জেলা থেকে ‘রেফার’ হওয়া সঙ্কটজনক রোগী ঘুরছেন শহরের এক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে আর এক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শেষ পর্যন্ত হয়তো কোথাও জায়গা না পেয়ে মৃত্যু হচ্ছে তাঁর। আবার এমনও হচ্ছে, অস্ত্রোপচারের জন্য কখনও দিনের পর দিন, কখনও মাসাধিক কাল কেটে গেলেও তারিখ মিলছে না।
এই সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে হৃদ্রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে। শহরের দুই প্রথম সারির হাসপাতাল— কলকাতা মেডিক্যাল এবং ন্যাশনাল মেডিক্যালে এক দিকে শয্যা এবং অন্য দিকে শিক্ষক-চিকিৎসক, দুইয়ের সঙ্কট মিলে চরম ধাক্কা খাচ্ছে কার্ডিয়োলজি, কার্ডিয়োথোরাসিক অ্যান্ড ভাস্কুলার সার্জারি (সিটিভিএস) পরিষেবা। এই দুই হাসপাতাল মিলে কার্ডিয়োলজিতে ১০০টি শয্যাও নেই। কলকাতা মেডিক্যালে রয়েছে ৫০টি শয্যা, ন্যাশনালে ৩০টি। এক সময়ে সিটিভিএসে বেশ নাম করেছিল কলকাতা মেডিক্যাল। এখন সেই পরিষেবা তলানিতে। প্রফেসর এবং অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর মিলিয়ে মাত্র দু’জন চিকিৎসক রয়েছেন। নেই এক জনও পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি। ফলে অস্ত্রোপচারের পরেরোগীকে পর্যবেক্ষণ করবেন কে, সেটাই বড় প্রশ্ন। সমস্যা রয়েছে যন্ত্রেও। যদিও কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, শেষ তিন মাসে গড়ে ১০টি করে অস্ত্রোপচার হয়েছে।
ন্যাশনাল মেডিক্যালে খাতায়কলমে সিটিভিএস বিভাগ থাকলেও, বাইপাস সার্জারি বা হৃৎপিণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রোপচার কার্যত বন্ধ। কর্মীদের একাংশেরই কটাক্ষ, ‘‘সিটিভিএসে শেষ কবে অস্ত্রোপচার হয়েছে, মনে করে দেখতে হবে।’’ গোটা বিভাগে এক জন প্রফেসর, এক জন আরএমও। আবার, ডিএম (কার্ডিয়োলজি) পাঠ্যক্রমে প্রায় ১০ মাস ধরে ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন এক অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর। রয়েছেন এক জন শিক্ষক-চিকিৎসক এবং এক জন আরএমও!