Advertisement
০২ মে ২০২৪
Belgachia Veterinary Hospital

আন্দোলনের চাপে বন্ধ হয়ে গেল পশু হাসপাতালের চিকিৎসা

জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের ‘নন প্র্যাক্টিসিং অ্যালাওয়েন্স’ (এনপিএ) পুনরায় মূল বেতনের অংশ হিসাবে গণ্য করার দাবিতে প্রায় এক মাস ধরে আন্দোলন চলছে।

An image of the hospital

খাঁ খাঁ: আন্দোলনের জেরে বন্ধ বহির্বিভাগ। বুধবার, বেলগাছিয়া পশু হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:২১
Share: Save:

অধ্যাপকদের আন্দোলনে বন্ধ হয়ে গেল বেলগাছিয়া পশু হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা। ফলে, পোষ্যদের নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে বুধবার সকাল থেকে ভোগান্তিতে পড়লেন অনেকেই। হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়েও পোষ্যকে নিয়ে বিনা চিকিৎসায় ফিরে যেতে দেখা গেল অনেককে। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, কর্তৃপক্ষের থেকে সেই সদুত্তর মেলেনি।

জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের ‘নন প্র্যাক্টিসিং অ্যালাওয়েন্স’ (এনপিএ) পুনরায় মূল বেতনের অংশ হিসাবে গণ্য করার দাবিতে প্রায় এক মাস ধরে আন্দোলন চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের টালবাহানার অভিযোগ তুলে রেজিস্ট্রার ও ফিনান্স অফিসারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি উপাচার্যকে ঘিরেও একাধিক বার বিক্ষোভ দেখিয়েছেন টিচার্স ফোরামের অধ্যাপকেরা। সেই আন্দোলন এখনও চলছে। অধ্যাপকদের দাবি, গত নভেম্বর থেকে কর্তৃপক্ষের ভুলে এনপিএ মূল বেতনের অংশ হিসেবে গণ্য না করায় তাঁদের বেতন হঠাৎ কমে গিয়েছে। গত চার মাস ধরে বার বার কর্তৃপক্ষকে বলার পরেও সুরাহা হয়নি।

আন্দোলনরত অধ্যাপক দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের সব চিকিৎসকের নন-প্র্যাক্টিসিং ভাতা মূল বেতনের অংশ হিসাবে গণ্য হয়। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের ক্ষেত্রে তেমন হচ্ছে না। এর আগে বার বার আমরা স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক হলেও সমাধানের আশ্বাস দিতে না পারায় আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।’’

এ দিকে, এই আন্দোলনের জেরে পঠনপাঠনের পাশাপাশি বেলগাছিয়ার পশু হাসপাতালে পরিষেবাতেও অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে পশু হাসপাতালের বহির্বিভাগের পরিষেবা। বহু দূর থেকে পোষ্যদের নিয়ে হাসপাতালে এসেও পরিষেবা না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন অনেকে। এ দিন দুপুরে উল্টোডাঙা থেকে কুকুরকে নিয়ে এসেছিলেন শমীক পোদ্দার। তিনি বলেন, ‘‘তিন দিন ধরে কুকুরটি ঝিম ধরে রয়েছে। ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া করছে না। এখানে এসে শুনছি, হাসপাতালই বন্ধ।’’

জরুরি পরিষেবা বন্ধ রেখে আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পোষ্যের অভিভাবকেরা। শ্যামবাজারের বাসিন্দা ঐশী ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘বার বার অনুরোধ করার পরেও কেউ কথা শুনতে চাইছেন না। ঘণ্টা তিন-চার ধরে বাইরেই দাঁড়িয়ে আছি। কেউ এক
বার পোষ্যকে হাত দিয়েও দেখলেন না। মানুষের হাসপাতাল হলে কি এ ভাবে চিকিৎসা বন্ধ করে রাখতেন?’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শ্যামসুন্দর দানা বলেন, ‘‘অধ্যাপকদের দাবি নিয়ে ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট জায়গায় কথা বলেছি। আশা করছি, দ্রুত সমাধান হবে।’’ পশু হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘চিকিৎসা পরিষেবা যাতে ব্যাহত না হয়, সেই
আবেদন করেছি। আজ, বৃহস্পতিবার সব পক্ষকে নিয়ে আমরা বৈঠকেও বসব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE