সুনসান ট্যাক্সি স্ট্যান্ড। বৃহস্পতিবার, হাওড়ায়। —নিজস্ব চিত্র
আচমকা ট্যাক্সিচালকদের হাওড়া স্টেশন বয়কটের ডাকে ফের দিনভর নাজেহাল হলেন যাত্রীরা। যেখানে সারা দিনে হাওড়ার প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথ থেকে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ট্যাক্সি চলে, বামপন্থী সংগঠন এআইটিইউসি-র ডাকা বয়কটের জেরে বৃহস্পতিবার ট্যাক্সি চলেছে অর্ধেকেরও কম। ফলে সকাল থেকে চূড়ান্ত নাজেহাল হয়েছেন ট্রেন থেকে নেমে ট্যাক্সি ধরতে আসা যাত্রীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সিপিআই-এর শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি-র পক্ষ থেকে ট্যাক্সিচালকদের উপরে পুলিশি জুলুমের প্রতিবাদে হাওড়া স্টেশন বয়কটের ডাক দেওয়া হয়। ফলে সকাল থেকেই প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথে অনেক কম ট্যাক্সি ছিল। এর উপর কলকাতার দিক থেকে ট্যাক্সিচালকদের মিছিল আসার খবর পেয়ে হাওড়া ব্রিজের মুখে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়। সাড়ে ১২টা নাগাদ ট্যাক্সিচালকদের মিছিল স্টেশনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পুলিশ মিছিলটিকে হাওড়া বাসস্ট্যান্ডের কাছে আটকে দেয়। ট্যাক্সিচালকরা সেখানেই বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ট্যাক্সিচালকরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের মিছিল মাঝপথে থামিয়ে দেওয়া হয়। আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা এআইটিইউসি-র ট্যাক্সি সংগঠনের নেতা নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘পুলিশ মানুষের মৌলিক অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নিচ্ছে। এর প্রতিবাদে ট্যাক্সির হাওড়া বয়কট চলবে।”
কেন এই বয়কট? বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, হাওড়া স্টেশন চত্বরে ট্যাক্সিচালকদের উপর নির্যাতন চলছে। গত ৬ তারিখ ঘুরন সাউ নামে এক ট্যাক্সিচালককে এক পুলিশ অফিসার বেধড়ক মারধর করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে তিন দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়। বিক্ষোভকারীদের আরও অভিযোগ, রাজীব যাদব নামে এক ট্যাক্সিচালককে সম্প্রতি মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। এ ছাড়া হাওড়া স্টেশনে ঢুকলেই সামান্য কারণে পুলিশ ট্যাক্সিচালকদের জরিমানা করছে, নানা ভাবে হয়রানি করছে।
ট্যাক্সিচালকদের অভিযোগ প্রসঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশের বক্তব্য, গত তিন বছরে হাওড়া স্টেশন চত্বরে দালালরাজ, বেআইনি ট্যাক্সি চলাচল ও ট্যাক্সি প্রত্যাখ্যানের ঘটনা বন্ধ করে দেওয়ার পরই একটা চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা ফের আগের ব্যবস্থা চালু করতে চায়। কিন্তু পুলিশ তা হতে দিচ্ছে না বলে মিথ্যে অভিযোগ আনা হচ্ছে।
ডিসি (ট্রাফিক) সুমিত কুমার বলেন, “যে কারণে ট্যাক্সিচালকরা আন্দোলন করছেন, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। হাওড়া স্টেশনে দালালরাজ ফিরিয়ে আনার জন্য ট্যাক্সি নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। যার ফলে নাজেহাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।”
কিন্তু একটিমাত্র শ্রমিক সংগঠনের ডাকা বয়কটের জেরে দিনভর ট্যাক্সি সমস্যা হল কেন? তৃণমূলের প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সিমেন্স ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক প্রবীর দাস মহাপাত্র বলেন, “এ দিন সকালে আন্দোলনকারীরা পিলখানার কাছে একটি ট্যাক্সি ভাঙচুর করে। এর পরেই চালকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া হয় হাওড়ায় গেলেই ভাঙচুর হবে। মূলত এই ভয়েই ট্যাক্সি কমে যায়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy