কেন তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত? ফাইল চিত্র।
আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর (এআরটিও), ব্যারাকপুরের অধীনে থাকা গাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষার (সিএফ) স্থান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য পরিবহণ দফতর। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব ব্যারাকপুর-বারাসত রোডে বিড়লা গেটে সরকারি বাস ডিপো থেকে সিএফ-এর কাজ গুটিয়ে নেওয়া হবে। ব্যারাকপুর প্রশাসনিক ভবনের কাছে তুলনামূলক ভাবে কম প্রশস্ত হলেও সেখানে সিএফ-এর জন্য নতুন জায়গা ঠিক করার বিষয়ে পরিবহণ দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও খবর।
কেন তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত? জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, গত তিন বছর ধরে বিড়লা গেটে সরকারি বাস ডিপোয় ব্যারাকপুর এআরটিও-র অধীনে গাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর সময়ে তোলাবাজির একাধিক অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এই তোলাবাজিকে কেন্দ্র করে শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারির ঘটনা পর্যন্ত ঘটে। যাতে গ্রেফতার হন স্থানীয় শিউলি পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল সদস্য। তিনি বর্তমানে জামিনে মুক্ত। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময়ে টাকা আদায়ের তিনটি অভিযোগ জমা পড়েছে ওই সদস্যের বিরুদ্ধে। একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে বাস ডিপো সংলগ্ন একটি ক্লাবের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও। এ ব্যাপারে শিউলি পঞ্চায়েতের প্রধান অরুণ ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের পঞ্চায়েতের এক সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হয়েছিল। পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছে।’’
রাজ্য পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, ব্যারাকপুর পিভিডি-র অধীনে নথিভুক্ত গাড়ির সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় সিএফ-এর নির্দিষ্ট দিনগুলিতে গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। প্রশাসনিক ভবনের অবস্থান ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্ট এবং পুর এলাকার সংযোগস্থলে। ক্যান্টনমেন্টের রাস্তায় এমনিতেই বাণিজ্যিক নম্বরের গাড়ি ঢোকার উপরে কর নেওয়া হয়। তা ছাড়া, এত গাড়ি রাখাও যায় না। সেই কারণে ব্যারাকপুর-বারাসত রোডে রাজ্যের অন্যতম বড় বাস ডিপোয় সিএফ-এর জায়গা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রথম থেকেই সেখানে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠতে শুরু করে। দিনে প্রায় দেড়শো গাড়ির সিএফ করানো হলে গাড়িপিছু ২০০-২৫০ টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বহু গাড়ির মালিক একাধিক বার পরিবহণ দফতরে এই নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এই বিপুল টাকায় অনেকে জন্মদিনের উৎসব পালন থেকে শুরু করে গাড়ি-বাড়ি তো বটেই, জমিও কিনেছেন। সম্প্রতি ওই পঞ্চায়েত সদস্য গ্রেফতার হওয়ার পরেই নড়ে বসে প্রশাসন। গোটা বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক অভ্র অধিকারী। পরে তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ গুরুতর। পরিবহণ কর্মীরাও ওই ডিপোয় গিয়ে কাজ করতে ভয় পান বলে জেনেছি। দ্রুত সিএফ-এর জায়গা ওখান থেকে সরানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy