Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Tiljala Rampage

কোথায় তান্ত্রিক? তিলজলায় শিশু খুনের তদন্তে পুলিশকে ঘোল খাওয়াতেই কি এমন ফন্দি ধৃতের?

তিলজলায় শিশুটিকে খুনের জেরে সোমবার প্রতিবাদের নামে হওয়া তাণ্ডবের ঘটনায় আরও আট জনকে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখা। এখনও পর্যন্ত গ্রেফতারির মোট সংখ্যা দাঁড়াল ২৮।

A Photograph of the chaos in Tiljala

হেফাজতে থাকা অলোক কুমার জেরায় এখনও দাবি করে চলেছে, তান্ত্রিকের পরামর্শেই সে সন্তান লাভের আশায় ওইশিশুটিকে অপহরণ এবং খুন করেছিল। ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৩ ০৬:২৯
Share: Save:

তদন্তের অভিমুখ অন্য দিকে ঘোরাতেই কি তান্ত্রিক-যোগের তত্ত্ব খাড়া করতে চেয়েছিল অভিযুক্ত? তিলজলায় শিশু খুনের তিনদিন পরেও ধৃতের বর্ণিত সেই তান্ত্রিকের খোঁজ না মেলায় এমনই প্রশ্ন ঘুরছে তদন্তকারীদের মধ্যে। পাশাপাশি, শিশুটিকে খুনের জেরে সোমবার প্রতিবাদের নামে হওয়া তাণ্ডবের ঘটনায় আরও আট জনকে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখা। এই নিয়ে ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতারির মোট সংখ্যা দাঁড়াল ২৮।

লালবাজার সূত্রের খবর, হেফাজতে থাকা অলোক কুমার জেরায় এখনও দাবি করে চলেছে, তান্ত্রিকের পরামর্শেই সে সন্তান লাভের আশায় ওইশিশুটিকে অপহরণ এবং খুন করেছিল। এমনকি, এ জন্য একাধিক বার সে তান্ত্রিকের কাছে গিয়েছিল বলেও পুলিশি জেরায় দাবি করেছে অলোক। যদিও সেই দাবি নিয়ে সন্দিহানপুলিশকর্তারাই। তান্ত্রিক-যোগ থাকা নিয়ে পুলিশের সন্দেহ যদি সত্যি হয়, সে ক্ষেত্রে তদন্তকারীদের কাছে উঠে আসছে আরও একটি প্রশ্ন। তা হল, কী কারণে ওই শিশুটিকে খুন করা হল?

ধৃতকে জেরা করে পুলিশ নিশ্চিত, ঘটনার দিন, অর্থাৎ রবিবার সকালে অপহরণের পরেই শিশুটিকে খুন করেছিল সে। এর পরে পড়শিরা শিশুটির খোঁজশুরু করলে নজর ঘোরাতে তাঁদের সঙ্গে অলোক নিজেও খোঁজ শুরু করে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ঘণ্টাখানেকের জন্য ঘর থেকে বেরিয়েছিল অলোক। তখন সে কারও সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল কি না, সেই উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা।

তবে, শিশুটিকে খুন করার সময়ে অলোক যে সেখানে একাই ছিল, সে বিষয়ে এক প্রকার নিশ্চিততদন্তকারীরা। কিন্তু ধৃতের একাধিক বক্তব্যে নানা অসঙ্গতি রয়েছে বলেও লালবাজার সূত্রের খবর। তদন্তকারী এক কর্তা বলেন, ‘‘তান্ত্রিকের কথা যা বলা হচ্ছে, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। ধৃত যে তান্ত্রিকের নাম বলছে, সেই রকম কাউকে আমরা চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। পাওয়া গেলেই ধোঁয়াশা কাটবে। কিন্তু এখনও তেমন কাউকে না পেয়ে আমাদের অন্য সন্দেহের দিকটাও জোরালো হচ্ছে।’’

রবিবার তিলজলা থানা এলাকায় সকাল থেকে নিখোঁজ ছিল বছর সাতের শিশুকন্যাটি। ওই রাতেই আবাসনের দোতলার ফ্ল্যাট থেকে তার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। মাথায় ও কানে স্ক্রু-ড্রাইভার জাতীয় কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন মিলেছিল বলে প্রাথমিক পর্যায়ে জানা গিয়েছিল। রাতেই অলোক কুমার নামে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার প্রতিবাদে রাত থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। পরদিন, সোমবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বন্ডেল সেতু এলাকা। দফায় দফায় অবরোধ, পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর, আগুন লাগানো হয়। সোমবার রাতভর তল্লাশি চালিয়ে ২০জনকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আরও বেশ কয়েক জনের খোঁজ চলছে বলে লালবাজার সূত্রে জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tiljala rampage police investigation arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE