Advertisement
E-Paper

এখনও এল না পরিস্রুত জল, ভোগান্তি

প্রতিশ্রুতিই সার। আজও সংযুক্ত এলাকার বাসিন্দারা পুর নিগমের পরিস্রুত পানীয় জল থেকে বঞ্চিত। মাটির তলার জলই সেখানে ভরসা। কিন্তু গরম পড়ার সঙ্গে সঙ্গে জলস্তর নেমে যাওয়ায় তাতেও পড়েছে টান।

কাজল গুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৬ ০১:৪১
জলের জন্য লাইন। মঙ্গলবার, দত্তাবাদে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

জলের জন্য লাইন। মঙ্গলবার, দত্তাবাদে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

প্রতিশ্রুতিই সার। আজও সংযুক্ত এলাকার বাসিন্দারা পুর নিগমের পরিস্রুত পানীয় জল থেকে বঞ্চিত। মাটির তলার জলই সেখানে ভরসা। কিন্তু গরম পড়ার সঙ্গে সঙ্গে জলস্তর নেমে যাওয়ায় তাতেও পড়েছে টান। বাড়ছে জলকষ্ট। বাসিন্দাদের দাবি, আগামী কিছু দিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে ভয়াবহ সঙ্কটে পড়তে হবে তাঁদের।

সল্টলেকের দত্তাবাদ এবং সংযুক্ত এলাকা থেকে শুরু করে রাজারহাট-নিউ টাউন-গোপালপুর সহ বিস্তীর্ণ জায়গায় এমনই জলকষ্ট শুরু হয়েছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। কার্যত এই অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন বিধাননগর পুর নিগমের কর্তারাও। তবে তাঁদের দাবি, কয়েকটি জলপ্রকল্পের কাজ চলছে। সেখান থেকে অনেক জায়গায় পাইপলাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ প্রক্রিয়ার কাজও শুরু হয়েছে। আর্সেনিক দূষণ রুখতে ভূগর্ভস্থ জল তোলা পুরোপুরি বন্ধ করাই সেখানে লক্ষ্য।

জলপ্রকল্প তৈরি করে পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের প্রতিশ্রুতি নতুন নয়। কিন্তু এখনও এই ব্যবস্থা বেশিরভাগ এলাকায় কার্যকর হয়নি। কয়েক দশক ধরে বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকা থেকে শুরু করে খাস সল্টলেকেও এই সমস্যা রয়েই গিয়েছে। এ বারও ইতিমধ্যেই মহিষবাথান, পোলেনাইট, বারোকপাট, সর্দারপাড়া-সহ বিভিন্ন জায়গা, সুকান্তনগর থেকে কুলিপাড়া ও দত্তাবাদের কিছু এলাকা থেকে জলকষ্টের অভিযোগ মিলেছে।

অভিযোগ মেনে নিয়ে বিধাননগরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার ওয়ার্ডে মাটির তলার জল সরবরাহ করা হয়। গরমে জলস্তর নেমে গেলে এমন সমস্যা হয়। কিন্তু এখনও জলসঙ্কটের পর্যায়ে পৌঁছয়নি। আমরা সতর্ক রয়েছি।’’ তবে এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ জানালেন, মাটির তলার ওই জল খাওয়া তো দূর অস্ত্, স্নানেরও উপযুক্ত নয়। এ বার সেই মাটির তলার জলস্তর আরও নেমে যাওয়ায় প্রান্তিক জায়গাগুলিতে জলের অভাব বেশি করে দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

যদিও ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের নির্মল দত্তের কথায়, ‘‘আমার ওয়ার্ডে জলকষ্ট নেই। টালা-পলতার পরিস্রুত জল আনার জন্য কাজও শুরু হয়েছে। তবে এলাকার শেষ প্রান্তে জল সরবরাহে কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছি।’’ একই অবস্থা সুকান্তনগরেরও। বাসিন্দাদের একাংশের কথায়, সরু ফিতের মতো জল পড়ছে। বিধাননগর পুর নিগমের একটি সূত্রের দাবি, জল সরবরাহের পাইপলাইন বেশ কিছু জায়গায় রুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সল্টলেকের ১৪টি ওয়ার্ডের মতো রাজারহাট-নিউ টাউন-গোপালপুরের ২৭টি ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে জলকষ্টের ছবিটাও কমবেশি একই। এখানে আবার বাগুইআটি, কেষ্টপুর, তেঘরিয়া, চিনার পার্ক, নারায়ণপুরের আংশিক এলাকায় বহুতল এবং বাণিজ্যিক এলাকায় জলের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। চাহিদা মেটাতে দু’বারের বদলে তিন বার তিন ঘণ্টা করে পাম্প চালানো হচ্ছে। ফলে পার্শ্ববর্তী এলাকায় জল সরবরাহে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়েছে বলে অভিযোগ।

পুর নিগমের একটি সূত্রের দাবি, নির্বাচনের জন্য কর্মী-সংখ্যা কমে যাওয়ায় রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রেও সমস্যা হয়েছে। তবে তাদের দাবি, জলকষ্ট কিছু জায়গায় হলেও তা সঙ্কটের পর্যায়ে পৌঁছবে না। তার আগেই পর্যাপ্ত পদক্ষেপ করা হবে।

বিধাননগর পুর নিগমের মেয়র পারিষদ (জল সরবরাহ) বীরেন বিশ্বাসের দাবি, সঙ্কট নেই। কিছু ক্ষেত্রে জলকষ্ট হলেও দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তবে সার্বিক ভাবে জলের সমস্যা মেটাতে যে সব পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, নির্বাচনী বিধির কারণে তিনি তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে পুরকর্তাদের দাবি, পরিকল্পনা কার্যকর হলে জল সমস্যা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

fresh water suffering TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy