দেওয়া হয়েছিল।

An image of Bus

—প্রতীকী চিত্র।

ফিরোজ ইসলাম 
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৩ ০৯:২৪
Share: Save:

ব্যাটারিচালিত বাস সময় মতো আসা নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় রাজ্য পরিবহণ নিগম সিএনজি এবং ডিজ়েলচালিত বাস কিনছে। চলতি মাসের মাঝামাঝি ওই বাসের বরাত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। সব ঠিক থাকলে পুজোর সময়ে কম-বেশি ৫০টি বাস আসার কথা। যার মধ্যে ৩০টি সিএনজি চালিত এবং ২০টি ডিজ়েলচালিত।

পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, মূলত কলকাতা এবং শহরতলির মধ্যে চালানোর কথা ভেবেই গত বছর ১১০০টি ব্যাটারিচালিত বাস কেনার জন্য কেন্দ্রের একটি সংস্থার মাধ্যমে বরাত দেওয়া হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল, বাস সরবরাহকারী সংস্থা তাদের চালকদের দিয়ে ওই বাস চালাবে। দিনে অন্তত ২০০ কিলোমিটার চলতে হবে বাসগুলিকে। ভাড়া আদায়ের দায়িত্বে থাকবেন সরকারি নিগমের কন্ডাক্টরেরা। পরিবর্তে বিভিন্ন ধরনের বাসের ক্ষেত্রে কিলোমিটারপিছু একটি নির্দিষ্ট মূল্য দিতে হবে বাস সরবরাহকারী সংস্থাকে। বাসের মোট মূল্যের ৬০ শতাংশ ভর্তুকি হিসাবে দেওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রের।

চলতি বছরের জুলাই থেকেই ব্যাটারিচালিত ওই বাসের শহরের রাস্তায় ছোটার কথা ছিল। কিন্তু বরাত-প্রক্রিয়া নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে বাস সরবরাহকারী একটি সংস্থা আদালতের দ্বারস্থ হয়। সংস্থাটির অভিযোগ ছিল, সব চেয়ে কম দর দেওয়ার পরেও উপযুক্ত কারণ ছাড়াই তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। এর জেরে আইনি জটে আটকে যায় বাস হাতে পাওয়ার গোটা প্রক্রিয়াই।

এ দিকে, নির্দিষ্ট সময়ে বাস না পাওয়ায় চাপ পড়তে থাকে রাজ্য পরিবহণ নিগমের পরিষেবায়। এমনিতেই জ্বালানি এবং রক্ষণাবেক্ষণের খরচ সামাল দিতে গিয়ে গত কয়েক বছরে নাভিশ্বাস উঠেছে নিগমের। বিভিন্ন রুটে একাধিক বাস বসে গেলেবহু ক্ষেত্রে ওই সব বাস সচল করা নিয়েও সমস্যা দেখা দিচ্ছে। নিগমের অন্দরের খবর, এই পরিস্থিতিতে ব্যাটারিচালিত বাস হাতে পেলে খরচের ক্ষেত্রে সাশ্রয় হওয়া ছাড়াও পরিষেবার হাল ফেরার সম্ভাবনা ছিল। প্রায় খালি হতে চলা বাসের ভাঁড়ারে ভারসাম্য রাখতে তাই বাধ্য হয়েই বিকল্প তহবিল ব্যবহার করে সিএনজি এবং ডিজ়েলচালিত বাস কেনার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।

পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ৫০টি বাস আসার কথা, তার মধ্যে কেন্দ্রের ‘ন্যাশনাল ক্লিন এয়ার ফান্ড’ খাতে পাওয়া টাকার একাংশ খরচ করে ৩০টি সিএনজি-চালিত বাস কেনা হচ্ছে। এ ছাড়া, কেন্দ্রেরই আর একটি তহবিলের টাকা থেকে কেনা হবে ২০টি ডিজ়েলচালিত বাস। সব ক’টি বাসই নন-এসি। নতুন বাস হাতে পেলে গুরুত্বপূর্ণ রুটগুলিতে যাত্রী পরিষেবার হাল ফেরাতে সুবিধা হবে পরিবহণ নিগমের। যে সব বাসের বরাত দেওয়া হয়েছে, তাদের মূলত ইঞ্জিন-সহ মূল কাঠামো কেনার কথা। পরে ওই সব বাসের কাঠামোকে পূর্ণাঙ্গ চেহারা দেওয়া হবে পৃথক ভাবে। তাতে বাস কেনার ক্ষেত্রে খরচের কিছুটা সাশ্রয় হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, সারা দেশেই বিভিন্ন রাজ্যের একাধিক পরিবহণ নিগমের তরফে ব্যাটারিচালিত বাস কেনার প্রক্রিয়া আইনি জটে থমকে রয়েছে। গত বছর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে বিপুল উৎসাহে ব্যাটারিচালিত বাস আনার বিষয়টি নিয়ে এগোনো হলেও আইনি জটিলতায় পুরো প্রক্রিয়া থমকে থাকায় সমস্যা জটিল হয়েছে। সময় মতো বাস না পাওয়ায় চালু বাসের উপর চাপ বেড়েছে। অল্প সংখ্যক বাস থাকায় সব রুটে বাস দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এই অবস্থায় বাধ্য হয়েই নিগমের ভরসা সিএনজি এবং ডিজ়েলচালিত বাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE