E-Paper

ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, চিন্তা শহরে

কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত কলকাতা পুর এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৫৭।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৫ ০৯:২৭
পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান বলছে, এ বারেও দক্ষিণ কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে বেশি।

পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান বলছে, এ বারেও দক্ষিণ কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে বেশি। — প্রতীকী চিত্র।

দিনকয়েক আগেই দমদমের বাসিন্দা এক কিশোরীর প্রাণ গিয়েছে ডেঙ্গিতে। এ বার তাই বর্ষা শুরু হতেই ডেঙ্গি নিয়ে চিন্তা বাড়ছে শহরে। সূত্রের খবর, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা একটু কমেছিল। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত কলকাতা পুর এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৫৭। ২০২৪ সালের ওই একই সময়ে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০৩। চলতি বছরের ওই ছ’মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৭-এ।

কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বর্ষা সবে শুরু হয়েছে। ডেঙ্গির প্রকোপ বৃদ্ধির সময় হল, জুলাই, অগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর। ডেঙ্গি দমনে পুরসভার তরফে এখন থেকেই কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে। ২০২৩ সালের নভেম্বরের শেষে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় নতুন রেকর্ড হয়েছিল। আবার গত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। সুতরাং, ডেঙ্গি নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।’’

পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান বলছে, এ বারেও দক্ষিণ কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে বেশি। সাত নম্বর বরো, অর্থাৎ, পার্ক স্ট্রিট, মল্লিকবাজার, ট্যাংরা, পার্ক সার্কাস এলাকায় গত বছরের জানুয়ারি থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১। এ বারে তা বেড়়ে হয়েছে ১৭। ওই বরো এলাকার শুধু ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডেই এ বছর ছ’জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। আট নম্বর বরো, অর্থাৎ, গড়িয়াহাট, বালিগঞ্জ, ভবানীপুর এলাকায় ২০২৪-এর জানুয়ারি থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল চার। এ বছর সেই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে হয়েছে নয়। ১৩ নম্বর বরো, অর্থাৎ, হরিদেবপুরে ২০২৩ সালে বহু মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। প্রাণহানিও হয়েছিল অনেকের। ওই বরোয় গত বছর এই সময়ে ডেঙ্গিতে দু’জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ বছর ১০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ওই বরোর অধীনে ১১৭ থেকে ১২২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রতিটিতে দু’জন করে আক্রান্ত হয়েছেন।

এ ছাড়াও দক্ষিণ কলকাতার ৯, ১০, ১১, ১২ ও ১৬ নম্বর বরো এলাকায় গত দু’বছরের নিরিখে এ বছরের ডেঙ্গি আক্রান্তের হার ভাবিয়ে তুলেছে পুর স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। ১৬ নম্বর বরো, অর্থাৎ, বেহালা, জোকা এলাকায় ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত ডেঙ্গিতে চার জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। ২০২৪ সালে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল পাঁচ। এ বছর সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে সাত। ১৫ নম্বর বরোতেও গত দু’বছরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ছয়। এ বার সেখানে সাত জন আক্রান্ত হয়েছেন।

পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, মাঝের এক বছর করে বাদ দিয়ে ডেঙ্গির হার বাড়ে। ২০২৩ সালে ডেঙ্গির দাপট বেশি ছিল। ২০২৪ সালে তা খানিকটা কমেছিল। এক আধিকারিকের আশঙ্কা, ‘‘সে ক্ষেত্রে এ বছর আবার বাড়তে পারে আক্রান্তের সংখ্যা। ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই মশা মারতে হবে। কিছুতেই জল জমতে দেওয়া যাবে না। মনে রাখতে হবে, ডেঙ্গির মশা পরিষ্কার জমা জলেই বংশবিস্তার করে। আগামী চার মাস সাধারণ মানুষকে খুব সতর্ক থাকতে হবে। কোথাও যেন জল জমানো না হয়।’’

এই প্রসঙ্গে কলকাতার ডেপুটি মেয়র তথা মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বললেন, ‘‘গত বছরের সঙ্গে তুলনা করেও বলা যায়, এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের হার নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা যেটুকু বেড়েছে, তা এমন কিছু নয়। ডেঙ্গি নিয়ে এখনই উদ্বেগের কিছু নেই। ডেঙ্গি দমনে পুরসভা বছরভর কাজ করে। সাধারণ মানুষকে বেশি করে সচেতন থাকতে হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

KMC Dengue Fear

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy