Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Bidhannagar

Bidhannagar: তালিকা বাড়ছে পাড়ার সমস্যার, সমাধান নিয়ে চিন্তা বিধাননগরে

পুরসভা সূত্রের খবর, পাড়ায় সমাধানের তহবিল নিয়ে গত শনিবার বিধাননগর পুর ভবনে বরোভিত্তিক একটি বৈঠক হয়।

ফাইল চিত্র।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২২ ০৫:৩৬
Share: Save:

অন্যান্য জায়গার মতো বিধাননগরেও চলছে ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচি। ভাঙা রাস্তা থেকে বাতিস্তম্ভ, জলের পাইপলাইন থেকে শুরু করে গভীর নলকূপ বসানো— নাগরিকদের অভাব-অভিযোগের তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর পুর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে। এই বিপুল পরিমাণ অভিযোগের সুরাহা হবে কী ভাবে, এখন সেটাই মাথাব্যথা পুর কর্তৃপক্ষের। এমনকি, গোটা বিষয়টি নিয়ে কাউন্সিলরদের সঙ্গে তাঁদের মাঝেমধ্যে মতানৈক্যও হচ্ছে।

কেন এমন পরিস্থিতি?

বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, পাঁচ লক্ষ টাকার নীচে কোনও কাজ হলে সেই খরচ পুরসভাকে বহন করতে হবে বলে নির্দেশ এসেছে সরকারি তরফে। কিন্তু এর বেশি টাকার কাজ হলে এবং পুরসভার কাছে সেই অর্থ না-থাকলে প্রয়োজনে তারা পুর বিষয়ক দফতরের কাছে আবেদন জানাতে পারবে। যদিও পুর বিষয়ক দফতর সব কাজেরই ব্যয় বরাদ্দ করবে কি না, সেটা তাদের বিবেচ্য।

এই সব নিয়েই তৈরি হয়েছে জটিলতা। কাউন্সিলরেরা জানাচ্ছেন, নিজেদের পাড়ার বিভিন্ন সমস্যার কথা সরকারের নজরে আনতে নাগরিকদের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে, তাঁরা যেন ‘পাড়ায় সমাধান’ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত শিবিরে এসে তা নথিবদ্ধ করেন। বিশেষত রাজারহাট এলাকায় সমস্যার তালিকা দীর্ঘ। কাউন্সিলরদের একাংশ মনে করছেন, সব কাজ সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন ভাবে করতে ওয়ার্ডপিছু কয়েক কোটি টাকা প্রয়োজন।

পুরসভা সূত্রের খবর, পাড়ায় সমাধানের তহবিল নিয়ে গত শনিবার বিধাননগর পুর ভবনে বরোভিত্তিক একটি বৈঠক হয়। সেখানে ওয়ার্ডপিছু আপাতত ১০ লক্ষ টাকার কাজ ধরতে কাউন্সিলরদের কাছে প্রস্তাব রাখেন পুর কর্তৃপক্ষ। কারণ হিসাবে বলা হয়, সব কাজ করার মতো আর্থিক সঙ্গতি পুরসভার নেই। কিন্তু অন্দরের খবর, কাউন্সিলরদের অনেকেই সেই প্রস্তাব খারিজ করে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ১০ লক্ষ টাকায় এত কাজ করা সম্ভব নয়। কাল, মঙ্গলবার পুরসভার অতীতের একটি অর্ধসমাপ্ত বোর্ড মিটিং শেষ হওয়ার কথা। সেই বৈঠকে ফের এই সমস্যা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

বিধাননগরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পিনাকী নন্দী জানান, তাঁর ওয়ার্ড থেকে প্রায় শ’দেড়েক অভিযোগ এসেছে। সূত্রের খবর, শনিবারের বৈঠকে মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীকে পিনাকী জানিয়ে দেন, ১০ লক্ষ টাকায় সব সমস্যার সমাধান করতে তিনি অপারগ। বৈঠক ছেড়ে কাউন্সিলর বেরিয়েও যান বলে খবর। যদিও রবিবার পিনাকী দাবি করেন, ‘‘পুর কর্তৃপক্ষ যে ভাবে বলবেন, সেই ভাবেই কাজ হবে। আমার ব্যক্তিগত কাজ থাকায় বেরিয়ে গিয়েছিলাম।’’

সূত্রের খবর, একই ভাবে মেয়র পারিষদ রাজেশ চিরিমার, বরো চেয়ারম্যান মণীশ মুখোপাধ্যায়, কাউন্সিলর প্রসেনজিৎ নাগও মেয়রকে জানান, ১০ লক্ষ টাকায় কাজ করা সম্ভব নয়। এই নিয়ে প্রসেনজিৎ বা রাজেশ মন্তব্য করতে চাননি। তবে মণীশ বলেন, ‘‘আমি বৈঠকে কোনও মন্তব্য করিনি। এটা ঠিকই, ১০ লক্ষ টাকায় এত কাজ অসম্ভব। সবাই মিলে আলোচনা করে সমাধানসূত্র বার করতে হবে।’’ মেয়র পারিষদ তুলসী সিংহরায় বলেন, ‘‘এই প্রকল্পে মানুষকে তাঁদের সমস্যা জানাতে বলা হয়েছিল। তাই আগে তাঁদের সমস্যাগুলি সরকারি পোর্টালে তোলা হোক। তার পরে যেমন টাকা আসবে, সেই অনুযায়ী কাজ এগোনো যেতে পারে।’’

উল্লেখ্য, রাজকোষের সঙ্গিন অবস্থার কথা ভেবে এ বারের পুর বাজেটে বিভিন্ন খাত থেকে রোজগার বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা রেখেছেন কর্তৃপক্ষ। শনিবারের বৈঠক নিয়ে মেয়র মন্তব্য করতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘নাগরিকদের সব সমস্যার সমাধান করা হবে। তবে, সমস্যার গুরুত্ব বুঝে তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bidhannagar Paray Samadhan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE