Advertisement
০৫ মে ২০২৪

নালিশের সাহস জোগাচ্ছে অনিন্দ্যর গ্রেফতারি

সল্টলেকের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পরেও হুঁশ ফিরছে না ‘সিন্ডিকেট দাদা’ এবং তোলাবাজদের একাংশের। কিন্তু সাহস ফিরে পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিধাননগর শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৬ ০০:৫৮
Share: Save:

সল্টলেকের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পরেও হুঁশ ফিরছে না ‘সিন্ডিকেট দাদা’ এবং তোলাবাজদের একাংশের। কিন্তু সাহস ফিরে পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রাজারহাটের নির্মাণ সংস্থা থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ আধিকারিক যেমন সাহস করে অভিযোগ জানিয়েছেন। এ বার অভিযোগ করলেন এক কাগজ বিক্রেতা।

শনিবার লেকটাউনের বাসিন্দা শ্যামল চক্রবর্তী নামে ওই কাগজ-বিক্রেতা বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার জ্ঞানবন্ত সিংহের দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ, রাজারহাটের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে রায়পাড়া এলাকায় তিন কাঠা জমি কিনেছিলেন তিনি। কিন্তু কিছুতেই সেই জমিতে পাঁচিল দেওয়া থেকে শুরু করে বাড়ি তৈরির কাজ করতে পারছেন না। কারণ, স্থানীয় কিছু লোকজন এসে কাজে বাধা দিচ্ছে। বলছে, ক্লাবের সঙ্গে কথা না বললে কোনও লাভ হবে না। কিন্তু ক্লাবের সঙ্গে কথা বলতে গেলে সময় মিলছে না বলেও অভিযোগ।

শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘রায়পাড়াতে আমার জমির পাশে একটি নির্মাণকাজ চলছে। আমার সন্দেহ, আমার জমিটিকেও সেই নির্মাণের আওতায় নেওয়ার চেষ্টা চলছে। যে কোনও সময়ে জমির দখল নিয়ে নেবে।’’

কিন্তু কাজে যারা বাধা দিচ্ছে, তারা কারা?

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তেরা শাসক দলের সক্রিয় কর্মী বলেই এলাকায় পরিচিত। বাধ্য হয়ে বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসুর সঙ্গে দেখা করে ঘটনার কথা জানিয়েছেন ওই কাগজ বিক্রেতা। বিধায়কের পরামর্শেই তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন বলে জানান শ্যামলবাবু।

এর আগে রাজারহাটের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে এক পুলিশ আধিকারিকের জমি ঘিরেও একই সমস্যা দেখা দিয়েছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ কমিশনারের কাছে ইতিমধ্যেই অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনিও। এর পাশাপাশি ৪ নম্বর ওয়ার্ডে একটি নির্মাণকাজ বন্ধ করা এবং ৫ লক্ষ টাকা চেয়ে হুমকির অভিযোগও উঠেছে। দুই ক্ষেত্রেই পরোক্ষ ভাবে নাম জড়ায় বিধাননগর পুর নিগমের এক বরো চেয়ারম্যান শাহনওয়াজ আলি মণ্ডল ওরফে ডাম্পির।

কাগজ বিক্রেতা শ্যামলবাবুর জমি ঘিরে গোলমালেও ফের ওই বরো চেয়ারম্যানের ‘ঘনিষ্ঠ’দের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। এ প্রসঙ্গে ডাম্পি বলেন, ‘‘রায়পাড়া আমার ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে না। সেখানে কে কী করছে, তা নিয়ে আমি বলতে পারব না। স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলুন। তবে কেউ যদি এমন করে, তবে আইনের পথেই তার বিচার হবে।’’ এমন অভিযোগ পেয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন স্থানীয় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি তিনি মেয়র ও পুর-কমিশনারের কাছে পাঠিয়েছেন বলেও জানান কাউন্সিলর। যদিও মেয়র সব্যসাচী দত্ত আগেই দাবি করেছেন, এমন কোনও অভিযোগ তিনি পাননি।

ডাম্পি-অনুগামীদের একাংশের পাল্টা অভিযোগ, রাজারহাটে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে একাধিক ঘটনায় ডাম্পি মণ্ডলের নামে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে। এ বারও তা-ই ঘটছে। অথচ এই সব ঘটনার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই বরো চেয়ারম্যানের। এটা একটি অংশের চক্রান্ত বলে দাবি করেছেন অনুগামীরা।

অভিযোগ নিয়ে চাপান উতোর থাকলেও পুলিশ কিন্তু সিন্ডিকেট দৌরাত্ম্য বন্ধে অভিযান বজায় রেখেছে। শনিবার রাতেও নিউ টাউনের বালিগুড়ি থেকে এক ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ী আলি হোসেন লস্করকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Syndicate raj Lake town Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE