Advertisement
E-Paper

কচুরির দোকান থেকে গরম তেল ‘ছোড়া’ হল প্রাতর্ভ্রমণকারীদের গায়ে!

তুষের আগুন ধিকিধিকি জ্বলছিলই। বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎই যেন সেই আগুন বড়সড় আকার নিল সল্টলেকের দুটি দোকানের মধ্যে ব্যবসার রেষারেষিকে কেন্দ্র করে। ঘটনাকে ঘিরে গরম তেল উড়ে এসে পড়ল সাধারণ ক্রেতার শরীরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৩৯
ফুটন্ত তেলে জখম তিন প্রাতর্ভ্রমণকারী। বৃহস্পতিবার সল্টলেকে ছবিটি তুলেছেন স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।

ফুটন্ত তেলে জখম তিন প্রাতর্ভ্রমণকারী। বৃহস্পতিবার সল্টলেকে ছবিটি তুলেছেন স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।

তুষের আগুন ধিকিধিকি জ্বলছিলই। বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎই যেন সেই আগুন বড়সড় আকার নিল সল্টলেকের দুটি দোকানের মধ্যে ব্যবসার রেষারেষিকে কেন্দ্র করে। ঘটনাকে ঘিরে গরম তেল উড়ে এসে পড়ল সাধারণ ক্রেতার শরীরে। গ্রেফতার হলেন এক কচুরির দোকানের দুই কর্মী। তাঁদের বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে খুনের মামলা রুজু না করলেও যে কোনও সময় তা করা হবে বলেই জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে সল্টলেকের সিএফ ব্লকে ওই ঘটনা ঘটেছে। সেখানে এক কচুরির দোকানের সঙ্গে ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’ এক ধোসার দোকানের মধ্যে কয়েক দিন ধরেই ব্যবসার প্রতিযোগিতা নিয়ে চাপা গোলমাল চলছিল।

চা-কচুরির দোকানের লোকজন চাইছিলেন তাঁদের দোকানের সামনে ধোসা-ইডলির দোকানটি যেন না থাকে। সকাল ও সন্ধ্যায় কচুরির দোকানের সামনে এসে দাঁড়ানো লোকজনের ভিড়টা ভাগ হয়ে চলে যাচ্ছিল ধোসার দোকানের দিকে।

কচুরির দোকানের বাঁধা ক্রেতারা অনেকেই ধোসা-ইডলির দোকানমুখী হচ্ছিলেন। এমনকী কচুরির দোকানের টুলে বসে ক্রেতাদের কেউ কেউ ধোসা-ইডলি খাচ্ছিলেন। ব্যবসা মার খাচ্ছিল কচুরির দোকানের।

বৃহস্পতিবার সকালে তেমনই এক ঘটনাকে ঘিরে দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল শুরু হয়। এ দিন সকালেও এক দল প্রাতর্ভ্রমণকারী প্রথমে কচুরির দোকানেই এসেছিলেন। কিন্তু ওই ধোসার দোকানটিকে দেখে প্রাতর্ভ্রমণকারীদের কয়েক জন চা ও কচুরির অর্ডার বাতিল করে ধোসা খেতে যান। তার পরেই দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল বেধে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এর পরেৈই ক্ষোভে ফেটে পড়েন কচুরির দোকানের লোকজন। অভিযোগ, কচুরির দোকানের লোকজন ধোসা বিক্রেতাকে গিয়ে ধমক দেন। তার পরে তাঁরা ধোসার দোকান থেকে সম্বরের পাত্র তুলে নিয়ে গিয়ে কচুরির দোকানে ঢুকে পড়েন।

কচুরির দোকানের লোকজনের ব্যবহারে রেগে যান প্রাতর্ভ্রমণকারীরা। তাঁরা ঘটনার প্রতিবাদ করেন। কচুরির দোকানের লোকজনকে ধোসা বিক্রেতার সম্বরের পাত্র ফেরত দিতে বলেন তাঁরা।

প্রত্যক্ষদর্শী জনৈক দীনেশ যাদব জানান, ওই ঘটনাকে ঘিরে কচুরির দোকানের লোকজনের সঙ্গে প্রাতর্ভ্রমণকারীদের গোলমাল বেধে যায়। দু’পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। এমন সময় আচমকাই দেখা যায় কচুরির দোকান থেকে গরম তেল উড়ে এসে পড়ল প্রাতর্ভ্রমণকারীদের গায়ে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ প্রকাশ জালান ও ভোলা নায়েক নামে কচুরির দোকানের দুই কর্মীকে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাঁদের গ্রেফতারও করে বিধাননগর (উত্তর) থানার পুলিশ।

ধৃতদের বিরুদ্ধে মারধর, জখম করা, ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করার মতো বিভিন্ন (৩২৩,৩২৫,৩২৬) জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করেছে পুলিশ। তবে কচুরির দোকানের তরফেও তাঁদের মারধর এবং দোকানে ভাঙচুর চালানোর পাল্টা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

যদিও প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে গরম তেল গায়ে পড়লে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে, সেখানে কেন খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করল না পুলিশ। এ দিন অভিযুক্তদের বিধাননগর আদালতে হাজির করা হলে তাঁদের চার দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

বিধাননগর কমিশনারেটের এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করার রাস্তা খোলা রয়েছে। যে ভাবে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তাতে প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে গরম তেলের পোড়া ততটা গুরুতর নয়। ঘটনা নিয়ে অভিযুক্তদের জেরা করা হবে। প্রয়োজনে খুনের মামলা রুজু হবে।’’

Shop Owners Fight Customers Injured
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy