পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার ন্যূনতম যোগ্যতামান নেই, পরীক্ষায় বসার জন্য উপস্থিতির হারও প্রয়োজনের তুলনায় বেশ নীচে। তা সত্ত্বেও পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবিতে অধ্যাপিকা সহ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুগত মারজিতকে হেনস্থা করলেন বড়িশা বিবেকানন্দ গালর্স কলেজের একদল ছাত্রী। পরিস্থিতি এমনই পর্যায়ে পৌঁছায় যে কলেজে গাড়ি ফেলে শেষমেশ অটো করে ফিরে আসতে হয় উপাচার্যকে।
মঙ্গলবার ওই কলেজের ভূগোল স্নাতকোত্তর বিভাগের সমাবর্তন অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানেই যোগ দিতে আসেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুগত মারজিত। বেলা ১২টা নাগাদ কলেজের সামনে তাঁকে ঘিরে ধরেন কলেজের একদল ছাত্রী। তাঁরা পাসকোর্সের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। তাঁদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায় তাঁদের বসার অনুমতি দিতে হবে কলেজ কর্তৃপক্ষকে। পরীক্ষার ফর্মপূরণ করতে দিতে হবে তাঁদের। শুধু মৌখিকভাবে দাবি জানানোতেই থেমে থাকেনি ছাত্রীরা। অধ্যক্ষার ঘরে ঢুকে অধ্যাপিকাদের উপর চড়াও হন তাঁরা, কলেজ থেকে বেরনোর সময় উপাচার্যকেও ধাক্কা মারেন বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা। উপাচার্য জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা পাঁচ ঘন্টা তাঁর গাড়ি আটকে রাখে, কলেজের সামনে থেকে অটো ধরে তিনি টালিগঞ্জ ফাঁড়িতে এসে ফোন করে তিনি ব্যক্তিগত গাড়ি ডেকে পাঠান।
আন্দোলনকারী ছাত্রীরা জানায়, কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের পরীক্ষায় বসার অনুমতি না দিলে তাঁদের এক বছর নষ্ট হবে। তাঁদের অভিযোগ, এই দাবি যখন তাঁরা কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানাতে যান, তখন তাঁদের হেনস্থা করেন কলেজের অধ্যাপিকারা। পড়ুয়াদের জামাকাপড়ও ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে তাঁদের অভিযোগ। কলেজ কর্তৃপক্ষের পাল্টা অভিযোগ, অনুষ্ঠান চলাকালীনই হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে অভব্য আচরণ করতে থাকেন এই বিক্ষোভকারীরা। তাদের বাধা দিতে গিয়ে আহত হন অধ্যাপিকারাই। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপিকা অমৃতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আন্দোলনের কোনও ভিত্তিই নেই, যাঁরা একটু পিছিয়ে পড়া ছাত্রী ছিলেন, তাঁদের জন্য আমরা বিশেষ ক্লাসেরও বন্দোবস্ত করেছিলাম, কিন্তু সেই ক্লাসেও তাঁরা উপস্থিত ছিলেন না।’’ কলেজ কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি শুধু কলেজের ছাত্রীরা নয় বহিরাগত অনেকেও এতে ইন্ধন জুগিয়েছে।
কলেজের অধ্যক্ষা সোমা ভট্টাচার্য জানান, এই ছাত্রীরা শুধু যে কলেজের টেস্ট পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ তাই নয়, প্রথমবর্ষের পরীক্ষাতেও এঁদের অধিকাংশই পাশ করতে পারেননি। উপস্থিতির হারও ভীষণ কম। অধ্যক্ষা জানান, ‘‘এই দাবি খুবই অযৌক্তিক। তাই বিবেচনা করার কিছুই নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy