E-Paper

লাইসেন্সপ্রাপ্ত আরও বিপণি কি জড়িত অস্ত্র ও কার্তুজ পাচার-কাণ্ডে, সন্দিহান এসটিএফ

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বি বা দী বাগের ওই দোকানের বন্দুক এবং কার্তুজের বিক্রির হিসাব মিলিয়ে দেখার কাজ চলছে। যাচাই করা হচ্ছে ওই দোকানের মালিক এবং কর্মীদের বয়ানও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫৪
খতিয়ে দেখার পরেই বোঝা যাবে, লাইসেন্সপ্রাপ্ত আরও অস্ত্র বিপণি এই চক্রে জড়িত কিনা।

খতিয়ে দেখার পরেই বোঝা যাবে, লাইসেন্সপ্রাপ্ত আরও অস্ত্র বিপণি এই চক্রে জড়িত কিনা। —প্রতীকী চিত্র।

লাইসেন্সপ্রাপ্ত একেরও বেশি অস্ত্র বিপণি থেকে কি বাইরে বিক্রি করা হয়েছিল বন্দুক ও কার্তুজ? প্রাথমিক তদন্তের পরে এমনই সন্দেহ করছেন তদন্তকারীদের একাংশ। সূত্রের খবর, কার্তুজ-কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত যে ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে রাজ্য পুলিশের এসটিএফের গোয়েন্দারা মনে করছেন, বি বা দী বাগের প্রাচীন অস্ত্র বিপণির পাশাপাশি লাইসেন্সপ্রাপ্ত আরও অস্ত্র বিপণি এই চক্রে জড়িত থাকতে পারে। যদিও তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বি বা দী বাগের ওই দোকানের বন্দুক এবং কার্তুজের বিক্রির হিসাব মিলিয়ে দেখার কাজ চলছে। যাচাই করা হচ্ছে ওই দোকানের মালিক এবং কর্মীদের বয়ানও। সেই সঙ্গে এসটিএফ জানাচ্ছে, এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া বি বা দী বাগের দোকানের দুই কর্মী এবং অস্ত্র ব্যবসায়ী হাজি রশিদ মোল্লা যে বয়ান দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখার পরেই বোঝা যাবে, লাইসেন্সপ্রাপ্ত আরও অস্ত্র বিপণি এই চক্রে জড়িত কিনা।

এসটিএফ সূত্রের খবর, বি বা দী বাগের অস্ত্র বিপণির দুই কর্মী এবং অস্ত্র ব্যবসায়ীদের জেরা করার পরে গোয়েন্দারা এক প্রকার নিশ্চিত যে, ওই দোকান থেকে চোরাপথে বন্দুক ও কার্তুজ বিক্রির নেপথ্যে রয়েছে একটি আন্তঃরাজ্য অস্ত্র বিক্রি চক্র। যারা এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কলকাতা সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে দাগি অপরাধীদের কাছে অস্ত্র ও কার্তুজ পৌঁছে দিত।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এসটিএফের গোয়েন্দারা দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলার বাসিন্দা হাজি রশিদ মোল্লার বাড়ি থেকে ১৯০ রাউন্ড কার্তুজ এবং একটি দোনলা বন্দুক উদ্ধার করেন। গ্রেফতার করা হয় হাজি-সহ পাঁচ জনকে। যাদের মধ্যে ছিল বি বা দী বাগের ওই দোকানের এক কর্মী জয়ন্ত দত্ত। পরে সেখানকারই আর এক কর্মী শান্তনু সরকারকে গ্রেফতার করা হয়।

এসটিএফ সূত্রের খবর, বি বা দী বাগের ওই দোকানে বন্দুক এবং কার্তুজের হিসাব রাখা ও সেই সংক্রান্ত রেজিস্টার দেখাশোনার দায়িত্ব ছিল শান্তনুর উপরে। তার এবং জয়ন্তের কাছ থেকে মোটা টাকার বিনিময়ে বন্দুক ও কার্তুজ কিনত ধৃত হাজি। পরে সেগুলি বিক্রি করা হত চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে। এর পরে সেই সদস্যেরা বন্দুক এবং কার্তুজ পৌঁছে দিত দুষ্কৃতীদের কাছে। বিনিময়ে নিত মোটা টাকা। গোয়েন্দাদের দাবি, এই বন্দুক ও কার্তুজ দিয়ে দুষ্কৃতীরা বিভিন্ন অপরাধ ঘটাত।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া দোনলা বন্দুক এবং বিপুল পরিমাণ কার্তুজ কার লাইসেন্সের বিনিময়ে তোলা হয়েছিল, আপাতত তা খতিয়ে দেখার কাজ চলছে। গোয়েন্দাদের অনুমান, যে লাইসেন্স দিয়ে এই কার্তুজ এবং
বন্দুক দোকান থেকে হাতবদল করা হয়েছিল, তা ছিল ভুয়ো। এক গোয়েন্দা-কর্তা জানান, কতগুলি বন্দুক এবং ক’রাউন্ড কার্তুজ দুষ্কৃতীদের হাতে পৌঁছেছিল, তা বি বা দী বাগের ওই দোকানের কার্তুজ ও অস্ত্র বিক্রির হিসাব দেখা শেষ হলেই বোঝা যাবে। পাশাপাশি, এই চক্রের সঙ্গে অন্য কোনও লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র বিপণির কর্মীদের যোগ আছে কিনা, স্পষ্ট হবে সেই বিষয়টিও।

এ দিকে, কার্তুজ-কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া জয়ন্ত দত্ত, আব্দুল সেলিম গাজি, আশিক ইকবাল এবং হাজি রশিদ মোল্লাকে মঙ্গলবার আদালতে পেশ করা হলে বিচারক প্রথম তিন জনকে পাঁচ দিনের এসটিএফ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। গোয়েন্দাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাজি রশিদ মোল্লাকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

STF bullet

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy