Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Calcullta News

দূষণনগরী কলকাতা, দিনে ২০টা সিগারেটের বিষ ঢুকছে ফুসফুসে!

ডিসেম্বরের শুরুতেই বাতাসে ধীরে ধীরে দূষণের মাত্রা বাড়ছিল। গত বুধবার থেকে আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পৌঁছে গিয়েছে কলকাতার বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম) পরিমাণ।

ধূমপান না করলেও অজান্তেই ফুসফুসে ঢুকছে বিষাক্ত বাতাস। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

ধূমপান না করলেও অজান্তেই ফুসফুসে ঢুকছে বিষাক্ত বাতাস। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৭:১২
Share: Save:

দূষণের চাদরে ঢেকে গিয়েছে কলকাতার আকাশ। পরিস্থিতি এতটাই বিপজ্জনক যে, শহরে শ্বাস নেওয়া মানেই দিনে গড়ে ১৮ থেকে ২০টা সিগারেট খাওয়ার সমান! অর্থাৎ, সিগারেটের থেকে দূরে থেকেও আপনার অজান্তেই ফুসফুসে ঢুকে যাচ্ছে বিষাক্ত বাতাস। যা শরীরের পক্ষে অত্যন্ত খারাপ।

ডিসেম্বরের শুরুতেই বাতাসে ধীরে ধীরে দূষণের মাত্রা বাড়ছিল। গত বুধবার থেকে আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পৌঁছে গিয়েছে কলকাতার বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার (পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম) পরিমাণ। শুক্রবারেও কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণে একই হাল।

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের দূষণ সূচক যন্ত্রে শুক্রবার সকাল ৯টায় বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে পিএম ২.৫ (সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ) ছিল ৪২৯। বেলা ৩টের সময়ও ছিল ৪৩০। একই ভাবে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে গড়ে এই সূচক ৪০০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ফলে উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায় দূষিত বাতাস ঢুকেছে শহরবাসীর শরীরে।

আবার বৃহস্পতিবার শহরের দক্ষিণ প্রান্তে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরে দূষণ সূচক যন্ত্রেও ধরা পড়েছে বেহাল অবস্থার ছবি।

(আজকের তারিখে গুরুত্বপূর্ণ কী কী ঘটেছিল অতীতে, তারই কয়েক ঝলক দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।)

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তালিকায় ‘খুব খারাপ’ পর্যায়ে ছিল বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ। ওই দিন সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বাতাসে পিএম ২.৫ ছিল ৩৫০। কখনও কখনও তা ৪০০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। শুক্রবার গড়ে সকাল ৯টায় ছিল ৩৬৪ এবং বেলা ৩টেয় ছিল ৩৬৬।

আরও পড়ুন: বায়ুদূষণ ঠেকাতে ব্যর্থ দিল্লি, ২৫ কোটি টাকা জরিমানার নির্দেশ আদালতের

আরও পড়ুন: তৃতীয় কেউ ছিল কি? মিলছে না উত্তর

এটা শহরবাসীদের জন্যে চিন্তার কারণ বলে জানাচ্ছেন পরিবেশবিদরা। কেন আতঙ্কিত পরিবেশপ্রেমীরা?

বাতাসে থাকা সেই ধূলিকণাগুলিকেই পিএম ২.৫ বলা হয়, যে গুলির ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটার। এত ছোট বলেই এই কণাগুলি বাতাসের সঙ্গে খুব সহজে আমাদের শরীরের কোষগুলিতে ঢুকে যেতে পারে। তার প্রভাবে আমরা শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে যেতে পারি। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। শিশু এবং প্রবীণরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। চর্ম রোগ এবং ফুসফুসের সমস্যা দেখা দেয়।

বাতাসে পিএম ২.৫ –এর পরিমাণ ৫০ থেকে ৬০ থাকলে ভাল বলা হয়। এই পরিমাণ ১০০ হয়ে গেলেও সহনযোগ্য। কিন্তু তা ২০০ পেরিয়ে গেলেই তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে শুরু করে।

আরও পড়ুন: নিশ্বাস নিতে চান? এক বোতল শুদ্ধ বাতাসের দাম জানেন?

আরও পড়ুন: সব হারিয়েও বাঁচার আশায় ‘খুকুর মা’

‘বার্লে আর্থ’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, একটি সিগারেট খেলে যতটা ক্ষতি হয়, ততটাই ক্ষতি হয় স্বাভাবিক বাতাসের প্রতি এম৩ ইউনিটে ২২ মাইক্রোগ্রাম ওজনের পিএম ২.৫ ধূলিকণা থাকলে। অর্থাৎ সারা দিনে পিএম ২.৫ ধূলিকণার পরিমাণ বাতাসের প্রতি ঘন মিটারে ৪০০ থাকা মানে, আপনি দিনে ১৮ থেকে ২০ সিগারেট খাচ্ছেন।

(কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনার বাছাই করা বাংলা খবর পড়তে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pollution Air Pollution Environment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE