মহম্মদ আলি সম্পর্কে বলতে গেলে, মনে পড়ে যায় সেই সনি লিস্টনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তাঁর লড়াই। তখন সনি লিস্টন ছিলেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ। ১৯৬০ সালে মহম্মদ আলি প্রথম পেশাদার লড়াই জেতেন। ১৯৬০-৬৩ টানা ১৯টা লড়াইয়ে জেতেন। যার মধ্যে ১৫টা নক-আউট।
১৯৬০-এর রোম অলিম্পিকে লাইট-হেভিওয়েট বিভাগে স্বর্ণ-পদক পেয়ে প্রথম প্রচারের আলোয় আসেন ক্যাসিয়াস ক্লে। পরবর্তী সময়ে মার্টিন লুথার কিং-এর ভাবনায় অনুপ্রাণিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে সারা বিশ্বে মহম্মদ আলি নামে পরিচিত হন। একদিকে বক্সিং জীবনে ৬১ টি পেশাদারি লড়াইয়ের মধ্যে ৫৬ টিতে যেমন জিতেছেন, সে রকমই আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভিয়েতনামের যুদ্ধে তাঁর ভূমিকা ছিল ব্যাতিক্রমী। সব মিলিয়ে এক বর্ণময় কৃতিত্বের অধিকারী ছিলেন মহম্মদ আলি।
ডগ জোন্সের সঙ্গে বিতর্কিত লড়াইয়ে জেতেন ১৯৬৩ সালে। ফিরে আসি ‘সনি লিস্টন’-এর সঙ্গে লড়াইয়ের কথায়। কতটা আত্মবিশ্বাসী হলে লড়াইয়ের আগেই ঘোষণা করে দেন যে তিনি ‘প্রজাপতির মতো উড়ে মৌমাছির মতো হুল ফোটাবেন।’ সেই লড়াইয়ে লিস্টন ছিলেন অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী। মহম্মদ আলির ক্ষিপ্রতা তিনি আঁচ করতে পারেননি। ক্ষিপ্রতাতেই লিস্টনের ঘুষি থেকে বেঁচে যান আলি। আর নিজের উচ্চতার কারণে তিনি লিস্টনকে ঘুষি মারতে সক্ষম হন। চতুর্থ রাউন্ডে লিস্টন সামলে ওঠেন এবং লড়াইয়ে ফেরেন। ষষ্ঠ রাউন্ডে আবার আলি স্বমহিমায় ফিরে আসেন এবং সপ্তম রাউন্ডে গিয়ে লিস্টনকে হারান।
আরও পড়ুন:
চলে গেলেন প্রথম ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’, শোকে মুহ্যমান বাংলাদেশ
১৯৬৫ সালে লিস্টনের সঙ্গে ফিরতি ম্যাচের পর ১৯৬৭ সালে জরা ফলির সঙ্গে তিনি ন’বার শিরোপা রক্ষার লড়াইয়ে নামেন। খুব কম বক্সারই এত কম সময়ে এত বেশিবার লড়াই করেছেন।
আসলে বক্সারদের জীবনে এত বেশিবার মাথায় ঘুষি খেতে হয়, যে পরবর্তী জীবনে অনেক সময় নার্ভের সমস্যায় ভুগতে হয়। পারকিনসন রোগটিও স্নায়ুর রোগ। আর এই রোগের কাছে শেষমেশ জীবনের রিংয়ে পরাস্ত হতে হল কিংবদন্তি মহম্মদ আলিকে।
আমার জীবনের শুরুতে যে মানুষটিকে দেখে বক্সিং-এ আরও বেশি করে অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম, তিনি মহম্মদ আলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy