Advertisement
E-Paper

বাবুঘাটে স্নান করতে নেমে নিখোঁজ ছাত্র

রবিবার সকাল এগারোটা নাগাদ হঠাৎই দিলীপবাবুর মোবাইলে অভিষেকের বন্ধু প্রকাশ রজকের ফোন আসে। জানানো হয়, বাবুঘাটে স্নান করতে নেমে জলে ডুবে গিয়েছে অভিষেক

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৭
অভিষেক সাউ

অভিষেক সাউ

বাড়িতে চলছিল জন্মাষ্টমীর পুজো। বাবা দিলীপ সাউ আর মা গীতা পুজোর আসনে বসেও গিয়েছিলেন তত ক্ষণে। তাঁদের এক মাত্র ছেলে অভিষেক কখন যে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল, তা খেয়াল করেননি সাউ দম্পতি।

রবিবার সকাল এগারোটা নাগাদ হঠাৎই দিলীপবাবুর মোবাইলে অভিষেকের বন্ধু প্রকাশ রজকের ফোন আসে। জানানো হয়, বাবুঘাটে স্নান করতে নেমে জলে ডুবে গিয়েছে অভিষেক। ট্যাংরা থানার দেবেন্দ্রচন্দ্র দে রোডের বাসিন্দা দিলীপবাবু প্রথমে বুঝতেই পারেননি, বাবুঘাটে ছেলে গেল কখন? তাঁর কথায়, ‘‘উপোস করেছিলাম। পুজো শেষ করার পরে তাই স্ত্রী প্রসাদ দিচ্ছিলেন। দেখেছিলাম, ছেলে ঘরে নেই। ওর সাইকেলও ছিল না। কিন্তু ভেবেছিলাম, আশপাশে কোথাও সাইকেল নিয়ে ঘুরতে গিয়েছে ছেলে। এমন সময়ে রজক জানায়, বাবুঘাটে বন্ধুদের সঙ্গে স্নান করতে নেমে অভিষেক জলে ডুবে গিয়েছে।’’

উত্তর বন্দর থানার পুলিশও জানিয়েছে, রবিবার সকালে বাবুঘাটে জলে ডুবে গিয়েছে অভিষেক সাউ নামে বছর ষোলোর এক কিশোর। অভিষেকের খোঁজে ডুবুরি নামানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, রাত পর্যন্ত অভিষেকের কোনও হদিস পাওয়া যায়নি।

এ দিন দেবেন্দ্র চন্দ্র রোডে অভিষেকের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, তালা ঝুলছে। পড়শিরা জানালেন, গঙ্গায় ছেলে ডুবে যাওয়ার খবর আসতেই বাড়ির সবাই সঙ্গে সঙ্গে বাবুঘাটে চলে গিয়েছেন। এক পড়শির কথায়, ‘‘প্রতি রবিবার ওই এলাকার অনেকেই বাবুঘাটে স্নান করতে যান। অভিষেক আগেও অনেক বার তাঁদের সঙ্গে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ও সাঁতার জানত না বলে কেউ নিয়ে যেত না ওকে। তা ছাড়া অভিষেকের বাবা ও মা খুব কড়া নজরদারিতে রাখতেন ছেলেকে। কেউ যেন ছেলেকে বাবুঘাটে স্নান করতে নিয়ে না যান, পুরো মহল্লায় এমন কথাও বলে রেখেছিলেন সাউ দম্পতি। এ দিন তাই বাবা-মা পুজোয় ব্যস্ত থাকার সুযোগে স্কুলের বন্ধু প্রকাশকে নিয়ে বাবুঘাট চলে যায় অভিষেক।

প্রকাশের দাবি, সকালে খুব বৃষ্টির মধ্যেই অভিষেক সাইকেলে চেপে তার এন্টালির বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়েছিল। তখনই সে বাবুঘাটে স্নান করতে যাওয়ার জন্য বলে প্রকাশকে। সাইকেল রেখেই দুই বন্ধু বেরিয়ে পড়ে। প্রকাশ বলে, ‘‘অভিষেককে বেশি দূরে যেতে নিষেধ করেছিলাম। আমাকে ধরেই স্নান করছিল। আধ ঘণ্টা জলে থাকার পরে আমি উঠে আসি। জামাকাপড় পরছিলাম। হঠাৎ দেখি, স্রোতে ভেসে যাচ্ছে অভিষেক। আমি এবং আরও কয়েক জন জলে ঝাঁপিয়ে ওকে ধরে আনতে চেষ্টা করেছিলাম। পারিনি। এর পরে বাবুঘাটেরই এক পুলিশকর্মীকে পুরোটা জানাই। ওঁরাও সঙ্গে সঙ্গে ফোন করতে থাকেন।’’

এ দিকে রবিবার রাত পর্যন্ত ছেলের প্রতীক্ষায় ঠায় বাবুঘাটেই বসে থেকেছেন বাবা-মা। দিলীপবাবুর কথায়, ‘‘সঙ্গে অন্য আত্মীয়েরাও রয়েছেন। পুলিশও খোঁজ করছে। দেখা যাক, কী হয়!’’

River Bathing Missing Student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy